“আমি অন্য কোথাও যাব না, আমি এই দেশেতেই থাকব।” অনির্বাণ ভট্টাচার্যর (Anirban Bhattacharya) লেখা এই গানের ভিডিও সম্প্রতি তৈরি হয়েছে। গানের ভিডিওতে শুরুতেই রয়েছেন তরুণ অভিনেতা ঋদ্ধি সেন ও ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। এছাড়াও এই গানের ভিডিওতে দেখা যায় পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, অরুণ মুখোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, কৌশিক সেন, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বহু টলিউড তারকা।
এই গান নিয়ে যত গন্ডগোল বাঁধে রাজনীতির মঞ্চে। এই মিউজিক ভিডিওতে দেখানো হয়েছে সি এ এ এবং এন আর সি র কাহিনী। পাকিস্থান ও ভারতের অঙ্ক বোঝানো হয়েছে। একটু ভালো করে নিরপেক্ষ ভাবে ভিডিওটি দেখলে এবং শুনলে বোঝা যাবে যে বর্তমান বিজেপি দলকে উদ্দেশ্য করেই এই গানের রচনা। গানটি ভালো না মন্দ সেটা বিচার্য বিষয় নয়, কিন্তু শিল্পীরা তাদের চিন্তা ভাবনা, পড়াশুনো, অতীতের ইতিহাস, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে এই গানের রচনা করেছেন।
গন্ডগোল এখনও শুরু হয়নি। শুরু তখনই হয় যখন এই গানের প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের মতামত জানতে চাওয়া হয়। উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি বলেন, “শিল্পীদের বলছি আপনারা নাচুন, গান। ওটা আপনাদের শোভা পায়। রাজনীতি করতে আসবেন না। ওটা আমাদের ছেড়ে দিন। না হলে রগড়ে দেব।” তার কাছে উত্তর চাওয়া হয় এবং তিনিও তার মতন করেই উত্তর দেন। কিন্তু এই উত্তর পছন্দ হয়নি যারা এই ভিডিও বানিয়েছেন এবং যারা বানাননি তাদের মধ্যে কিছু তারকার। তাদের কাছে “রগড়ে দেব” কথাটি অপ্রাসঙ্গিক এবং রুচিহীন বলে বিবেচিত হয়েছে। এখানে দিলীপ ঘোষকে রগড়ে দেব প্রসঙ্গে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সেই প্রশ্নের উত্তরে আবার বলেন, “ওরা জানে আমি কীভাবে রগড়াই।” এছাড়াও বুদ্ধিজীবী প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন যে এই শব্দটিই ঠিক নয়। এঁরা হঠাৎ করে আসেন, আবার হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যায়। এই নির্বাচনেও কোথাও গায়েব হয়ে গিয়েছেন।
কারা কারা বিরোধিতা করলেন দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যে? যারা ওই ভিডিওতে আছেন তারা কেউই বাদ যাননি, পাশাপাশি বিজেপি কর্মী এবং সমর্থক রূপাঞ্জনা মিত্র এমন মন্তব্যে আহত হয়েছেন। এছাড়াও শিল্পীদের কাছে রূদ্রনীল প্রশ্ন রেখেছেন, “আপনাদের কে কোন দেশে যেতে বলেছে? পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে বিজেপিকে ফ্যাসিস্ট বলে সংযুক্ত মোর্চার প্রচার করছেন।” পরমব্রত এবং অঙ্কুশ দুজনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন এই দুটি শব্দের বিরোধিতা করে। অঙ্কুশের মন্তব্য – ‘ইশ সব জায়গাতেই যদি একটু শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে লোক নেওয়া হতো, তা হলে যে কেউ শিল্পীদের রগড়ে দিয়ে যেত না’। খড়কুটোর কৌশিক রায় বলেছেন, “দিলীপবাবু কোন প্রসঙ্গে কী বলেছেন সেটা আমি জানি না। তবে যে দলে এতজন তারকা প্রার্থী, সাংসদ রয়েছেন সেই দলের নেতা শিল্পীদের নিয়ে কোনও কুমন্তব্য করবেন বলে আমি মনে করি না। ওঁর বক্তব্যকে কোনও ভাবে ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।”