হাত দুটিই নেই, পায়ের সাহায্যে লিখে পরীক্ষায় পাস করলেন কেরালার এই যুবতী
এই যুবতীর জন্মই হয়েছিল দুই হাত ছাড়া। কিন্তু অসম্ভব মানসিক জোরে এগিয়ে গেছেন সামনের দিকে। পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে এগিয়ে যাওয়ার পথটা হয়তো একটু কঠিন ছিল। কিন্তু তার পাশে সব সময় ছিলেন তার মা। জন্মের পরই একটি পেন্সিল তার পায়ের আঙ্গুলের মাঝে গুঁজে দিয়েছিলেন। শিক্ষার শুরু সেই থেকে। প্রথম শ্রেণীর শেষে তিনি দিব্যি পায়ের সাহায্যে সুন্দর অক্ষরমালা লিখতে পারতেন। তবে এখন সে দশম শ্রেণীর ছাত্রী, অসাধারণ রেজাল্ট করেছে সে। পা দিয়ে লিখেই তিনি তার যুদ্ধকে জয় করেছেন। তার পরিবার অবশ্য তাকে একটি সারপ্রাইজ গিফট দেবেন বলে এক আলমারী ভর্তি উপহার সাজিয়ে রেখেছিলেন তার জন্য। তবে দশম শ্রেণীর পাশ করার পরেই তিনি একাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শুরু করে দিয়েছেন।
কেরালার মালাপ্পুরাম এ অবস্থিত দেবিকা কখনোই তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে আসেননি। বর্তমানে তিনি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পরিশ্রম করে চলেছেন। দেবিকার মা-বাবা সুজিথা এবং সাজিব তারা দিনরাত্র চেষ্টা করে চলেছেন কিভাবে তার মেয়েকে ভালো করে পড়াশোনার পরিবেশ দেওয়া যায়। বোর্ডের পরীক্ষায় তিনি প্রতিটি পরীক্ষা নিজেই দিয়েছেন মালায়লাম, ইংলিশ এবং হিন্দি ভাষায়। যার জন্য স্কুলের প্রত্যেকটি শিক্ষক শিক্ষিকার কাছ থেকে তিনি সহায়তা পান।
দেবিকার বাবা সাজিব হলেন থেনহিপালাম পুলিশ স্টেশনের একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার। তিনি বিশ্বাস করেন, দেবিকার এই পরিশ্রম তাকে একদিন ঠিক সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে। পড়াশোনার পাশাপাশি দেবিকা একজন অসাধারণ অঙ্কন শিল্পী। তার আঁকা ছবি প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়। শুধু তাই নয়, তিনি ভালো গানও গাইতে পারেন। নিজের এই গুণগুলো তিনি যখন সবার কাছে বলতে একটু লজ্জা বোধ করেন, তাকে এই ব্যাপারে সাহায্য করে তার একমাত্র ছোট ভাই গৌতম। সব মিলিয়ে গল্পটি বেশ শিক্ষণীয়। যাদের হাত, পা থেকেও নানান রকম অজুহাত দেন নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে না পারার, তাদের কাছে এ গল্পটি বেশ শিক্ষণীয় হতেই পারে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কে কিভাবে জয় করতে হয় তা দেবিকা শিখিয়ে দিয়েছেন।