আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় এই মুহূর্তে সেরা সুন্দরী নায়িকা কে? অবশ্যই টলিউড নিয়েই কথা হতে চলেছে। উত্তর আপনার নিজস্ব জানি, কিন্তু শ্রাবন্তীর নাম কি আপনার মনের মধ্যে আসছে একবার হলেও? হ্যাঁ, আসতেই পারে তাঁর নাম, যার এমন সুন্দর মুখশ্রী, মিষ্টি হাসি, চিকন নাক, মখমলে ত্বক তাঁর নাম মনে উঁকি দেবেই। সম্প্রতি শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বড্ড বেশি জল ঘোলা হচ্ছে। চলুন আজ বরং দেখি টলিউডের এই মিষ্টি অভিনেত্রীর ক্যারিয়ার গ্রাফ। কীভাবে শুরু করলেন এই পথ চলা? কীভাবেই বা এত প্রতিকূলতার মধ্যেও অমলিন হাসি হাসছেন।
কলকাতার মেয়ে শ্রাবন্তী। ১৯৮৭ সালে ১৩ অগাস্ট তাঁর শুভ জন্মদিন। দিদির সঙ্গে হেসে খেলে বেড়ে উঠেছেন কলকাতার বুকেই। ছোটবেলা থেকে অভিনয়ে আসার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। ইচ্ছা ছিল ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় প্রবেশ করার। পরিবারের পূর্ণ সমর্থনে পর্দায় প্রথম তাঁকে দেখা গিয়েছিল ‘মায়ার বাঁধন’ ছবির মধ্যে দিয়ে। তখন শ্রাবন্তীর বয়স মাত্র ১২ বছর। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি।
এরপর পরিচালক রবি কিনাগী ও প্রযোজনা সংস্থা শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস এর হাত ধরে অভিনেতা জিৎ এর সঙ্গে জুটি বেঁধে বড় ঝাঁপ দিলেন শ্রাবন্তী। ‘চ্যাম্পিয়ন’ দিয়ে বড় পর্দায় নিজের জাল বিস্তার করা শুরু করলেন টলিউডের সফল-সুন্দরী-চর্চিত অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। এই সিনেমার সময় থেকে পরিচালক রাজীব কুমার বিশ্বাসের প্রেমে জড়িয়ে যান ১৬ বছরের কিশোরী। কৈশোরেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যান তিনি। বিয়ে হয় পরিচালক রাজীব কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে। ২০১৬ পর্যন্ত এই বৈবাহিক জীবনের সাক্ষী ছিলেন শ্রাবন্তী। মাঝে আসে ঝিনুক। খুব কম বয়সেই জীবনকে দ্রুত দেখে ফেলা অভিনেত্রী ২০১২ তে বিচ্ছেদ নেন রাজীবের থেকে। সেই সময় তিনি পরিচালক জয়দেব মুখোপাধ্যায় এর ‘শিকারী’ তে অভিনয় করছিলেন।
২০১৭ তে পরিচালক রবি কিনাগী-র ছবি ‘জিও পাগলা’ তে অভিনয় করেন। অর্থাৎ কোন রকম শোক তাঁকে অভিনয় থেকে দূরে রাখতে পারেনি। ২০১৮ তে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এর হাত ধরে করেন ‘উমা’। অবশ্য ২০১৬ তে তিনি একা এগিয়ে যাননি কেরিয়ার নিয়ে। সেইসময় শ্রাবন্তী তাঁর পাশে রেখেছিলেন মডেল ও ফটোগ্রাফার কৃষ্ণ ব্রিজকে। কিন্তু এখানেও বছরখানেক একসঙ্গে থাকার পর আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
২০১৮ তে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সোহম চক্রবর্তী,জিৎ এর সঙ্গে জুটি বেঁধে করেন ‘বাঘ বন্দি খেলা’। একের পর এক ছবি দিয়েছেন শ্রাবন্তী। পরিচালক রাজিব বিশ্বাস ও রবি কিনাগী-র সঙ্গে একাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন এই মিষ্টি অভিনেত্রী। পাশাপাশি ছেলে ঝিনুককেও সমান সময় দিয়েছেন। ২০১৬ র পর থেকে একা হাতে ঝিনুককে বড় করে চলেছেন তিনি।
সুন্দরী মহিলা, প্রতিষ্ঠিত, পরিচিত, স্বনামধন্যা তাই তাঁর জীবনে বসন্ত আসবে না তা কি করে সম্ভব। ২০১৯ এ অভিনেত্রীর জীবনে আসে তৃতীয় বসন্ত। রোশন সিং কে বিয়ে করেন শ্রাবন্তী। রোশন পেশায় একটি এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু সুপারভাইজ়ার। ঠিক সেইসময় শ্রাবন্তীর হাতেখড়ি হয়েছিল রিয়ালিটি শো-তে। দু-দুটি রিয়ালিটি শো-এর বিচারক হয়েছিলেন তিনি।
লক ডাউনে শ্রাবন্তী তাঁর পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাতেন। অন্যদিকে রোশন থাকতেন তাঁর মায়ের সঙ্গে। প্রেম চলত সোশ্যালে। এই ব্যপারটি শ্রাবন্তীর এক সাক্ষাৎকার থেকেই জানা গেছে। কিন্তু লক ডাউন ওঠার পাশাপাশি তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনও যেন লকডাউনের আওতায় চলে যায়। ফের চর্চায় উঠে আসে শ্রাবন্তীর ব্যক্তিগত জীবন। কাঁটাছেঁড়া হয় প্রতিটা বসন্তর। যদিও আসল সত্যি ঘটনা কেউইই জানেন না, তবে গুঞ্জন এই উঠেছে যে শ্রাবন্তী-রোশন এর জীবনের আনলক প্রক্রিয়া এখনও শুরু হয়নি। তবে যাই ঘটে যাক, নিজের কেরিয়ার, কর্মজীবনকে কখনো বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলেননি তিনি। কাজকে সবার আগেই রেখেছেন তিনি। ইতিমধ্যে একটি ফিটনেস হাব খুলে ফেলেছেন তিনি। পাশাপাশি নতুন শ্যুটিং এর জন্য ব্যস্ততা বেড়েছে। হয়তো প্রতীক্ষায় আছেন বসন্তের।