নিরক্ষর শাশুড়ি উৎসাহ দিয়ে পুত্রবধূকে বানালেন IAS অফিসার
পড়াশুনা করাব বলে বিয়ে করে নিয়ে গিয়ে অনেক শ্বশুরবাড়িতেই মেয়েদের পড়াশোনার ইতি হয়। পড়াশোনা তো করানো হয় না উল্টে ঘরের সমস্ত কাজের দায়িত্ব ফেলে দেওয়া হয় সেই মেয়েটির উপরে। যাতে করে তার স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাও নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু মাঝে মাঝে একেবারে উল্টো ঘটনাও ঘটে। যদিও তা সংখ্যায় অনেক কম, তবুও ঘটে। কমলা নগরীর বাসিন্দা দশম শ্রেণী পাস করা শ্বশুরমশাই এবং একেবারে অশিক্ষিত শাশুড়ি মা ছেলের বউকে উৎসাহিত করে আই.এ.এস অফিসার করেছেন।শ্বশুরমশাই রাজীব আগরওয়াল, শাশুড়ি মা মঞ্জু আগরওয়াল, স্বামী নিশান্ত আগারওয়াল এর অদম্য ইচ্ছাতে এবং অদিতির কঠোর পরিশ্রম ও মনের জোরেই সে প্রথম প্রয়াসে আই.এ.এস পাস করেছেন।
তিনি গাজিয়াবাদের মোদিনগর এর দয়াবতী মোদি পাবলিক স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে তারপর কলেজে গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে আগ্রার নিশান্তের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পরই তিনি আই.এ.এস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন। এই পরীক্ষায় তিনি ২৮২ র্যাংক করেন। তিনি যখন কলেজে পড়তেন তখন মোদি নগরের একেবারে বস্তিবাসী মানুষদের দিকে তাকিয়ে তিনি অনেক কিছু ভাবতেন। তাদের কষ্ট উপলব্ধি করতেন। তিনি ভাবতেন, তিনি এমন কোন কাজ করবেন যাতে তাদের কষ্ট খানিকটা লাঘব করা যায়। এই মানসিক ভাবনা থেকেই তিনি পরীক্ষায় অনেকটা সফল হতে পেরেছেন। তারপরে শ্বশুরবাড়ির প্রত্যেকটি মানুষ তাকে ভীষণ সাহায্য করেছিলেন এই পরীক্ষাটিতে ভালোভাবে উত্তীর্ণ হতে।
পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি, মনের জোর এবং প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে কোনো যুদ্ধই জয়ী হওয়া অসম্ভব নয়, তা প্রমাণ করে দিয়েছেন অদিতি। অদিতির মত মেয়ে, বর্তমানে অনেক মেয়েরই আদর্শ হতে পারেন। সংসার সামলে কিভাবে একটা দায়িত্বপূর্ণ কাজকেও সামলানো যায় তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছেন অদিতি। সব মিলিয়ে তাকে কুর্নিশ জানাতে হয় এবং সাথে সাথে তার শ্বশুরবাড়ির মানুষজনকেও ধন্যবাদ। তাদের সাহায্য ছাড়া, তাদের মানসিক সাপোর্ট ছাড়া অদিতির পক্ষে এই কাজটা করা কঠিন হতো। বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এখনো শ্বশুর বাড়িতে চলে নারী নির্যাতন, পনের জন্য বধু হত্যা। এসবের মাঝে এই ঘটনাটি সত্যিই এক বিরল দৃষ্টান্ত।