Hoop News

Loksabha Election: আরও কমল আসন, বঙ্গে ভরাডুবি বিজেপির, নেপথ্যে এই বড় কারণ!

মঙ্গলবার, ৪ ঠা জুন ফল প্রকাশ হল লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election)। বিগত প্রায় দেড় মাস ধরে দেশ জুড়ে চলা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ্যে এল এদিন। সকাল থেকে ভোট গণনার এখনও সমাপ্তি না হলেও পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ফলাফল অনেকটাই স্পষ্ট। ৪২ আসনের মধ্যে ২৯ টি আসন রয়েছে তৃণমূলের (TMC) দখলে। বিজেপি (BJP) পেয়েছে মাত্র ১২ টি। কংগ্রেস পেয়েছে ১ এবং বামফ্রন্ট ০। তবে সবথেকে বেশি অবাক করেছে বিজেপির ফলাফল। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় এবারে আরও কমল বিজেপির আসন। এমনকি গোটা দেশেই এনডিএ জোটের পরিস্থিতি আশানুরূপ নয়। ভোটফেরত সমীক্ষার ফলাফলকে সম্পূর্ণ উলটে দিয়েছে বাস্তব গণনার ফল। কোথায় ভুল থেকে গেল গেরুয়া শিবিরের হিসেবে? কোন মন্ত্রে ফের টেক্কা দিল ঘাসফুল শিবির? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে উঠে আসছে ৫ টি পয়েন্ট।

তুরুপের তাস লক্ষ্মীর ভাণ্ডার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে যে প্রকল্পগুলি চালাচ্ছেন রাজ্যে তাদের মধ্যে অন্যতম লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েই এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে আগে জেনারেল ক্যাটেগরির মহিলারা পেতেন মাসে ৫০০ টাকা এবং সংরক্ষিত শ্রেণির মহিলারা পেতেন ১০০০ টাকা করে। কিন্তু সম্প্রতি এই টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ করায় বর্তমানে অসংরক্ষিত শ্রেণি অর্থাৎ জেনারেল ক্যাটেগরির মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মাসে ১০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। আর সংরক্ষিত শ্রেণির মহিলারা মাসে পান ১২০০ টাকা। মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই সরাসরি টাকা দেওয়ার প্রকল্প চালু করে নিঃসন্দেহে বাজিমাত করেছে তৃণমূল। এর জন্য প্রচুর পরিমাণে মহিলা ভোট ঢুকেছে তৃণমূলে, মত বিশেষজ্ঞদের।

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের ভীতি

তৃণমূলের জয়ের দ্বিতীয় কারণটিও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সংক্রান্তই। আসলে বঙ্গে প্রচারের সময় মুখ ফসকে বা অন্য কোনো কারণে একাধিক বিজেপি নেতা এই প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পরবর্তীতে বেশি টাকা বা অন্য কোনো প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। বিজেপি নেতাদের একাংশের এই হুঁশিয়ারিকে সূচারুভাবেই জনমানসে বিজেপি সম্পর্কে ভীতি গড়ে তুলতে ব্যবহার করেছে তৃণমূল, বক্তব্য বিশেষজ্ঞদের। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এর টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বিজেপিকে অনেক মানুষই প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

নেতাদের ঘনঘন দলবদল

এই দল থেকে ওই দল, আবার পুরনো দলে ফিরে আসা, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে এই প্রবণতা বহুল লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু দলবদলুদের নিয়ে বিজেপির অতিরিক্ত মাতামাতি সাধারণ ভোটাররা ভালো ভাবে নেয়নি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেন্দ্রীয় সংস্থার অতি সক্রিয়তা

বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে নিজ স্বার্থে চালানোর অভিযোগ একাধিক বার উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। অনেক সময় দেখা গিয়েছে, এমন নেতা নেত্রীদের বাড়িতে হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা, যাদের নিয়ে জনমানসে যথেষ্ট ভালো ভাবমূর্তি রয়েছে। এটা একরকম ব্যাক ফায়ার করে গিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশে।

সংখ্যালঘু ভোটের জয়জয়কার

বাংলায় সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের একটি বড় শক্তি। ঘাসফুলের ভালো ফলাফলের ক্ষেত্রে অনেকাংশেই সংখ্যালঘু ভোটকে দায়ী করা হয়। কিন্তু অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি এবারেও সেই ভোটব্যাঙ্কে চিড় ধরাতে পারেনি। উপরন্তু বিজেপির ধর্মভিত্তিক রাজনীতিও বাংলার মানুষ ভালো ভাবে নেয়নি বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।

Related Articles