ঘুরলো ভাগ্যের চাকা, ফের গানের জগতে ফিরলেন রানাঘাটের লতাকন্ঠী রানু মন্ডল
সম্প্রতি এশিয়ানেট চ্যানেলের কমেডি শো ‘কমেডি স্টার’-এ বিশেষ অতিথি হয়ে এসেছিলেন গায়িকা রাণু মন্ডল (Ranu Mandal)। এই শো-তে সকলের অনুরোধে আবারও ‘তেরি মেরি কাহানি’ গেয়ে শোনালেন রাণু। এশিয়ানেটের ইউটিউব চ্যানেলে রাণুর গানের ভিডিওটি আপলোড হতেই কয়েক ঘন্টার মধ্যেই 25 হাজার ভিউ ছাড়িয়ে যায়। তুমুল ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওতে রাণুর গান নেটিজেনদের পছন্দ হয়েছে।
কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল হয়েছে রাণু মন্ডল(Ranu Mandal)-এর একটি ভিডিও। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাণুর সঙ্গে গান গাইছেন তাঁর মেয়ে এলিজাবেথ সাথী রায়(Elezabeth Sathi Roy)। মা ও মেয়ে দুজনে জনপ্রিয় হিন্দি ফিল্ম ‘ব্রহ্মচারী’র গান ‘তেরে মেরে পেয়ার কে চর্চে’ গেয়েছেন। এলিজাবেথও বেশ ভালো গান গেয়েছেন।
ইদানিং প্রায়ই রাণু মন্ডলের (Ranu Mandal) বিভিন্ন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে চলেছে নেট দুনিয়ায়। কিছুদিন আগে একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাণুর এক মহিলা ফ্যান তাঁকে সেলফি তোলার জন্য স্পর্শ করলে রাণু তাঁকে অপমান করছেন। রাণু ও হিমেশের একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সংবাদমাধ্যমের সামনে রাণুর লড়াইয়ের কথা বলতে বলতে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠছেন সুরকার হিমেশ রেশমিয়া (Himesh Reshmiya)। তাঁর চোখে জল এসে যাচ্ছে। এটি একবছর আগের ভিডিও। এখন হিমেশের সঙ্গে রাণুর বিশেষ যোগাযোগ নেই।
কিছুদিন আগে রাণু মন্ডল গান গাইলেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচীর( Rupankar Bagchi) সঙ্গে। নরেন্দ্রপুরে গানঘর স্টুডিওতে ছিল রূপঙ্করের ডিজিটাল কনসার্টের শুটিং। সেখানেই রাণু আশা ভোঁসলে (Asha Bhonsle) ও লতা মঙ্গেশকরের(lata Mangeshkar)কিছু গান গেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই রূপঙ্করের সামনে একটু নার্ভাস ছিলেন রাণু। কিন্তু রূপঙ্কর রাণুকে যথেষ্ট উৎসাহ দেন গান গাওয়ার জন্য। ফলে কিছুটা হলেও রাণুর আড়ষ্টতা কেটে যায়।
সম্প্রতি রাণু মন্ডলের ‘মেন্টর’ অতীন্দ্র (Atindra)একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই ভিডিওতে রাণু মন্ডলকে বলতে শোনা গিয়েছিল, পরিচালক ধীরাজ মিশ্রের(Dhiraj Misra) প্রথম রোম্যান্টিক ফিল্ম ‘সীতামগর’ এবং ভারতের স্বাধীনতাযুদ্ধ নিয়ে তৈরী ফিল্ম ‘সরোজিনী’-র কিছু গান গাইবেন রাণু মন্ডল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনরা অনেকেই রাণু মন্ডলকে কটাক্ষ করে মানসিক রোগী বলেছেন। আবার অনেকেই অতীন্দ্রকে বলেছেন, লকডাউনের সময় রাণু মন্ডল যখন খেতে পাচ্ছিলেন না, তখন কোথায় ছিলেন অতীন্দ্র। তবে অতীন্দ্র এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।
লকডাউনের সময় আর্থিক কষ্টের সম্মুখীন হতে হয় রাণু মন্ডলকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাণু এলাকার গরীব মানুষদের জন্য নিজের চেষ্টায় কিছু ত্রাণের ব্যবস্থা করেছিলেন। নিজে না খেতে পেলেও অন্যের সেবায় ব্রতী হওয়া রাণুর এই রূপ সেদিন বহু মানুষের কাছে প্রশংসনীয় হয়েছিল। রাণু সেইসময় নিজে প্রায় প্রতিদিনই চিঁড়ে-মুড়ি খেয়ে কাটাতেন। রাণুর অভাবের কথা জানতে পেরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁর জন্য কিছু আর্থিক সহায়তা ও খাবারের ব্যবস্থা করেন।
রানাঘাট স্টেশনে বসে ‘এক পেয়ার কা নাগমা’য় গেয়ে ভাইরাল হওয়া রাণু মন্ডলকে বলিউডে প্লে ব্যাকের সুযোগ দিয়েছিলেন মিউজিক ডিরেক্টর হিমেশ রেশমিয়া। হিমেশ রেশমিয়ার সঙ্গে ডুয়েট গেয়েছিলেন রাণু। তাঁর গাওয়া ‘তেরি মেরি কাহানি’ গানটি যথেষ্ট বিখ্যাত হয়েছিল। এরপর রাণু বহু স্টেজ শোয়ের অফার পেতে শুরু করেন। কিন্তু রাণু দর্শকদের সঙ্গে এবং তাঁর অনুরাগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে শুরু করেন। একসময় মিডিয়ার সামনেও খারাপ আচরণ করেন রাণু। ফলে তাঁর প্রতি ইন্ডাস্ট্রির বৈরিতা তৈরি হয়। পরবর্তীকালে লকডাউনের সময় স্বাভাবিকভাবেই কর্মহীন হয়ে পড়েন রাণু।