তাঁর কণ্ঠে স্বয়ং মা সরস্বতীর বাস। ভারতের ‘নাইটিঙ্গেল’ লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) জন্মগ্রহণ করেছিলেন আজকের দিনেই। ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এক মধ্যবিত্ত মরাঠি পরিবারের মেয়ে ছিলেন তিনি। সবথেকে বড় বোন লতা আর তারপরে আরো তিন ছোট ভাই বোন। শুধু ভারতীয় সঙ্গীত জগতের সুরসম্রাজ্ঞী নন, বাবা মায়ের পর সবার মাথার উপরে ছাতার মতো ছিলেন বড় দিদি লতা মঙ্গেশকর। গত বছর ৬ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হন তিনি। আজ তাঁর ৯৪ তম জন্মবার্ষিকী।
মোট ৩৬ টি ভাষায় গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। তাঁর গাওয়া মোট গানের সংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি। স্বাধীনতারও আগে ১৯৪২ সালে বিনোদন জগতে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গীতশিক্ষা বাবা দীননাথ মঙ্গেশকরের কাছে। কিন্তু এখানেও রয়েছে এক অজানা কাহিনি। বড় মেয়ে যে গান গাইতে পারে তা জানতেনই না তাঁর বাবা। আসলে বাবা মায়ের সামনে গান গাইতে ভয় পেতেন তিনি। উপরন্তু তাঁকে গান গাইতে শুনলে বকা দিতেন মা। তাই আরোই গাইতেন না।
পরে অবশ্য বাবার কাছেই গান শেখা শুরু করেন তিনি ও তাঁর বোনরা। কিন্তু খুব বেশিদিন শেখার সুযোগ হয়নি। কারণ দীননাথ মঙ্গেশকর প্রয়াত হন তার অব্যবহিত পরেই। বাবার অবর্তমানে ভাই বোনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন লতা। মুম্বই এসে কাজের খোঁজ করা শুরু করেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে ‘মঙ্গলাগোরে’ নামে একটি ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন লতা মঙ্গেশকর। গানের পাশাপাশি টুকটাক অভিনয়ও করেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর আসল আগ্রহ ছিল গানে। ‘লাভ ইজ ব্লাইন্ড’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক লতা মঙ্গেশকরের। কিন্তু সে ছবি মুক্তি পায়নি। ১৯৪২ সালেই প্রথম একটি মরাঠি ছবিতে গান করেন তিনি যেটি মুক্তি পায়। মঞ্চেও গান গেয়েছেন লতা। তাঁর প্রথম উপার্জন ছিল ২৫ টাকা।
সারাজীবন অবিবাহিত থেকে ভাই বোনের অভিভাবক হয়ে থেকেছেন লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু তাঁর বিয়ে না করার সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ কী ছিল জানেন? শোনা যায়, ডুঙ্গারপুর রাজপরিবারের মহারাজ রাজ সিংয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল লতার। কিন্তু মহারাজ তাঁর বাবা মাকে কথা দিয়েছিলেন, রাজ পরিবার ছাড়া বিয়ে করবেন না। তাই লতা মঙ্গেশকরকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারেননি তিনি। আবার এও শোনা যায়, ভাই বোনদের মুখ চেয়েই কোনোদিন বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নেন লতা মঙ্গেশকর।