অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya)-র বাড়ির কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর কথা কারও অজানা নয়। প্রকৃতপক্ষে, লক্ষ্মী প্রতিমাটি যথেষ্ট প্রাচীন। প্রতিমাটি মাটির। তাঁকে প্রতি বছর নিজের হাতে সাজিয়ে তোলেন অপরাজিতা। অপরাজিতা জানালেন, প্রথমে তাঁদের লক্ষ্মী পুজো যথেষ্ট ছোট করেই হত। বড় ঠাকুরমশাই পুজো করতেন। ঠাকুরমশাই-এর আধ্যাত্মিক শক্তির উপর বিশ্বাস ছিল অপরাজিতার। ঠাকুরমশাই-এর পৌরোহিত্যে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন অপরাজিতা ও তাঁর স্বামী। অল্প দিনের পরিচয়েই বিয়ে হয়েছিল অপরাজিতার। শুটিং থেকে তাঁর স্বামীর বাড়িতে চলে এসেছিলেন অপরাজিতা। সেখানেই খাওয়া-দাওয়া করে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। অপরাজিতার শ্বশুর-শাশুড়ি দুইজনেই চাকরি করতেন। এরপরেই অপরাজিতার স্বামী তাঁকে বলেন বিয়ে করে নেওয়ার কথা।
এরপরেই অপরাজিতার শাশুড়ি বড় ঠাকুরমশাইকে নিয়ে চলে এসেছিলেন তাঁদের বাড়ি। প্রস্তাব রেখেছিলেন তাঁর ছেলের সাথে অপরাজিতার বিয়ের। ঠাকুরমশাই বলেছিলেন, খুব ভালো এই বিবাহ যোগ। তবে অপরাজিতার বাড়িতে সহজে মেনে নেওয়া হয়নি এই প্রস্তাব। রীতিমত অশান্তি হয়েছিল। কিন্তু এক মাসের মধ্যেই অপরাজিতার বিয়ে হয়ে যায়। তিনি প্রতিদিন গীতা পাঠ করতেন। 1989 সাল থেকে অপরাজিতার বাড়িতে হয় এই লক্ষ্মীপুজো। নতুন বৌ অপরাজিতাকে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আগে শাশুড়ি বলেন প্রতিমাকে কুমোরের কাছে নিয়ে গিয়ে সাজানোর কথা। সেই সময় মা লক্ষ্মীকে শোলার গয়না পরানো হত।
View this post on Instagram
কিন্তু চারিদিক খুঁজেও সেদিন কোথাও কুমোর খুঁজে পাওয়া যায়নি। চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন শাশুড়ি। সেদিন নিজেদের শাড়ি কেটে, গয়না ভেঙে মাকে সাজিয়েছিলেন অপরাজিতা। এরপর থেকে প্রতি বছর তাঁর হাতেই সেজে ওঠেন মা লক্ষ্মী। চলতি বছর মা লক্ষ্মীর পোশাক এসেছে মায়াপুর থেকে। মায়াপুরে অপরাজিতার এক বোন থাকেন। তাঁকে সবাই ‘গোপালের মা’ বলেই চেনেন। সকলের বিশ্বাস, তাঁর গোপাল জাগ্রত। অপরাজিতার বোন তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর গোপালের পোশাক যেখান থেকে আসে, সেখান থেকেই এবার তিনি মা লক্ষ্মীর পোশাক আনাবেন।
পোশাকটি এসে পৌঁছালে অপরাজিতা প্রথমে ভেবেছিলেন, তিনি এত বড় পোশাক প্রতিমাকে কি করে পরাবেন! কিন্তু অদ্ভুত ভাবে মা লক্ষ্মীকে পোশাকটি পরানোর পর অপরাজিতা দেখেন, পোশাক তো বটেই, গয়নাগুলিও একদম সঠিক মাপের হয়েছে। অপরাজিতা তাঁর বোনকে পুরো ঘটনাটি জানালে তিনি বলেন, নারায়ণ তাঁর স্ত্রীকে এই পোশাক পাঠিয়েছেন।
View this post on Instagram