Lata Mangeshkar: অবাঙালি হয়েও বাংলার নিকটাত্মীয়, ভরা মঞ্চে বাঙ্গালির প্রশংসা করছিলেন লতা, ভাইরাল ভিডিও
গীতিকার সলীল চৌধুরীর ভাষায়, “লতার স্বরে মা সরস্বতীর বাসস্থান।” সত্যিই একধার থেকে সব রকমের ভাষায় সব ধরনের গান এসেছেন লতা মঙ্গেশকর। বাঙালির কাছে তো অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন তিনি তাঁর ১৮৫ টি অপূর্ব বাংলা গানের স্মৃতি নিয়ে। “আজ মন চেয়েছে”, “আষাঢ় শ্রাবণ”-এর মতো মন মাতানো গানের মধ্যে দিয়ে বাঙালির নিকটাত্মীয় হয়ে রয়েছেন তিনি। হিন্দির পর সবচেয়ে বেশি তিনি বাংলা ভাষাতেই গান গেয়েছেন।
বাংলার মহর্ষি সম্প্রদায়ের ভক্ত ছিলেন লতাজি। বেলুড় মঠের এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় তিনি বলেছিলেন, “আমি ও আমার পরিবারে সবাই স্বামী বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের অনেক বড় ভক্ত।” তিনি শরৎচন্দ্র ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রায় প্রত্যেকটি বই পড়েছিলেন। বিশেষভাবে তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা পছন্দ করতেন। তাঁর ভাষায়, “হিন্দি এবং বাংলা ভাষার মধ্যে যে সাংস্কৃতিক সান্নিধ্য আছে সেই বিষয়টি আমার খুব প্রিয়।” ভারত রত্না লতাজি এইভাবে নিজেকে বাঙালির অনেক কাছে নিয়ে এসেছিলেন।
কলকাতায় এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় গান শুরু করার আগেই লতাজি বলেছিলেন, “আমি জানি কলকাতার মানুষ আমায় কতটা ভালবাসেন। তাই আমি চাই আপনারা সবাই আমার গান শুনে আমায় আশীর্বাদ দিন। আমি আপনাদের সকলের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ।” তাঁর গাওয়া প্রথম বাংলা গান ছিল সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সুরে ‘আকাশ প্রদীপ জ্বলে’, এরপর সলিল চৌধুরীর সাথে কালজয়ী গান ‘না যেও না’ আর ‛সাত ভাই চম্পা’। সলিল চৌধুরী ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সবসময় নাকি লতাজির সাথে বাংলা ভাষাতেই কথা বলতেন। লতাজির ভাষায় , “যতদিন ওরা ছিলেন আমি ভালোভাবে বাংলা বলতে পারতাম।”
লতাজি বাংলা ভাষা আর বাংলার মানুষকে খুব বেশি ভালোবাসতেন। তাঁর ভাষায়, “বাংলা ভাষা খুব খুব ভালো। কিন্তু আমি বলতে পারি না। আর বাংলা ভাষা যত মিষ্টি। এখানকার মানুষও ঠিক ততটাই মিষ্টি।” তাঁর বাংলা ভাষা নিয়ে এতটাই আগ্রহ ছিল যে বাড়িতে গৃহশিক্ষক রেখে বাংলা শেখার প্রয়াসও করেছিলেন। সময়ের অভাবে কিছুটা হলেও পুরোটা শেখা হয়ে ওঠেনি। ‛ভারতের নাইটিঙ্গেল’ লতাজি এতটাই বিনয়ী ছিলেন যে কথায় কথায় সবাইকে প্রণাম জানাতেন। সত্যিই তাঁর সাহচর্য হারিয়ে গিয়ে অনেকটাই খামতি রয়ে যাবে সাংস্কৃতিক মহলে।