আপামর বাঙালির চিরকালের নস্টালজিয়া উত্তম-সুচিত্রা জুটিকে ঘিরে। মহানায়ক উত্তম কুমার (Uttam Kumar) ও মহানায়িকা সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen) যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসেন তখন তাঁরা দুজনেই বিবাহিত। কিন্তু উত্তম-সুচিত্রার অনস্ক্রিন রসায়ন দর্শকদের মনে সৃষ্টি করেছিল রোম্যান্টিসিজমের। একসময় অনেকেই মনে করতেন উত্তমের সাথে সুচিত্রার গোপন সম্পর্ক রয়েছে। নায়ক-নায়িকাও জানতেন দর্শকদের ধারণার কথা। সেই সময় ছিল না সোশ্যাল মিডিয়া, পিআর ও আরও গালভরা কিছু নাম। একটি ফিল্মকে সুপারহিট বানাতে সম্পূর্ণ ইউনিট উঠে-পড়ে লাগতেন।
View this post on Instagram
মার্কেটিং কাকে বলে তা জানা ছিল না কারও। তবে প্রভাব ফেলত সিলভার জুবিলি, গোল্ডেন জুবিলি। প্রযোজকের নজর থাকত প্রেক্ষাগৃহের রজনীর সংখ্যার উপর। এই সময় নির্মিত হয়েছিল উত্তম-সুচিত্রা জুটির আইকনিক ফিল্ম ‘অগ্নিপরীক্ষা’। 1954 সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল এই ফিল্ম। কিন্তু তার আগে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ হিট করাতে অভিনব উপায় বেছে নিয়েছিলেন মহানায়ক-মহানায়িকা। তাঁরা জানতেন, উত্তম-সুচিত্রার অনস্ক্রিন রোম্যান্স দর্শককুলকে ভাবতে বাধ্য করেছে তাঁদের অফস্ক্রিন সম্পর্কের ব্যাপারে। এই গুঞ্জনকেই সেই যুগে হাতিয়ার করেছিলেন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সর্বকালের সেরা জুটি।
উত্তম ও সুচিত্রার অফস্ক্রিন রোম্যান্সের গুঞ্জনকে ব্যবহার করে তৈরি হয়েছিল ‘অগ্নিপরীক্ষা’-র পোস্টার। এই পোস্টারের ট্যাগলাইন ছিল ‘অন্তর্নিহিত ভালোবাসার সাক্ষী’। এরপরেই উত্তম ও সুচিত্রার সম্পর্কের গুঞ্জন পরিণত হয়েছিল মারাত্মক জল্পনায়। এর ফলে সুপারহিট হল ‘অগ্নিপরীক্ষা’।
View this post on Instagram
কিন্তু উত্তম কুমার ও গৌরী দেবী (Gauri Devi)-র সংসারে এই গুঞ্জন কোনো প্রভাব ফেলেনি। কারণ গৌরী খুব ভালো করেই জানতেন উত্তম ও সুচিত্রার সম্পর্কের সমীকরণের কথা। তাঁরা শুধুমাত্র একে অপরের ভালো বন্ধু ও সহকর্মী ছিলেন। কিন্তু সুচিত্রার স্বামী দিবানাথ সেন (Dibanath Sen) সন্দেহ করতেন তাঁর নায়িকা স্ত্রীকে। সুচিত্রার সংসারে ঝড় ‘অগ্নিপরীক্ষা’ তোলেনি। তুলেছিল তাঁর খ্যাতি ও স্বাধীনচেতা মনোভাব। তবু বহু সমস্যা সত্ত্বেও শেষ অবধি সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন সুচিত্রা। মহানায়িকার জীবনের সেই কাহিনীর পালা অন্য আরও এক দিন নাহয়!
View this post on Instagram