“এই করেছ ভালো, নিঠুর হে, নিঠুর হে, এই করেছ ভালো” এখনো এই গান যদি ভেসে ওঠে মন কেমন নস্টালজিয়া হয়ে ওঠে। সেই সহজ সরল বিএ ফেল কেদারের কথা মনে আসে। একবার নয়, তিনবার পরীক্ষায় ফেল করে কেদার। বাবা রাগ করে পাঠিয়ে দেয় বিহারের একটি শহরে তাঁর কাকার কাছে। ব্যস গল্পের নতুন মোড় নেয় এখান থেকেই। কেদারের সরলতা হাসিঠাট্টার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে কেদারের প্রতিটা কথা, আচরণ সব। দর্শকরাও কেদারের সরলতাতে মুগ্ধ হয়েছিলো। আজও যখন টেলিভিশনের পর্দায় সেই তাপস পাল আর মহুয়ার মিষ্টি কেমেস্ট্রি ফুটে ওঠে তখন মনে বসন্তের ছোঁয়া লাগে।
এখনো যখন রেডিও বা টেলিভিশনে শোনা যায় তাপস পালের লিপে হেমন্ত মুখ্যোপাধ্যায়ের গাওয়া রবীন্দ্র সঙ্গীত- ‘চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে, নিও না নিও না সরায়ে ৷’ মন কেমন করে ওঠে। সম্প্রতি দাদার কীর্তি সিনেমার চল্লিশ বছর পূর্ণ হল, এখনো সেই সিনেমা সমান জনপ্রিয়। হেমন্তের গান, তরুন মজুমদারের পরিচালনা, দেবশ্রী-মহুয়ার যুগলবন্দী অভিনয়, অনুপ কুমারের নির্ভেজাল বদমাশি, আর তাপস পালের সহজ-সরল মুখ সব মিলিয়ে সেদিনও এই বাংলা সিনেমা প্রশংসিত, এই ২০২০ তে এসেও সমানভাবে প্রশংসিত।
১৯৮০ সালেই মুক্তি পায় তরুণ মজুমদারের দাদার কীর্তি। কেদারের (তাপস পাল) সহজ সরল লাজুক মুখ সেদিনও দর্শকদের মন জয় করে, সেদিনও সরস্বতী মুখোপাধ্যায় (মহুয়া রায়চৌধুরী) প্রেমে হাবুডুবু খান ওই যুবকের, আজও দর্শকরা কেদারের সরলতার প্রেমে রয়েছেন। আজ কেউ নেই, শুধু আছে “এই করেছ ভালো, নিঠুর হে, নিঠুর হে, এই করেছ ভালো”
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন অকল্পনীয় গল্পকে তরুন মজুমদার এত সুন্দর করে তুলে ধরেছেন যা আজও কুর্নিশ যোগ্য। এই গল্পের কেদার বা সরস্বতী ছাড়াও ছিল আরেকটি চরিত্র, তিনি ছিলেন ভোম্বল দা, যার খুনসুটি, দুষ্টু বুদ্ধি একবার কেদার-সরস্বতীর প্রেমকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়ে তো কখনো মিল করিয়ে দেয়। এই গল্পের পাড়ার ছেলেদের দুর্গা পুজোর আনন্দের সিনগুলি আজও পুরনো স্মৃতি উস্কে দেয়। হ্যাঁ, হাস্যরসে পরিপূর্ণ ‘দাদার কীর্তি’ নভেম্বরে চল্লিশ পূর্ণ করে, সেই সঙ্গে কিছু পুরনো স্মৃতি তাজা হয়ে ওঠে।