whatsapp channel

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

'দুন্দুভি বাজিতেছে ঢিমিঢিমি রবে সাঁওতাল পল্লীতে উৎসব হবে' কান পাতলেই শুনতে পাচ্ছেন? অন্ধকার সাঁওতাল পল্লী থেকে যেন কিসের একটা বাজনা আপনার কানে বাজছে? না এটা কোনো স্বপ্ন নয়, স্বপ্নকে সত্যি…

Shreya Chatterjee

Shreya Chatterjee

দুন্দুভি বাজিতেছে ঢিমিঢিমি রবে
সাঁওতাল পল্লীতে উৎসব হবে’ কান পাতলেই শুনতে পাচ্ছেন? অন্ধকার সাঁওতাল পল্লী থেকে যেন কিসের একটা বাজনা আপনার কানে বাজছে? না এটা কোনো স্বপ্ন নয়, স্বপ্নকে সত্যি করতেই চলে যেতে পারেন উইকেন্ডে আপনারই একটি অচেনা গন্তব্যস্থলে। আজ আমাদের গন্তব্য পুরুলিয়ার অফবিট ডেস্টিনেশন মুরুগুমা। প্রকৃতির মধ্যে নিজেকে যদি একেবারে হারিয়ে ফেলতে চান তাহলে আপনার জন্য উপযুক্ত ডেস্টিনেশন পুরুলিয়ার এই গ্রামটি। পুরুলিয়া মূল শহর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রাম। এই গ্রামের মধ্যে অবস্থিত বাঁধ বা জলধারটি বেগুনকোদরের উত্তরের ঝালদা ব্লকের মধ্যে অবস্থিত। বাঁধটি কংসাবতী নদীর উপনদীতে অবস্থিত। মুরুগুমার উইকএন্ডের জন্য খুব সুন্দর জায়গা। এখান থেকে অযোধ্যা পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখা যায়। মুরুগুমার ভিউ পয়েন্ট থেকে গোটা পুরুলিয়ার শহরটিকে দেখতে লাগবে একেবারে স্বপ্নের মতন। এখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে একেবারে মিস করবেন না।

কি ভাবছেন মাত্র এইটুকু জিনিস দেখার জন্য এত দূরে কেন আসবেন? এখান থেকেই আপনি ঘুরে আসতে পারেন আশেপাশের বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় জায়গায়। চলুন দেখে নিই কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন মুরুগুমা বেড়াতে এসে।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

১) জয়চন্ডী পাহাড় – পুরুলিয়ার অন্যতম আকর্ষণ জয়চন্ডী পাহাড়। ৪০০ টি ধাপ হেঁটে গিয়ে আপনাকে পৌঁছতে হবে জয়চন্ডী মন্দিরে।

২) অযোধ্যা পাহাড় – প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বন্যপ্রাণী সহ একটি দুর্দান্ত ট্রেকিং করার জন্য উপযুক্ত স্পট। জায়গাটির আশে পাশে গভীর বন এবং হ্রদ, যা পাখি পর্যবেক্ষকদের জন্য একটি স্বর্গ। যারা ফটো তুলতে ভালোবাসেন তাদের জন্য জায়গাটি একেবারে মনোরম। গোর্শব্রু এবং ময়ূর পাহাড় কাছাকাছি এটি অবশ্যই দর্শনীয় স্থান। তাই এই দুটি জায়গাও দেখতে যেন মিস করবেন না। আপনি এখানে থাকাকালীন তুর্গা বাঁধ এবং বামনি জলপ্রপাতও অবশ্যই বেড়ানোর লিস্ট রাখুন। নাহলে মিস করে যেতে পারেন অনেক কিছু।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

৩) আলপনা গ্রাম – মুরুগুমা বাঁধ থেকে ঘুরে আসতে পারেন আলপনা গ্রামে। নাম শুনে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন গ্রামটির বিশেষত্ব কি? গ্রামে ঢুকলে মনে হবে কোনো নামী শিল্পী তার রং তুলি দিয়ে সাজিয়েছে পুরো গ্রামটিকে। কিন্তু না, কোনো প্রফেশনাল ছোঁয়া নয়, গ্রাম্য হাতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি রং তুলিতে সেজে উঠেছে গোটা গ্রাম।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

অযোধ্যা পাহাড় রেঞ্জের একটি অংশ হওয়ায়, মুরুগুমাকে প্রায়ই স্টপওভার হিসাবে ব্যবহার করেন পর্যটকরা। তাই উপরের তিনটি জায়গা ছাড়াও ঘুরে আসতে পারেন অযোধ্যা পাহাড়ের প্রধান আকর্ষণ যেমন  লোয়ার ড্যাম, আপার ড্যাম, পাখি পাহাড়, বামনি জলপ্রপাত, দেউলঘাটা মন্দির, চরিদা মুখোশের গ্রাম, তর্পনিয়া লেক ও খয়রাবেড়া লেক ।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

