Hoop Special

Tourism: বসন্ত এসে গেল, ঢুঁ মারতে পারেন পুরুলিয়া মিনি সুন্দরবন থেকে

শীতের ঠান্ডা ঠান্ডা আমেজ টাটা বাই বাই বলে দিচ্ছে, চলে আসছে বসন্তকাল। পাতা ঝরা ডালে যখন আগুনরঙা পলাশ আর শিমুল ফুল ফোটে তখন দেখতে কিন্তু ভারি ভালো লাগে। এইসময় বাড়িতে একেবারেই বসে থাকবে না পরিবারের সঙ্গে অথবা মনের মানুষকে সঙ্গে করে নিয়ে দু-একদিনের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন মিনি সুন্দরবন থেকে। কি ভাবছেন সুন্দরবন তো বেড়াতে অনেকেই গেছেন? কিন্তু মিনি সুন্দরবন সেটা আবার কোথায় আছে? আজকে আমাদের নেক্সট ডেস্টিনেশন পুরুলিয়া ‘মিনি সুন্দরবন’।

পুরুলিয়া মানেই সাধারণত জয়চন্ডী পাহাড়, অযোধ্যা পাহাড়, গড় পঞ্চকট, বড়ন্তি এই সব চোখের সামনে ভেসে ওঠে। কিন্তু এবারে যদি পুরুলিয়া যান, তাহলে আর এসব দেখতে না। ঘুরে আসতে পারেন ‘মিনি সুন্দরবন’ দেখতে। পুরুলিয়ার মধ্যে আছে ছোট্ট একটা সুন্দরবন, ভাবলেই কেমন মনটা ভালো হয়ে যায়, যারা সত্যি সত্যি সুন্দরবন বেড়াতে গেছেন, তারা কিন্তু এখানেও সুন্দরবনের একটা ছোট্ট ফ্লেভার খুঁজে পাবেন।

অসাধারণ জায়গাটির নাম যোগমায়া সরোবর বা রঞ্জন্ডি জলাধার একেই বলা হয় পুরুলিয়ার মিনি সুন্দরবন। কলকাতার কংক্রিটের জঙ্গলে থেকে যখন মোটামুটি দম আটকে যাওয়ার জোগাড়, তখন একটু দম নিতে চলে যেতে পারেন, পুরুলিয়ার জঙ্গলমহলে সবুজের ফাঁকে ফাঁকে লাল পলাশ, শিমুলের আগুন রঙে ফুলের রং দেখলে এক বুক ভরে নিশ্বাস নিতে ইচ্ছা করবে।

পুরুলিয়া জেলার কাশীপুর থানা এলাকায় অবস্থিত এই অসাধারণ যোগমায়া সরোবর এই জলাশয় থেকে ঘিরে পর্যটক সার্কিট গড়ে উঠেছে এই অঞ্চলে। তাই তো এখন বহু পর্যটক এর ভিড় হয়েছে এই জায়গায় এছাড়া পিকনিকও করেন অনেকেই এসে।

মরগুমা, সাহেব বাঁধ, খয়রাবেরা যেমন ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ততটাও জনপ্রিয়তা পায়নি। এই ছোট্ট সুন্দরবন একবার ঘুরে আসতে পারেন, নিরিবিলি এই জায়গাটি থেকে এখনো পুরুলিয়ার অফবিট ডেস্টিনেশন এর লিস্টে আছে অসাধারণ এই জায়গাটি।

এবার জেনে নিন হঠাৎ করে এই জায়গাটিকে সুন্দরবন বলার মানে কি? তাহলে কি সুন্দরবনের যে ম্যানগ্রোভ অরণ্য পুরুলিয়াতে হয়েছে মানে বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে যা হতে চলেছে কি ভাবছেন, সুন্দরবনের সেই লবণাক্ত জল পুরুলিয়ায় চলে এসে ম্যানগ্রোভ তৈরি করেছে? না এতটা উলটপালট হয়নি জলবায়ু। এখানে গেলে আপনি ম্যানগ্রোভের অরণ্য দেখতে পাবেন না, দেখতে পাবেন সোনাঝুরির জঙ্গল।

হয়তো ভাবছেন সোনাঝুরি দেখে সুন্দরবনের কথা কি করে মনে আসবে? এখানেই তো হয়েছে আসল টুইস্ট। এই সোনাঝুরির জঙ্গলের মধ্যে জলাশয়কে এক ঝলক দেখলেই আপনার কিন্তু হঠাৎ করে সুন্দরবনের কথা মনে পড়বে। ইচ্ছা করলে এই জলাশয় এর মধ্যে নৌকাবিহার করতে পারেন।

খোলামেলা কিছুটা পরিবেশে যদি সময় কাটাতে চান তাহলে এই জায়গাটি আপনার জন্য ভীষণ উপযুক্ত। এই জায়গাটিতে, যাবেন কি করে চলুন দেখে ফেলুন –

প্রথমে পুরুলিয়া বা আদ্রা স্টেশনে নামতে হবে, সেখানে গাড়ি করে সোজা পৌঁছে যেতে হবে কাশিপুর। কাশিপুর থেকে মাত্র ৮ কিলো মিটারে রাস্তা তারপর দারকেশ্বর নদীর পেরিয়ে ধটলা মোড় থেকে এক কিলোমিটার পর এই গেলে পৌঁছে যাবেন ‘মিনি সুন্দরবন’।

তবে শুধুমাত্র জায়গাটি যে এত সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য বিখ্যাত এমনটাই নয়। এখানে কাশিপুর রাজবাড়ি পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয় কারণ এখানে মাইকেল মধুসূদন দত্ত থেকে শুরু করে পঞ্চকোট রাজ পরিবারের ইতিহাস জড়িয়ে আছে, এই জায়গাটির সঙ্গে। তাই মিনি সুন্দরবন দেখার পাশাপাশি একবার ঘুরে আসতে পারেন এই রাজবাড়ি থেকে।

 

Related Articles