কুমার শানু (Kumar Sanu)-র দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি নব্বইয়ের দশকে। বহুদিন ধরেই সালোনী (Saloni)-র সঙ্গে পরকীয়ায় আবদ্ধ শানু তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্য (Rita Bhattacharya)-র সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের হওয়ার পর সালোনীকে বিয়ে করেন। কুমার শানুর সন্তান হিসাবে জান কুমার শানু (Jaan Kumar Sanu)-র নাম অনেকেই জানেন। তিনি বিগ বসের ঘরে এসেছিলেন। কিন্তু শানুর একটি মেয়েও রয়েছে। তিনি এখন মার্কিন গায়িকা। নিজের গাওয়া ‘রিট্রেস’ গানের সূত্র ধরে তিনি এখন তারকা। কাজ করেছেন হিমেশ রেশমিয়া (Himesh Reshmiya)-র সঙ্গেও। তাঁর নাম শ্যানন কুমার শানু (Shyanon Kumar Sanu)। শানুর দ্বিতীয় পক্ষের কন্যাসন্তান তিনি।
View this post on Instagram
মাত্র আঠারো বছর বয়সে তারকা হয়ে ওঠা শ্যানন তারকা হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে সামলাতে জানেন। তিনি মনে করেন, ব্যর্থতা জীবনের অঙ্গ। তিনি দেখেছেন, তাঁর বাবা কুমার শানু পেশাদার জীবনের খারাপ সময়েও নিজেকে কিভাবে চালনা করেছেন। শানুর মতে, জীবনে প্রাপ্তির জন্য কৃতজ্ঞ থাকা উচিত ঈশ্বরের কাছে। যতটুকু পাওয়ার যোগ্যতা আছে, ততটুকুই পাওয়া যায়। বাবার কাছেই শ্যাননের সঙ্গীতশিক্ষার হাতেখড়ি। তাঁর গানের সবচেয়ে বড় সমালোচক শানু। তিনি ভুল হলে শুধরে দেন, প্রয়োজনে ধমকান। গান ভালো হলে প্রশংসাও করেন। শানুর পরামর্শ অনুযায়ী এগিয়ে চলেছেন শ্যানন। শানু তাঁর সব গান শোনেন।
View this post on Instagram
নব্বইয়ের দশকের গান তেমন না শুনলেও বাবার গান শুনে ওই সময়ের সঙ্গে একাত্ম বোধ করেন শ্যানন। দুই বছর বয়স থেকে বাবার কথা অনুযায়ী ‘সা’-এ গলা সাধারন তিনি। শানুর মতে, গানের অর্থ বোঝা খুব দরকার। গায়ক যদি গানের অর্থ না বোঝেন তাহলে দর্শকদের তা পছন্দ হবে না। তবে এখনও শ্যাননের মঞ্চে গান গাইতে নার্ভাস লাগে। কিন্তু শানু বলেন, এই নার্ভাসনেস ইতিবাচকতার লক্ষণ। যেদিন থেকে এই ভয়টা পাবেন না, সেদিন তাঁর শিক্ষাও শেষ হয়ে যাবে। তবে খ্যাতি পিছনে ছোটা পছন্দ করেন না শানু। তিনি মনে করেন কঠিন পরিশ্রম করে সাফল্য আসে। শ্যাননের ইচ্ছা রয়েছে বলিউডে প্লে-ব্যাক করার। কিন্তু তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস ছেড়েও যেতে চান না। তবে হলিউডে নিজের গায়ের রঙের জন্য তাঁকে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয়। কিন্তু তবু তিনি সেখানে কাজ করতে পছন্দ করেন। শ্যাননের মতে, বলিউড ও হলিউডে কাজের ধরন আলাদা। বলিউডে একটি গান তৈরির পিছনে একজন প্রযোজক, গীতিকার ও গায়কের কৃতিত্ব থাকে। কিন্তু হলিউডে গান লিখে, সুর দিয়ে, স্টুডিওয় গিয়ে রেকর্ড করা হয়। এরপর তাতে আনুষঙ্গিক মালমশলা দেওয়া হয়।
শ্যানন লস অ্যাঞ্জেলেসে থাকার সময় হিমেশ তাঁকে ‘আজা’ গানটি পাঠান। করোনা অতিমারীর সময় গানটি রেকর্ড করলেও শ্যানন জানতেন না কবে গানটি মুক্তি পাবে। কিন্তু হঠাৎই গানটি রিলিজ করেন হিমেশ। ঘটনাচক্রে একই দিনে শ্যাননের ‘রিট্রেস’ মুক্তি পায়। হিমেশ তাঁকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন শ্যানন। ‘আজা’ গানে হিন্দিতেও কয়েক লাইন গেয়েছেন তিনি। তিনি ও তাঁর দিদি অ্যানাবেল (Annabelle) ‘রিট্রেস’ গানটি লিখেছেন। শ্রোতাদের কাছে এই গানটি জনপ্রিয় হয়েছে।
তবে বাংলা গানও শোনেন শ্যানন। কুমার শানুর গাওয়া একাধিক বাংলা গান শুনেছেন তিনি। শুনেছেন আর.ডি.বর্মণ (R.D.Barman)-এর গান। তাঁর মনে হয়, বাংলা গানে একটা মিষ্টতা আছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত তাঁর পছন্দ। তবে এখনকার বাঙালি শিল্পীদের মধ্যে মোনালি ঠাকুর (Monali Thakur) ও শ্রেয়া ঘোষাল (Shreya Ghoshal)-এর গান তাঁর ভালো লাগে। বাবা-মায়ের সম্মন্ধে খারাপ কথা শুনে একসময় মানসিক অবসাদ শিকার হয়েছিলেন শ্যানন। পরিবারের সমর্থন তাঁকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে।