সফলতার চূড়ায় থাকাকালীন বঙ্গতনয়া শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore) বিয়ে করেছিলেন কিংবদন্তী ক্রিকেটার ও পতৌদির নবাব মনসুর আলি খান পতৌদি (Mansoor Ali Khan Pataudi)-কে। ক্রিকেট মহলে তিনি পরিচিত ছিলেন টাইগার নামে। শর্মিলাও স্বামীকে এই নামেই ডাকতেন। তবে বলিউডের ঝকঝকে নায়িকা থেকে পতৌদি পরিবারের বেগম আয়েশা সুলতানা হওয়া সহজ ছিল না। শর্মিলার শাশুড়ি অর্থাৎ টাইগারের মা সাজিদা সুলতান একাধারে ছিলেন ভোপালের নবাবের কন্যা ও পতৌদির নবাব বেগম। অত্যন্ত ব্যক্তিত্বময়ী সাজিদা বেগম কোনোদিনই অন্দরমহলের আড়ালে থাকার পাত্রী ছিলেন না। পিতার মৃত্যুর পর বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও ষাটের দশকে ভোপালের সুলতান রূপে অভিষিক্ত হন সাজিদা। অপরদিকে স্বামীর মৃত্যুর পর কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন পতৌদি এস্টেটের দায়িত্ব। সাজিদার পছন্দ হয়েছিল শর্মিলাকে। রক্ষণশীল ছিলেন না তিনি। কিন্তু সেই সময় পতৌদি পরিবারের বেগম হওয়ার ফলে কিছু প্রোটোকল মানতে হত তাঁকেও। একই পথে হাঁটতে হয়েছিল শর্মিলাকে। কিন্তু এর ফলে একবার মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি।
View this post on Instagram
1967 সালে মুক্তি পেয়েছিল আইকনিক হিন্দি ফিল্ম ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’। ততদিনে টাইগারের সাথে শর্মিলার বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছে। এমনকি শর্মিলাকে মানতে হয়েছে পতৌদি পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের আগে ধর্ম পরিবর্তনের শর্ত। ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’-এর পোস্টারটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল যাতে শাম্মি কাপুর (Shammi Kapoor)-এর পিছনে লুকানো ছিল শর্মিলার শরীর। শুধুমাত্র তাঁর দুই পা দেখা যাচ্ছিল। বোঝা যাচ্ছিল না, আদৌ তিনি কোনো পোশাক পরে রয়েছেন কিনা।
View this post on Instagram
ততদিনে বলিউডে বিকিনির ট্রেন্ড সেট করেছেন শর্মিলা। কিন্তু ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’-এর পোস্টার দেখে রীতিমত চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। শর্মিলা বুঝতে পারছিলেন না, সাজিদা তাঁর ভাবী পুত্রবধূর এই রূপ মেনে নেবেন কিনা! অপরদিকে সেদিনই পতৌদি প্যালেসে তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সাজিদা। ভয় পেয়ে শর্মিলা মাঝরাতে তাঁর গাড়ির ড্রাইভারকে পাঠিয়েছিলেন ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’-এর সব পোস্টার রাতারাতি সরিয়ে ফেলার জন্য। তবে বুদ্ধিমতী সাজিদা কোনোদিনই তাঁর পুত্রবধূর সমালোচনা করেননি।
View this post on Instagram
1968 সালে টাইগারের সাথে শর্মিলা বিয়ে হয়। ধর্মান্তরিত হয়ে আয়েশা সুলতানা নাম গ্রহণ করলেও বলিউডে এখনও অবধি শর্মিলার প্রকৃত নাম টাইটেল কার্ডে ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে বিয়ের পরও শর্মিলার অভিনয়ের ক্ষেত্রে বাদ সাধেননি সাজিদা। ফলে কেরিয়ার ও পরিবারকে সহজেই সমানভাবে ব্যালান্স করতে পেরেছিলেন শর্মিলা।
View this post on Instagram