এত তো গল্প শুনলেন, মনে হচ্ছে তো কিভাবে পৌঁছানো যায় এই অসাধারণ জায়গাটিতে, তাই আর দেরি না করে চটপট দেখে নিন কিভাবে পৌঁছতে পারবেন পুরুলিয়ার এই স্থানে।

ট্রেন পথে- মুরুগুমা কলকাতা থেকে প্রায় ৩৭৫ কিলোমিটার দূরে। রূপসী বাংলা ট্রেন খুব সকালে পাওয়া যায় যেটি কলকাতা এবং পুরুলিয়ার মধ্যে চলে। ট্রেন পুরুলিয়া পৌঁছায় রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ। পুরুলিয়া স্টেশন থেকে, আপনি একটি গাড়ি ভাড়া করে মুরুগুমা পৌঁছাতে পারেন।

আরেকটি জনপ্রিয় ট্রেন হল হাওড়া চক্রধরপুর প্যাসেঞ্জার, ঝাড়খণ্ডের মুরি স্টেশনে পৌঁছান। মুরি স্টেশন থেকে মুরুগুমা ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ঝালদা স্টেশন থেকেও মুরুগুমা পৌঁছানো যায়।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

বিমান পথে- আপনি যদি প্লেনে যেতে চান, তাহলে নিকটতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হল কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বিমানবন্দর। পুরুলিয়ার কাছাকাছি অবস্থিত আরেকটি বিমানবন্দর হল রাঁচির বিরসা মুন্ডা বিমানবন্দর।  এখান থেকে, আপনি সহজেই শহরে পৌঁছানোর জন্য একটি ব্যক্তিগত ট্যাক্সি বা একটি বাস পেতে পারেন।

সড়কপথে – আপনি যদি সড়কপথের মাধ্যমে শহরে পৌঁছাতে চান, তবে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান শহরগুলি থেকে সহজেই বাস পেয়ে যাবেন।

কোন সময় বেড়াতে যাবেন – গরমের সময় বাদ দিয়ে বছরের যে কোন সময় বেড়াতে যেতে পারেন মুরুগুমা। আগে থেকে একটু গুগল সার্চ করে দিলে এখানে গেলে আঞ্চলিক উৎসব দেখে আসতে পারেন। বছরের বিভিন্ন সময় আঞ্চলিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেই সময় বেড়াতে গেলে মনোরম দৃশ্যের পাশাপাশি এই সমস্ত উৎসব দেখাও হবে উপরি পাওনা। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত অসাধারণ আবহাওয়া থাকে গোটা পুরুলিয়া জুড়ে।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

চট করে এক নজরে দেখে নিন পুরুলিয়ার জনপ্রিয় উৎসব –

টুশু পরব – গ্রামীণ মহিলাদের টুশুরানী নামক একটি কাল্পনিক চরিত্রের সাথে তাদের আনন্দ, দুঃখ এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়। টুশু পরব মকর সংক্রান্তির সময় জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হয়।

গাজন বা চড়ক পূজা – এটি ভগবান শিবের পুজো। পুরুলিয়া জেলার জায়গায় মার্চ থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

শিকার পরব – এটি এপ্রিল মাসে অযোধ্যা পার্বত্য অঞ্চলে সাঁওতাল উপজাতিদের দ্বারা পালিত শিকারের একটি উৎসব বা ‘শিকার’।

বাঁধন পরব – এই উৎসব বা ‘পরব’ হল পুরুলিয়ার অধিকাংশ উপজাতিদের দ্বারা উদযাপন করা সবচেয়ে প্রাণবন্ত উৎসবগুলির মধ্যে একটি। অক্টোবর,নভেম্বর মাসে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

Tourism: সপ্তাহান্তে ঘুরে আসতে পারেন পুরুলিয়ার সাজানো সুন্দর এই গ্রামে, নিমেষে মেজাজ হবে ফুরফুরে

whatsapp logo
Shreya Chatterjee
Shreya Chatterjee

আমি শ্রেয়া চ্যাটার্জী। বর্তমানে Hoophaap-এর লেখিকা। লাইফস্টাইল এবং বিনোদনমূলক লেখা আপনাদের কাছে তুলে ধরি। অনলাইনের সুবাদে রান্নার রেসিপি, রূপচর্চা, কুকিং টিপস, বেড়ানোর জায়গার সন্ধান এগুলো যেমন জানা প্রয়োজন, ঠিক তেমনি মনোরঞ্জনের জন্য শর্টফিল্ম, সিরিজ এগুলোরও সমান গুরুত্ব। সমস্ত খবরকেই লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করি। অনেক ধন্যবাদ সকলক