‘মিটু’ শব্দটি আদৌ আন্দোলন কিনা তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। মহিলাদের মধ্যে এটি আন্দোলন বলা হলেও এর ফল কতদূর ফলেছে বা তাঁরা আদৌ সঠিক বিচার পেয়েছেন কিনা, তা চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে। বহু মহিলা ‘মিটু’-র ফায়দা তুলেছেন। যাঁরা এই ধরনের ঘটনার শিকার, তাঁদের বলা হয়েছে, এতদিন বলেননি কেন অথবা ‘সতীপনা’। হয়তো এই কারণেই ‘মিটু’-কে নৈতিক সমর্থন জানিয়েও চুপ করে ছিলেন ঐশ্বর্য রাই (Aishwarya Rai Bachchan)। অনেকেই মনে করেন, তাঁকে কখনও কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়নি। কিন্তু তাঁর প্রাক্তন হলিউড ম্যানেজার সিমন শেফিল্ডস (Simone Sheffield) এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন।
একসময় ঐশ্বর্যর যাবতীয় হলিউড সংক্রান্ত কাজের দেখভাল করতেন সিমন। একটি সাক্ষাৎকারে সিমন জানিয়েছেন, ঐশ্বর্যকে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন হার্ভে উইনস্টেইন (Harvey Winstein)। ইনিই সেই মহানুভব হলিউড পরিচালক, পরিচালনার থেকেও যাঁর মন পড়ে থাকে বিছানার দিকে। হার্ভে হলিউডের একাধিক নায়িকাদের কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। হার্ভেকে ঘিরেই সূত্রপাত হয়েছিল ‘মিটু’ আন্দোলনের। হলিউডের প্রথম সারির অভিনেত্রীরা হার্ভের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন।
View this post on Instagram
অভিযোগকারিণীদের মধ্যে ছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, গিনেথ প্যালট্রো, জেনিফার লরেন্সরা। এরপর থেকেই হার্ভেকে ‘যৌন শিকারি’ তকমা দেওয়া হয়। কিন্তু হার্ভের সাহস এতদূর অবধি গড়িয়েছিল, তিনি সিমনকে ঐশ্বর্যকে পাওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন। 2014 সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন ঐশ্বর্য ও অভিষেক (Abhishek Bachchan)। সেই সময় হলিউড থেকে ঐশ্বর্যর কাছে কাজের প্রস্তাব এসেছিল। হার্ভে তাঁর লস অ্যাঞ্জেলেসের অফিসে এই ব্যাপারে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেন ঐশ্বর্যর সঙ্গে। ম্যানেজার হিসাবে ঐশ্বর্যর সঙ্গে সিমনকেও ওইসব বৈঠকে উপস্থিত থাকতে হত। বহুবার হার্ভে সিমনকে ইঙ্গিতে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বললেও পাত্তা দেননি সিমন। কিন্তু এইরকম একটি বৈঠকে ঐশ্বর্যর আড়ালে হার্ভে সিমনকে একা পেয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ঐশ্বর্যকে একা পেতে হলে তাঁকে কি করতে হবে!
View this post on Instagram
জবাবে সিমন বেশ কিছু এমন ভাষা প্রয়োগ করেছিলেন হার্ভের প্রতি, যা অত্যন্ত খারাপ বলে তিনি সকলের সামনে না আনলেও পরিশেষে হার্ভেকে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তিনি কখনওই তাঁর গ্রাহকের সঙ্গে অন্যায় হতে দেবেন না। সেই ঘটনার কথা বলতে গিয়ে সিমন, হার্ভেকে ‘শূকর’ বলে সম্বোধন করে জানিয়েছেন, ঐশ্বর্যর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন সিমনের কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন হার্ভে। এই ঘটনার বদলা নিতে সেদিন হোটেলে ফিরে হার্ভেকে একটি ডায়েট কোক ভরা শূকরের খাবার পাত্র দিয়ে তাঁকে সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন।
তবে ঐশ্বর্য এই ব্যাপারটি জানতেন কিনা তা জানা যায়নি। কারণ তিনি সিমনের ওই সাক্ষাৎকারের পরেও এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।