বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সর্বকালের সবথেকে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের কথা বলতে গেলে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের (Sabitri Chatterjee) নাম আসবে না তা হতেই পারে না। বাংলাদেশের কুমিল্লার মেয়ে এপার বাংলায় এসে রূপোলি জগতের রানী হয়ে উঠেছিলেন। দেশভাগের কষ্ট বুকে চেপেই এপারে চলে এসেছিলেন তিনি। ১০ মেয়ের মধ্যে তিনিই ছিলেন কনিষ্ঠ। কঠোর পরিশ্রম করে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছিলেন।
বাবা মায়ের ১০ মেয়ে। ছোট থেকেই সংসারে অভাব দেখে বড় হয়েছেন সাবিত্রী। তাঁর অভিনয় জগতে আসাটা অবশ্য বেশ আশ্চর্যজনক ঘটনা। কিন্তু ছোট মেয়েটাই পরবর্তীকালে ঝড় তুলে দিয়েছিল বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে। উপহার দিয়েছেন মরুতীর্থ হিংলাজ, মৌচাক, শেষ অঙ্ক, ধন্যি মেয়ের মতো কালজয়ী সব ছবি। কিন্তু একটা আক্ষেপ থেকেই গিয়েছে তাঁর।
বিয়ে আর করা হয়ে ওঠেনি সাবিত্রীর। এমন নয় যে প্রেম আসেনি তাঁর জীবনে। একাধিক সম্বন্ধও দেখা হয়েছে। তবে সেসবই ভেস্তে গিয়েছে। বা বলা ভালো ভেস্তে দেওয়া হয়েছিল। আর অদ্ভূত ভাবে এর জন্য উত্তম কুমারই দায়ী বলে একাধিক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন সাবিত্রী। উত্তম কুমার নাকি সাবিত্রীকে বিয়ে করতে দিতেন না। ভেস্তে দিতেন সম্বন্ধ। তাঁর সঙ্গেও সম্পর্কের গুঞ্জন উঠেছিল অভিনেত্রীর। কিন্তু পিছিয়ে এসেছিলেন সাবিত্রী। কারণ উত্তম কুমার ছিলেন বিবাহিত।
শুধু উত্তম কুমার নন, আরো এক বিবাহিত ব্যক্তির প্রেমে সাবিত্রী পড়েছিলেন বলে শোনা যায়। তিনি সর্বেন্দ্র সিং। অভিনেতা হলেও তাঁর নাম খুব কম লোকেই শুনে থাকবেন। শোনা যায়, এই মানুষটার প্রেমে পড়ে নাকি হাবুডুবু খাওয়ার জোগাড় হয়েছিল সাবিত্রীর। বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও বেশিরভাগ সময়টা নাকি অভিনেত্রীর বাড়িতেই পড়ে থাকতেন তিনি। অতিরিক্ত মদ্যপানে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়ার কারণে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল সর্বেন্দ্র সিং এর। সেটার জন্য নাকি ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন সাবিত্রী। কিন্তু মুম্বইতে অস্ত্রোপচারের জন্য নিজের স্ত্রীর সঙ্গেই গিয়েছিলেন অভিনেতা। মন ভেঙে গিয়েছিল সাবিত্রীর। বিয়ে না হলেও সর্বেন্দ্র সিং কেই নাকি মনে মনে নিজের স্বামী মেনে ছিলেন তিনি, কিন্তু কখনো কারোর ঘর ভাঙেননি অভিনেত্রী।