প্রতিবাদী কণ্ঠ মীনাক্ষীকে বানালেন নিজের অনুপ্রেরণা, ফেসবুকে মনের কথা লিখলেন জিতু কমল
বাংলায় শুরু হয়ে গিয়েছে বিধানসভার ভোট। ইতিমধ্যে দু দফায় ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে। আর এবারে ভোটে রাজনৈতিক মহল থেকে একের পর এক চমক হয়েই চলেছে। এবারে ভোটে তারকাদের মেলা। ভোটের দিন যতই এগোচ্ছে ততই এক একটি দলের ভোটের প্রচারে আসছে নতুন নতুন চমক। যখন অনেক তারকা নিজেদের দলীয় চিন্তা ভাবনা নিয়ে সরব হয়েছেন তখন টেলি পাড়ার এই বিখ্যাত অভিনেতা জীতু কমল ও কেন বাদ থাকবেন। তিনি ও নিজের চিন্তাভাবনা আর আদর্শ নিয়ে কথা বললেন সোশ্যাল মিডিয়াতে।
শনিবার ঘড়িতে তখন রাত তখন ১১টা বাজে। যাদবপুরের যতীন মোড়ে তখনও গিজগিজ কছে লোক। কেউ এই ভ্যাপসা গরমে এক ফোঁটা ক্লান্ত নন। কেউ আবার নেতাদেত ওপর ক্ষুব্ধ নন। একজায়গায় জড়ো হয়ে সবাই মন দিয়ে কথা শুনছেন। শুনবেই তো প্রতিবাদী কণ্ঠ যে কথা বলছে। কেউ আবার বাড়ি ফেরার পথে চার চাকার গাড়ি থামিয়ে দাঁড়িয়ে মীনাক্ষীর কথা শুনছেন। রাত যত বাড়ছে, ভিড় ততই বাড়ছে। কারণ তখন মাইকের সামনে বামেদের রক্তমাংসের মানুষ যে প্রতিবাদ করতে ভয় পায়না মীনাক্ষী মুখার্জি।
সদ্য দ্বিতীয় দফার ভোটে নন্দীগ্রামে মমতা ব্যানার্জী, শুভেন্দু অধিকারীর বিপরীতে তিনি লড়েছেন। যতীন মোড়ের যে স্টেজের যেখানে দাঁড়িয়ে মীনাক্ষী বক্তব্য রাখছিলেন, তার ঠিক কয়েক হাত দূরেই বাড়ি অভিনেতা জিতু কমলের। বাড়ি ফেরার পথে মীনাক্ষীর সব কথা মন দিয়ে শুনছিলেন। মীনাক্ষীর কথা শুনতে শুনতে তাঁর কথায় বড় ভক্ত হয়ে উঠলেন।
আর এভাবেই শনিবার রাতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং সুভাষ চক্রবর্তীর পর নিজের জন্য আরো এক নতুন ‘বন্ধু’ খুঁজে পেলেন তিনি। মীনাক্ষীর কথা শেষ হবার পর বাড়ি ফিরে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করেছেন জিতু্। লিখেছেন, ‘আমি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের খুবই বড় ভক্ত, তা আমার বলতে দ্বিধা নেই.. তারপরের স্থানই বন্ধু সুভাষ চক্রবর্তীর.. বারাসাত কাচারী ময়দান ২০০২ অথবা ২০০৩ হবে, আমি তাঁর বক্তব্য শোনার জন্যে বড়দের স্লোগানে গলা মিলিয়ে চলে যেতাম। এর পর আরো লিখলেন, উপরে “বন্ধু” শব্দ বলার জন্য কারোর কোনো আপত্তি নেই তো?? তাঁর কাছে বন্ধু শব্দের অর্থ ভাবনার সাদৃশ্যে.. অনেক বছর পরে তাঁর বাড়ির কাছে, প্রায় মাঝ রাতে আরও এক ভালো বন্ধু তৈরী হল। নাম তার “মীনাক্ষী”। তারপরই তিনি আরো লিখলেন, বাপ্ রে বাপ্, ককী উচ্ছ্বাস, কী উদ্দীপনা! যেন বুদ্ধ”দেব” অথবা বন্ধু বাবুর আত্মা ভর করেছে তাঁর এই বান্ধবীর উপর।’ এরপরই অনেকেই জীতুর এই পোস্ট দেখে লড়াই করার জন্য উৎসাহ দেন।
জিতু বরাবর ছিলেন বাম সমর্থক, বামেদের প্রচারে সরাসরি পা না মেলালেও, বামনেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা, আবেগেপ্রবণ নানান কথা আগেও তিনি লিখেছেন। বিশেষ করে বুদ্ধ বাবুকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, এর কারণে তাঁর কাজেরও ক্ষতি হতে পারে। তবে তাতে তার কোনো আক্ষেপ নেই। কিছুদিন আগেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি পোস্ট করে ফেসবুকে জিতু লিখেছিলেন, ‘আপনাকে ভালোবাসি স্যার.. আপনি বাম রাজনীতি করেন শুধু তাই জন্যে নয়.. আপনি সততার, সত্যের, নিষ্ঠার আরেক নাম..আপনি “বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য”। এই পোস্টের জন্যেও,তাঁর কাজের ক্ষতির আশঙ্কা জেনেও চুপ থাকতে পারেননি। সত্যের জন্য কথা বললেন। চতুর্দিকে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল জিতুর এই পোস্ট। কিন্তু এই পোস্ট অনেকের কাছে বেশ প্রিয় হয়ে উঠেছে।