মনে আছে নদীয়ার রানাঘাটের লতাকন্ঠের তকমা পাওয়া রানু মন্ডল। যার একটি গান রাতারাতি স্টার করে দিয়েছিল। একদিকে যেমন নিজের কন্ঠের জন্য একদিন সোশ্যাল মিডিয়াতে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন আজ তেমনি নিজের দুব্যবহারের জন্য আকাশ থেকে মাটিতে এসে পড়েছেন এই পৌঢ়া।
কথায় আছে অতি অহংকার ঝড়ে ফেলে দেবে। এই প্রবাদটি রানু মন্ডলের ক্ষেত্রে একেবারে প্রযোজ্য। রানাঘাট স্টেশন থেকে বলিউডের খ্যাতির মুখ পর্যন্ত দেখে নিয়েছিলেন তিনি। একবছর আগে দুর্গা পুজোর প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে রানু মন্ডলের গাওয়া গান বেজেছিল কিন্তু আজ সব অতীত। শুধু তাই নয় মুম্বইয়ের রুপোলী জগত থেকে ডাকও এসেছিল গায়িকার জন্য।
হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে গান গেয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে গিয়েছিলেন রানু। রীতিমতো তারকার সম্মান পেয়েছিলেন এই রানু মন্ডল। কিন্তু এই ভবঘুরের ট্যালেন্ট যার হাত ধরে গোটা ভারতবর্ষে ছড়াল অতীন্দ্রর হাত ধরে। যে ছেলে নিজের ফোনে একটি ভিডিয়ো করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করলেন তাকেই ভুলে গেলেন গায়িকা নিজে। একটি সাক্ষাৎকারে এই অতীন্দ্রকে ভগবানের চাকর বলে তকমা দিলেন।
‘তেরি মেরি কাহানি’ গানের গায়িকা এখন কেমন আছেন? ২০১৯ সালে হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে তিনটি গান রেকর্ড করে যে জনপ্রিয় হয়েছিলেন আজ তাঁর ব্যবহারে সবাই তাকে ভুলতে বসেছে। কয়েকদিন হিট হয়ে এখন ফের হতাশার জীবনে ডুব দিয়েছেন।
তথ্য সূত্র থেকে জানা যায়, লতাকন্ঠী রানু একসময় নিজের পুরনো বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু করোনা পরিবেশের জন্য সেই নতুন বাড়ি ছেড়ে দিয়ে ফের পুরনো আস্তানা এখন নতুন ঠিকানা। ফের অভাবের দিন শুরু হয় রানাঘাটের রানু মন্ডলের।বলিউড থেকে আর কোনও ডাক আসেনি মহামারীর কারণে। হাতে অন্য কোনও কাজও নেই তাঁর। আর তাই আর্থিক অভাব আবার তাঁকে স্টেশন চত্বরে ফিরিয়ে এনেছে।
শুধুই কি করোনা দায়ী রানু মন্ডলের ক্যারিয়ার নষ্ট করার জন্য। না করোনার পাশাপাশি রানুর উদ্ধত আচরণ ও দায়ী সমানভাবে। গায়ক হিমেশ রেশামিয়ার সুরে গান রিলিজ হওয়ার পরে, একটি ইভেন্টে রানু মন্ডলের সঙ্গে তাঁর এক ভক্ত সেলফি তুলতে চান। সেই ভক্ত রানু মণ্ডলকে স্পর্শ করে ডেকেছিলেন।আর তাতেই সঙ্গে সঙ্গে বিরক্ত হয়ে হিন্দিতে উত্তর দেন, “এটা কী হচ্ছে”! এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
রানুর এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ কেউ মেনে নিতে পারেননি। খ্যাতির শীর্ষ চূড়া থেকে নামিয়ে আনতে শুরু করেন তাঁর ভক্তরাই। আর তাই এখন বেশ অভাবে দিন কাটছে রানু মন্ডলের। প্রত্যেকের জীবনে সুযোগ একবার আসে আর সেটা কাজে লাগাতে হয়,রানু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তাই এই ছন্দপতনের জন্য রানুকে দায়ী করছেন তাঁর ফ্যানেরা। আর কী রানু ফিরতে পারবে পুরোনো স্পটলাইট জীবনে নাকি স্টেশন চত্বরে পুরো জীবন কাটাবে? প্রশ্নচিহ্ন থাকলেও উত্তর নেই।