নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির সঙ্গে বিগত কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গ সহ সিকিমে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত। আর এবার মেঘভাঙ্গা বৃষ্টির জেরেই বিপর্যয় নেমে এসেছে সিকিমের বুকে। হড়পা বানের তোড়ে ইতিমধ্যে ভেঙে পড়েছে একাধিক সেতু। ধসের জন্য ভেঙে পড়েছে জাতীয় সড়ক। এই মুহূর্তে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যাওয়ার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ। তাই এই অবস্থায় গ্যাংটক সহ সিকিমের একাধিক জেলায় আটকে রয়েছেন বহু পর্যটক। এই বিপর্যয় যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ বিপর্যয়কেও।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত মঙ্গলবার মাঝরাতে। এদিন ভোর হওয়ার আগে আচমকা হড়পা বানে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে পাহাড়ি নদী তিস্তা। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং হড়পা বানের জেরে বর্তমানে প্রায় বিপর্যস্ত অবস্থা সিকিমে। সেখানে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।বৃহস্পতিবারও ভয়াবহ পরিস্থিতি সিকিমে। প্রবল বন্যা ও ধস নেমে তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তর সিকিম। দুর্যোগের কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এখনো সেখানে ২২ সেনা সহ নিখোঁজ ১০০-র বেশি মানুষ। পাশাপাশি, সিকিমে নিখোঁজ হওয়া ২২ জন সেনা জওয়ানের খোঁজ এখনো মেলেনি বলেই খবর। উল্লেখ্য, সেখানের সেতু ভেঙে সেনা ছাউনি ভেসে যায় গতকাল সকালে। তার পর থেকেই নিখোঁজ ওই জওয়ানরা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ধস নামার ফলে সিকিমের আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে সেখানের ২৯ মাইল এলাকার কাছে বড়সড় ধস নেমে আসে। সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ধসের ফলে সিকিম থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার রাস্তাটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিস্তা ব্রিজ থেকে সিকিম যাওয়ার পথে বেশ কিছু জায়গায় বড় আকারের ধসের কারণে জাতীয় সড়ক নিচের দিকে বসে গিয়েছে। জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গা ধীরে ধীরে তিস্তার নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
তবে এই বিপর্যয়ে সিকিমে আটকে পড়েছেন হাজার হাজার পর্যটক। সূত্রের খবর, রাজ্য থেকে প্রায় ২০০০ পর্যটক এই মুহূর্তে আটকে রয়েছেন সিকিমে। তবে উদ্ধারকার্যে পুরোপুরি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে নবান্নে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। সেই কন্ট্রোল রুমের নম্বর-০৩৩-২২১৪-৩৫২৬। এছাড়াও, পর্যটন দফতরের তরফ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এই কন্ট্রোল রুমের নম্বর ১৮০০-২১২-১৬৫৫ এবং ৯০৫১৮৮৮১৭১। বিবাদীবাগে পর্যটন দফতরের অফিসে এই কন্ট্রোল রুম চালু থাকছে ২৪ ঘণ্টা।