Hoop PlusReality show

Subhash Chakraborty: প্রয়াত ‘লাল পাহাড়ির দেশে’ খ্যাত সুভাষ চক্রবর্তী, কান্নায় ভেঙে পড়লেন মেয়ে

প্রয়াত হলেন বিখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী সুভাষ চক্রবর্তী। শনিবার সূর্যের প্রথম আলো গায়ে মেখে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ‘লকল পাহাড়ির দেশে’ খ্যাত বাঁকুড়ার এই সঙ্গীতশিল্পী। তবে শুধু জেলায় নয়, বাঁকুড়ার ভাষা ও ঝুমুরের সুরকে তিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন এক অন্য মাত্রায়। গোটা বাংলা এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমাদৃত হয়েছিল এই শিল্পীর গান। তবে আজ থেমে গেল সেই কণ্ঠ, সেই ঝুমুর। পরলোকে গমন করলেন শিল্পী। আর এই খবরে শোকস্তব্ধ হল গোটা বাংলার শিল্পীমহল থেকে তার শ্রোতারা। শোকপ্রকাশ করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

জানা গেছে, শনিবার বেলা ১১টা ৫৫ নাগাদ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এর আগে গত পরশু কার্ডিয়াক অ্যারাস্ট হয় শিল্পীর। এরপরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। হাসপাতালের তরফে সবরকম চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হল না। শনির সকালেই চিরনিদ্রার দেশে পাড়ি দিলেন শিল্পী। আর তার এই মহাপ্রস্থানে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তার মেয়ে অর্পিতা চক্রবর্তীও। এদিন দুপুরে একটি ফেসবুক লাইভ করে এই খবর জানান অর্পিতাদেবী। এছাড়াও বাবার স্মৃতিচারণায় অনেক কথা এদিন বলেন তিনি।

ফেসবুক লাইভের শুরুতেই বাবার মৃত্যুসংবাদ দিতে গিয়ে চোখের জলে ভেসে যায় মেয়ের মুখ। তারপর নিজেকে কিছুটা সামলে তিনি বলেন, “বাবা সারাজীবন বহু গান লিখেছেন, গান গেয়েছেন। আজীবন সঙ্গীত সাধনা করে গিয়েছেন। শাল মহুয়ার গন্ধ না পেলে ঝুমুর গান গাওয়া যায় না, বাবা এমনটাই বলতেন। সুযোগ পেলেই তিনি সেখানে চলে যেতেন। বাঁকুড়াতে নিয়ে যাওয়া হবে শিল্পীর দেহ।” এছাড়াও ভিডিওর শেষে আবারো একবার কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং ভাঙা গলায় বলেন, “বাবা তাঁর লেখা শেষ গান আমাকে দিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন এই গান যেন আমি রিলিজ করি। বাবার অংশ হয়ে কথা দিচ্ছি আজীবন সকলকে গান শুনিয়ে যাব। তিনি যে সুরের ধারা এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তাকে কোনওভাবেই বাধা পড়বে না।”

প্রসঙ্গত, ১৯৫২ সালে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে জন্ম এই ঝুমুর শিল্পীর। ছোট থেকেই সঙ্গীতের পরিবেশেই বড় হয়ে ওঠা। সত্তরের দশকে অরুণ কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে আলাপ ঝুমুর গানের এক আড্ডায়। তাঁর লেখা ‘শ্রীরাম ইস্টিশনের মহুয়া গাছটা’ কবিতায় সুরারোপ করেন সুভাষবাবু, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয় ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা…’ নামে। এই বহুল প্রচলিত লোকগানের নেপথ্যের শিল্পীরা আজীবন থেকে গিয়েছেন প্রচারের আড়ালেই। আর প্রচারবিমুখ হওয়ার জেরেই ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’,‘মরক পরবে’-র মতো গানগুলো জনপ্রিয়তা পেলেও খানিক অন্তরালেই থেকে গিয়েছেন সুভাষবাবু।

Related Articles