Tourism: দীঘা-পুরী আর নয়, দু-দিনের ছুটিতে ঘুরে আসুন নিরিবিলি এই জায়গা থেকে
শীতকাল তো প্রায় চলে যেতে শুরু করেছে, আবহাওয়া বেশ গরম হয়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে যদি মনে হয় বাড়িতে থাকতে আর ভালো লাগছে না, তাহলে চটজলদি ঘুরে আসতে পারেন কাছে পিঠের কোন জায়গা থেকে। এই জায়গাটি যেমন আপনার মন ভাল করবে, ঠিক তেমনি আপনার শরীর কেউ অনেক সুস্থ করে তুলবে। কারন এই জায়গাটির সঙ্গে শরীর সুস্থ রাখার একটা ইতিহাস লুকিয়ে আছে, তাই আর দেরি না করে চটপট জেনে ফেলুন আজকে আমাদের ডেসটিনেশন ঠিক কোথায়।
কেউ যদি অনেকদিন ধরে রোগে ভুগত তাহলে তাকে পাঠানো হতো এই জায়গাটিতে, তাহলেই বুঝতে পারছেন জায়গাটির জল হওয়ার কতটা মাহাত্ম্য। তাই আর দেরি না করে আজকে চলুন ঘুরে আসি পশ্চিমের শিমুলতলায়। এক সময় এসে এখানে সারি সারি শিমুল গাছ ছিল, তবে বর্তমানে এখানে আর শিমুল গাছ নেই, ছোট ছোট জঙ্গল, ইউক্যালিপটাস গাছ, ছোট ছোট পাহাড়ের জায়গাটি কিন্তু বেশ সুন্দর হয়ে উঠেছে সকলের চোখে। এখানে রয়েছে সারি দেওয়া অজস্র কুঠিবাড়ি, তবে এখানে কোন কুঠিবাড়ির মালিকই ইংরেজ নন, প্রত্যেকেই আছেন বাঙ্গালী, তবে পরবর্তী গানের সেই মালিকানার হাত বদল হয়েছে।
আপনি যদি সিনেমা প্রেমী হয়ে থাকেন, বা রহস্য ভালো থাকেন তাহলে শিমুলতলায় গিয়ে দেখে আসতে পারেন সত্যজিৎ রায়ের মহাপুরুষ ছবির অসাধারণ শুটিং সেট। কুঠিবাড়ি গুলোর ভঙ্গুর দশা দেখলে মনে হয়, নতুন প্রজন্মের কেউই নেই এই বাড়িগুলিকে সংস্কার করার জন্য কিন্তু তার কিছুটা অংশ সারিয়ে হোমস্টে তৈরি করা হয়েছে, ইচ্ছা করলে এই বাড়িগুলিতে কিছুদিন থেকে যেতে পারেন।
শান্ত, স্নিগ্ধ, নির্জন পরিবেশে দু’দণ্ড সময় কাটাতে মন্দ লাগবে না, মনে হবে এ যেন একেবারে স্বর্গ রাজ্য। তাহার ছোট ছোট টিলা ঝর্ণা, পুরনো দিনের কুঠিবাড়ি সব মিলিয়ে যেন এক অসাধারণ জায়গা শিমুলতলা। শীত চলে যাওয়ার আগে একবার ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়টিলা, শাল, মহুয়ার অরণ্যে ঘেরা এই শিমুলতলার গ্রাম দেখতে। ইচ্ছা করলে হোটেল থেকে ঘুরে আসতে পারেন কাছাকাছি লাল মেঠো পথ ধরে নানান রকম ছোট গ্রামেতে।
রেল স্টেশন থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে শিমুলতলার মূল আকর্ষণ লাট্টু পাহাড়। দুর্গের মতো পাটনা লজ, নলডাঙার রাজবাড়ি, সেন সাহেবদের লন টেনিস কোর্টকে ছড়িয়ে মাঠ পেরিয়ে হাজারখানেক ফুট উঁচু লাট্টু পাহাড়ে উঠতে পারেন। গাছগাছালিতে ছাওয়া লাট্টুর শীর্ষে উঠলে গোটা শহরটাকে দেখতে পুরো লাগবে একেবারে স্বপ্নের মত, যদি ফটো তুলতে ভালবাসেন, তাহলে সাথে ক্যামেরা নিয়ে যেতে একেবারেই ভুলবেন না।
রেললাইন থেকে কিছুটা দূরে অর্থাৎ ৬ কিমি এর মধ্যেই দেখে আসতে পারেন পাহাড় আর অরণ্যের মাঝে কুলকুল শব্দের বয়ে চলেছে হলদি ঝর্ণা। টেলবা নদীর ধারে সিকেটিয়া আশ্রম, ধীরহারা ঝোরা দেখেও মনকেমন করতেই পারে। এইখানে নাকি ‘দাদার কীর্তি’ আর ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’ এই দুটি সিনেমার শুটিং হয়েছিল।
ভাবছেন যাবেন কি করে?
হাওড়া থেকে উদ্যান আভা এক্সপ্রেস, হাওড়া-দিল্লি জনতা এক্সপ্রেস মধুপুর ও শিমুলতলায় যায়। উদ্যান আভা এক্সপ্রেস পৌঁছয় দিনের বেলা, কিন্ত জনতা এক্সপ্রেস পৌঁছয় মাঝরাতে। এছাড়া হাওড়া স্টেশন থেকে প্রতিদিন রাত্রি ১১.১০ মিনিটে ছাড়ে মোকামা প্যাসেঞ্জার ট্রেন। পরদিন সকাল ৭.৩০ মিনিটে আপনাকে পৌঁছে দেবে শিমুলতলা স্টেশনে। এছাড়া হাওড়া স্টেশন থেকে যশিডি পর্যন্ত ট্রেন যায়। এখান থেকে শিমুলতলা সহজেই পৌঁছতে পারবেন।