বাংলার সাহিত্য মহলে ফের শোকের ছায়া। বসন্তের শুরুতেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র স্রষ্টা ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় (Sasthipada Chattopadhyay)। শুক্রবার সকাল ১১:১০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কালজয়ী সাহিত্যিক। জানা গেছে, স্ট্রোক জনিত কারণে হাওড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন এই সাহিত্যিক। আর সেখানেই শুক্রের সকালে মহাপ্রস্থান ঘটে তার। চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রবাদপ্রতিম সাহিত্যিক। শোকের ছায়া নেমে এল বাংলার সাহিত্য মহল থেকে শিশু-কিশোর মহলে।
জানা গেছে, প্রয়ানকালে এই সাহিত্যিকের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। সাহিত্যিকের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার বাড়িতেই স্ট্রোক হয়েছিল তাঁর। তারপরই তাকে হাওড়ার ওই বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাকে। আর সেখানে লড়াই চলে পাঁচ দিনের। আপ্রাণ চেষ্টা চালান চিকিৎসকরা। কিন্তু হল না শেষরক্ষা। শুক্রবার সকালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। জানা গেছে, আজ দুপুর ৩টের সময় নার্সিংহোম থেকে প্রয়াত সাহিত্যিকের পার্থিব দেহ নিয়ে যাওয়া হবে হাওড়ার জগাছা এলাকার ধারসার তাঁর নিজ বাসভবনে।
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় ২৫ ফাল্গুন, ১৩৪৭ বঙ্গাব্দ তথা ১৯৪১ হাওড়া জেলার খুরুট ষষ্ঠীতলায় জন্মগ্রহণ করেন। কিশোর বয়েস থেকেই সাহিত্যসাধনা শুরু হয় তাঁর। ছোটবেলায় অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ছিলেন ও বিভিন্ন জায়গায় সাধু-সন্ন্যাসীর সঙ্গ করেছেন। তাঁর গল্প উপন্যাসে ভ্রমণের ছাপ পাওয়া যায়। তার সাহিত্য জীবন পাকাপাকিভাবে শুরু হয় ১৯৬১ সাল থেকে। এই বছর থেকেই আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয়’র সাথে যুক্ত হন এই লেখক।
তিনি অজস্র রহস্য-রোমাঞ্চ কাহিনি, ভৌতিক গল্প, ভ্রমণকাহিনি লিখেছেন। ১৯৮১ সালে তাঁর সৃষ্ট ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র কাহিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা দেয় তাঁকে। এই কাহিনিগুলি কার্টুন চিত্রে ছোটপর্দাতে পরিবেশিত হয়েছে। পাণ্ডব গোয়েন্দা ছাড়াও প্রাইভেট ডিটেকটিভ অম্বর চ্যাটার্জী, কিশোর গোয়েন্দা তাতার এর অভিযান ইত্যাদি সিরিজ গোয়েন্দা কাহিনী রচনা করেছেন তিনি।ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় ২০১৭ সালে শিশুসাহিত্যে তাঁর অবদানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদত্ত পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন।