অক্ষয়ের ‘প্লে বয়’ ভাবমূর্তি নষ্ট করার পিছনে ছিলেন টুইঙ্কেল খান্না, একথা অনেকেই হয়তো জানেন। তবে এটা কি জানেন টুইঙ্কেল কাদের হাত থেকে অক্ষয়কে রক্ষা করেছিলেন? কীভাবে অক্ষয় তাঁর প্লে বয় ক্যারেক্টার ঝেড়ে মুছে ফেলে একজন দ্বায়িত্ববান ম্যাচ্যুওর অভিনেতা হলেন? এই সবের উত্তর হলেন অক্ষয়ের একমাত্র স্ত্রী টুইঙ্কেল খান্না।
‘বরসাত’ দিয়ে অভিনয় জগতের যাত্রা শুরু করেন টুইঙ্কেল। প্রয়াত অভিনেতা রাজেশ খান্নার মেয়ে টুইঙ্কেল ছোট থেকেই সিনেমার প্রতি আগ্রহ ছিল না তাঁর। তবে বন্ধুবান্ধবদের আবদারে মুভিতে নামেন তিনি। এরপরেই, ১৯৯৫ সালে ‘বারসাত’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জয় করেন।
এখনও পর্যন্ত টুইঙ্কেল বলিউডে প্রায় ২০ টির মতন সিনেমা করেছেন। কিন্তু অক্ষয়কে বিয়ের পর সিনেমা নিয়ে তাঁর উৎসাহ একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকে। বর্তমানে টুইঙ্কেলের পরিচয় তিনি একজন লেখিকা, সংবাদপত্রের কলামিস্ট, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং প্রাক্তন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। ২০১৫ সালে, তিনি তাঁর প্রথম অ-কাল্পনিক বই “MrsFunnybones” প্রকাশ করেছিলেন, যা বেস্টসেলার হিসাবে ঘোষিত হয়েছিল।
এই টুইঙ্কেলই একটা সময় অক্ষয়ের জীবনে মসিহা হয়ে আসে। অক্ষয় তাঁর কেরিয়ারের শুরু দিকে বেশ ঘটা করে নিজের নাম জড়িয়ে ফেলেছিলেন রেখা, রবিনা এমনকি প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে। ১৯৯৯ সালের একটি সাক্ষাত্কারে রেখাকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন রবিনা, রেখা নাকি অক্ষয় কুামরের প্রেমে পাগল ছিলেন। সেদিন রবিনার এও দাবি ছিল যে অক্ষয়ের কোনও দোষই নেই এইব্যপারে, সবটাই নাকি রেখার দোষ। এদিকে ‘টিপ টিপ বরসা পানি’ থেকে রবিনা অক্ষয়ের প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন, যদিও শিল্পা এন্ট্রি নেওয়ার পর রবিনা বাদের খাতায় যান।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এমন একজন ব্যক্তিত্ব যার জন্য টুইঙ্কেলের সঙ্গে অক্ষয়ের বিবাদ চরমে গিয়ে পৌঁছায়। ২০০১-এ টুইঙ্কলকে বিয়ের পরেও অক্ষয় অন্যান্য অভিনেত্রীদের সঙ্গে নাম জড়িয়ে ফেলেন। একবার ‘ওয়ক্ত’ ছবির শুটিং চলছিল। সেদিন আচমকা টুইঙ্কেল পৌঁছে যান সেটে স্বামীকে হাতেনাতে ধরার জন্যে। সে সময় ইউনিটের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তিনি আন্দাজ করতে পারেন প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে তাঁর স্বামীর সম্পর্ক শুধুই বন্ধুত্ব নয়। বাড়তি কিছু। এমনও গুঞ্জন আছে যেখানে টুইঙ্কেল নাকি তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা না বলে প্রিয়ঙ্কাকেই ফোন করেন এবং চলে উত্তপ্ত কথোপকথন।
গল্প এখানেই শেষ নয়। ফোনে কথা হওয়ার পর প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলার জন্য টুইঙ্কেল পৌঁছে যান শ্যুটিং স্পটে। তখন শ্যুটিং চলছিল গোয়াতে। সেদিন প্রিয়াঙ্কাকে না পেয়ে স্বামীর মুখোমুখি হন এবং উচ্চ বিবাদ শুরু হয়। সেখানকার এক স্টাফের কথানুযায়ী তাঁদের বিবাদে বারবার ‘প্রিয়াঙ্কা’ নাম উঠে এসেছিলো। এমনও গুঞ্জন ছিল সেদিন নাকি অক্ষয় রাগের বশে বলেই দিয়েছিলেন যে হ্যাঁ, প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে তাঁর প্রেম আছে। এর মাসুল দিতে হয়েছিল অক্ষয়কে। সেদিন দুই বছরের ছেলেকে অক্ষয়ের কাছে রেখে টুইঙ্কেল চলে যান মুম্বই। অবশ্য পরবর্তীতে দাম্পত্য বিবাদের কথা স্বীকার করেননি টুইঙ্কেল খান্না।
দেখতে দেখতে ৪৭ এ পা রাখলেন ‘মেলা’ র নায়িকা। আজকের দিনে ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করে স্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন অভিনেতা অক্ষয় কুমার। অক্ষয়ের ক্যাপশনে লেখা, ‘আরও একটি বছর আসতে চলল। যেখানে ফের জীবনের জটিলতম সিদ্ধান্তগুলি নিতে হবে। কিন্তু সেগুলো আমাকে একা নিতে হবে না। আমি এটা ভেবেই খুশি যে সিদ্ধান্তগুলো আমরা দু’জনে মিলে নিতে পারব। শুভ জন্মদিন টিনা’। এদিন টুইঙ্কেল নিজেও তাঁর বাবার ছবি পোস্ট করে ফাদারস ডে সেলিব্রেট করেন। মজার ব্যাপার হল, টুইঙ্কেলকে অক্ষয় কিন্তু টুইঙ্কেল বলে ডাকেন না, ‘টিনা’ নামেই ডাকেন তিনি। কারণ টুইঙ্কেলের আসল নাম – টিনা যতীন খান্না।
View this post on Instagram
View this post on Instagram