Hoop Special

আফগানিস্তানের দুর্দশার কারণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মহাভারত! বহু আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন গান্ধারী

সংবাদপত্র টিভির পর্দায় খবরের চ্যানেল খুললে এখন নৃশংস তালিবানদের আফগানিস্থান দখলের লড়াই চোখে পড়ছে। গোটা বিশ্বে যত উন্নত দেশ আছে তারা প্রত্যেকেই স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখছে তালিবানিদের এই অত্যাচার। প্লেন থেকে পড়ে যাচ্ছে মুড়ি-মুড়কির মতন মানুষের দল। বিশ্বের মানুষ তাই হাঁ করে দেখছে আর শিউরে উঠছে। পরিবারের বাকি সবাই প্লেনে উঠতে পারলেও, প্লেনে উঠতে পারেনি ৫ মাসের শিশু, তাই তাকে কাঁদতে দেখা গেল বিমানবন্দরে। ছবিটা কেমন ভয়ংকর তা এখন গোটা বিশ্বের মানুষ বুঝতে পারছে। বর্তমানে আফগানিস্থান এখন তালিবানদের স্থানে পরিণত হয়েছে।

তালিবানদের এই নৃশংস অত্যাচার এর জন্য যে শুধুমাত্র আফগানিস্তানের মানুষজন বা আফগানিস্তানের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা শুধু নয়, আশেপাশে অর্থাৎ আমাদের দেশ ভারতবর্ষ যথেষ্ট প্রভাব পড়তে পারে অর্থনৈতিক দিক থেকে। আফগানিস্তানের পার্লামেন্টের বিল্ডিংটি রয়েছে সেটা কিন্তু ভারতেরই তৈরি করা আপাতত সেখানেই তালিবানরাজ বেশ গেঁড়ে বসেছে। অর্থনৈতিক দিক ছাড়াও আফগানিস্তানে যে সমস্ত মহিলারা বসবাস করেন, তাদের জন্য এই তালিবানি শাসন ভীষণ খারাপ। কারণ ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, আগেও তালিবানি শাসনের ফলে মহিলারা কিভাবে জর্জরিত হয়েছিল। তাদের শুধুমাত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার যন্ত্র হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছিল।

ইতিহাস ঘাঁটলে আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন কি করে তৈরি হয়েছিল তার একটা উৎস পাওয়া যায়। বিষয়টা শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে। অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন দুটি শিবির আমেরিকা এবং সোভিয়েত রাশিয়া তৈরি হয়েছিল। তারা তখন তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলির উপর অর্থাৎ যারা একটু কম উন্নত দেশ তাদের ওপরে নিজেদের শাসন ফলাতে শুরু করে। আফগানিস্তানের কমিউনিস্টের সাপোর্ট করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন অর্থাৎ সোভিয়েত রাশিয়া। উল্টোদিকে আফগানিস্থানে যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন অর্থাৎ ইসলামিক ছিলেন তাদেরকে আবার সাপোর্ট করতে শুরু করে আমেরিকা। এখানে ইসলাম প্রধান মুজাহিদ্দিন। কিন্তু পরবর্তীকালে নানান ঝামেলায় জর্জরিত হয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে গেলেও আমেরিকা কিন্তু পালাইনি। আমেরিকা এই তালিবানদের মাথা মুজাহিদকে সমানে অস্ত্রশস্ত্র এবং টাকা পয়সা দিয়ে গেছে। পরবর্তীকালে এই মুজাহিদিনের একটি দল তালিবান হিসেবে প্রকাশ পায়। পরবর্তীকালে এই তালিবানরাই আফগানিস্তানে শাসন জারি করে।

তবে অনেকেই ইতিহাসকে আর একটু পিছিয়ে নিয়ে গেছেন। বলছেন তালিবানি শাসন এর সঙ্গে কোথাও ভারতের একটা যোগাযোগ আছে অর্থাৎ মহাভারতে এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল যার জন্যই বোধহয় এই আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন। মহাভারতের যুদ্ধের পরে যখন গান্ধারীর শতপুত্রের মৃত্যু হয়েছিল, তখন গান্ধারী তার ভাই শকুনিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন তাঁর রাজ্য কোনদিন সুখে থাকতে পারবে না। একের পর এক বিপর্যয় লেগেই থাকবে। আর সেই কারণেই হয়তো শকুনি মামার রাজ্য গান্ধার (বর্তমান আফগানিস্তান) বারবার তালিবান শাসনের ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। তাহলে সেই অভিশাপের কি মাশুল গুনছে আফগানিস্থান?

গত দুই বছর ধরে গোটা বিশ্ব মহামারীর কবলে পড়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক অবস্থা মন্দা মানুষের জীবনকে আরো কষ্টকর করে তুলেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে আফগানিস্থানে এমন তালিবান আক্রমণ যা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। গোটা বিশ্বের মানুষ আফগানিস্তানের এমন চরম ঘটনা দেখছে আর মনে মনে কেঁদে উঠছে। ঈশ্বরের কাছে একটাই কামনা আফগানিস্তান ফিরে যাক তার পুরনো সত্তায়। মহামারীর পরে মানুষকে আর যেন গৃহযুদ্ধের সম্মুখীন হতে না হয়। এ শুধু আফগানিস্তানের একার সমস্যা নয় গোটা বিশ্বের সমস্যা এখন তালিবানি আক্রমণ। এর সঙ্গে সত্যিই কি মহাভারতের যোগ রয়েছে? প্রশ্ন তুলছেন বহু নেটিজেনরা।

whatsapp logo