বাবা পেট্রোল পাম্পে কর্মরত, প্রথম সুযোগেই UPSC পাশ করল ছেলে
সবচেয়ে অল্প বয়সী ক্যান্ডিডেট হিসাবে ২০১৮ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় পাশ করেছেন পেট্রোল পাম্পে কর্মরত এক বাবার ছেলে। মাত্র ২২ বছর বয়সেই প্রথমবারের প্রচেষ্টায় সে পরীক্ষায় পাশ করল। ২০১৯ সালের ৫ই এপ্রিল দিনটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, সেদিন ভারতবর্ষের ৭৫৯ জন ক্যান্ডিডেটস ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করেছেন। তাদের মধ্যে সকলেই বেছে নিয়েছেন আই.এ.এস, আই.পি.এস, আই.এফ.এস প্রভৃতি জায়গা।
প্রত্যেকটি সফল ঘটনার পেছনে থাকে একটা বিরাট ইতিহাস। মাত্র ২২ বছর বয়সে ইউ.পি.এস.সি পরীক্ষায় পাশ করা প্রদীপ সিং এর রয়েছে এমনই একটি গল্প। তার পিতা মনোজ সিং, যার আসল বাড়ি বিহারের গোপালগঞ্জে ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে ইন্দোরে পড়াশোনা এবং চাকরি বাকরি খোঁজে চলে আসেন। মনোজ, শেষ পর্যন্ত পেট্রোলপাম্পে একজন সার্ভিস ম্যান হিসাবে চাকরি পান।
১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণ করে তার একমাত্র ছেলে প্রদীপ। কয়েকবছর বিহারের গোপালগঞ্জের থাকার পরে সেও ইন্দোরে চলে আসেন। সেখানেই পড়াশোনা শেষ করেন। তিনি বলেন তিনি ইউপিএসসি আইএএস অফিসার সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। কিন্তু তার মা-বাবা তাকে মাঝেমধ্যেই পরীক্ষাগুলোর গল্প শোনাতেন, এবং তাকে বলতেন তাকেও এমন ‘আফসার'(অফিসার) হতে হবে। প্রদীপের হঠাৎ করে মনে পড়ে যায় তার দাদুর কথা যিনি, মারা যাওয়ার আগে তার মৃত্যুশয্যায় শুয়ে বলেছিলেন ‘প্রদীপ এবং তার বড় ভাই একদিন বড় চাকরি পাবে।’
বড় চাকরি পেয়েছে কিন্তু এই বড় চাকরি করার পিছনে রয়েছে অনেকটাই মনের জোর এবং পরিশ্রম। তবে বইপত্রের যখন অনেক দাম সেই মুহূর্তে প্রদীপের বাবা মনোজ, প্রদীপের সমস্ত প্রয়োজন মিটিয়ে ছিলেন। তিনি উপযুক্ত বাবা হয় প্রদীপের পাশে দাঁড়ান। তিনি জানান, কোচিং ক্লাস থেকে শতকরা ৮-১০% পাওয়া যায়, বাকি ৯০% ই নির্ভর করে নিজের উপর। তিনি জানান, ‘কখনো পরিবারের চাপিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে এসব করা উচিত নয়। যদি এটা একান্ত নিজের সিদ্ধান্ত হয়, তবেই সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত এবং তখনই সাফল্য আসবে।’
তিনি আরো জানান, নিঃসন্দেহে এইরকম পরীক্ষায় পাশ করা ভীষণ পরিশ্রমের ব্যাপার, তবে যতই পরিশ্রম করা যায় ততোই সাফল্যের পথ প্রশস্ত হয়।”তিনি জানিয়েছেন আই.এ.এস অফিসার হিসাবে তিনি যেখানেই পোস্টেড হন না কেন, তার লক্ষ্য থাকবে একদম নিম্নবিত্ত এলাকাগুলিতে, সমস্ত আইনি নিয়ম কানুন, শিক্ষা, চিকিৎসা এমনকি মহিলাদের অধিকার নিয়ে তিনি কাজ করবেন।’