অলকা ইয়াগনিক (Alka Yagnik) বলিউডের হিট গায়িকাদের মধ্যে অন্যতম। মাধুরী দীক্ষিত (Madhuri Dixit)-এর লিপে অলকা বরাবর পারফেক্ট। অলকার মুম্বইয়ে গায়িকা হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়েছেন তাঁর মা। কলকাতার বুকে জন্ম হয়েছিল অলকার। আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মতোই ছিল ইয়াগনিক পরিবার। কিন্তু অলকার মা শুভা (Shubha Yagnik) চাননি তাঁর মেয়ের জীবন সাধারণ হোক। শুভা নিজে ছিলেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে পারদর্শী। কিন্তু বিয়ের পর অন্য মহিলাদের মতো আত্মত্যাগ করতে হয়েছিল শুভাকেও। লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar), সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee), নির্মলা মিশ্র (Nirmala Mishra)-র গান শুনে বিনোদন খুঁজে চলা পূর্ব ভারতীয় পরিবারে মেয়ে-বৌদের বিনোদন জগতে আসার ক্ষেত্রে ছিল রক্ষণশীলতা। ফলে শুধু শুভাই নন, সেকালের আরও অনেক মহিলা শিল্পীই অচিরে নিজেদের কেরিয়ার বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
শুভার কাছে তাঁর কন্যা অলকা ছিলেন একমাত্র আশার আলো। অলকার মধ্যে নিজের ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন শুভা। ফলে অলকাকে তিনি নিজেই তালিম দিতে শুরু করেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে অলকা ছিলেন অল ইন্ডিয়া রেডিওর নিয়মিত গায়িকা। কিন্তু শুভা চেয়েছিলেন মেয়েকে পেশাদার গায়িকা তৈরি করতে। কলকাতায় তা সম্ভব ছিল না। কিন্তু সুযোগ এসেই গেল। রাজ কাপুর (Raj kapoor)-এর প্রোডাকশন টিমের এক ব্যক্তি ছিলেন শুভার বান্ধবীর আত্মীয়। বান্ধবীর বাড়িতে সেদিন অলকাকে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন শুভা। অলকার গান শুনে প্রশংসা করেন ওই ব্যক্তি। এর কিছুদিন পর রাজ কাপুর (Raj kapoor)অফিস থেকে আসে চিঠি। অলকার কন্ঠস্বর শুনতে চেয়েছিলেন রাজ। শুভা মুম্বই পৌঁছালেন অলকাকে নিয়ে। রাজ অলকার গানের প্রশংসা করলেও শুভাকে বললেন, কন্ঠস্বর বয়সের সাথে আরও পরিপক্ক হওয়া প্রয়োজন।
View this post on Instagram
শুভা পিছু হটতে চাননি। ফলে অলকা মুম্বইয়ে বিভিন্ন নামী সুরকারদের কাছে ডাবিং সিঙ্গার হিসাবে কাজ করতে শুরু করলেন। এর মাধ্যমে তাঁর গলাও পরিপক্ক হতে শুরু করল। এরপর 1980 সালে ‘পায়ল কি ঝঙ্কার’ ফিল্মে গায়িকা হিসাবে ডেবিউ করলেও 1988 সালে মাধুরী অভিনীত ‘তেজাব’-এর ‘এক দো তিন’ গানটি অলকাকে রাতারাতি সুপারস্টার বানিয়ে দিয়েছিল। এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সাতবার শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসাবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়ে রেকর্ড তৈরি করেছেন অলকা।
‘তাল’ ফিল্মের টাইটেল সঙ ‘তাল সে তাল মিলা’ ও ‘খলনায়ক’ ফিল্মের গান ‘চোলি কে পিছে’ দেশি মার্টিনি ও সানোনার বিচারে শতকের শ্রেষ্ঠ গানের তকমা পেয়েছে। এই গান দুটিও রেকর্ড করেছেন অলকা।
View this post on Instagram