কয়েকদিন পরেই আন্তর্জাতিক মাতৃদিবস। মায়েদের সম্মানে প্রতীকি হিসাবে এই দিনটি পালিত হয়। কিন্তু এমনও কিছু মানুষ রয়েছেন যাঁদের বাবারাই কখন যেন মায়ের অবর্তমানে তাঁর স্থান পূর্ণ করতে সচেষ্ট হন। ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty) তাঁদের মধ্যেই একজন। মফস্বলের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ইমন শৈশবেই হারিয়েছিলেন নিজের মাকে। ইমনের জীবনের সব প্রতিকূলতায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ইমনের বাবা শঙ্কর চক্রবর্তী (Shankar Chakraborty)। নব্বইয়ের দশকের শিশু ইমন। সেই সময় অন্য মা-বাবাদের মতো মেয়েকে শুধুমাত্র পড়াশোনার গন্ডিতে আবদ্ধ রাখতে চাননি শঙ্করবাবু। তিনি চেয়েছিলেন মেয়ে নিজের মতো করে গানকে ভালোবাসুক।
সকালে মেয়েকে নিয়ে বেরোতেন শঙ্করবাবু। বাড়ি থেকেই খাবার তৈরি করে নিয়ে যেতেন। বাড়ি ফিরতেন রাত বারোটা-একটা নাগাদ। ইমনকে খাবার খাওয়ালেও নিজে সারাদিন জল খেয়েই কাটিয়ে দিতেন শঙ্করবাবু। কারণ তিনি চেয়েছিলেন ইমন যেন কষ্ট না পান। তবেই তিনি ভালো গান করতে পারবেন। এই কারণে ইমনের জন্য প্রাণপাত করে লড়াই করেছিলেন তাঁর বাবা। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ছিল না। একসময় দিতে পারেননি বাড়ি ভাড়াও। কিন্তু তবু মেয়েকে কিছু জানতে দিতেন না শঙ্করবাবু। ইমনের বাবা জানতেন, মেয়ে জানতে পারলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
ইমন যখন সব জানলেন, তখন তিনি প্রতিষ্ঠিত। জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গায়িকা তিনি। একদিন বাবা ছিলেন তাঁর ঢাল। আজ ইমন অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে বাবার পাশে। বাবার সাধ্যমতো যত্ন নেন ইমন। বাবাই তাঁর প্রিয় বন্ধু। মাতৃহীনা কন্যাসন্তানকে শঙ্করবাবু সেদিন বুঝতে দেননি মায়ের অভাব। বর্তমানে সেই মেয়েই হয়ে উঠেছে শঙ্করবাবুর দ্বিতীয় শৈশবের মা।
বর্তমানে দেশে-বিদেশে একাধিক শো করার পাশাপাশি ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজে প্লে ব্যাক করছেন ইমন। এছাড়াও রিয়েলিটি শোয়ের বিচারকের আসনেও দেখা যায় তাঁকে।
View this post on Instagram