টানা ১০ ঘণ্টার মহাসংগ্রামে বিজয়ীর শিরোপা পেলেন শুচিস্মিতা, আর কারা পেলেন পুরস্কার!
গতকাল ছিল স্টার জলসার অন্যতম জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো সুপার সিঙ্গার সিজন ৩-র গ্র্যান্ড ফিনালে। সংগীতের এই মহারণের প্রথম দিন থেকে বিচারক ছিলেন ৯০ দশকের মেলোডি কিং কুমার শানু, ধ্রুপদী সঙ্গীতের সম্রাজ্ঞী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কন্যা কৌশিকী চক্রবর্তী এবং বলিউডের প্রথম সারির গায়ক সোনু নিগম। তারকা এবং খ্যাতনামা গায়কদের ভীড়ে সবসময় গমগম করত সুপার সিঙ্গারের স্টেজ।
চ্যানেল কর্তৃপক্ষ সব সময় সুপার সিঙ্গারের যেকোনো সিজনের ফিনালেতে চোখ ধাঁধানো চমক রাখে। এই সিজনের প্রতিটি এপিসোড ছিল চমকে ভরা। এমনকি সংগীতের মঞ্চে আইবুড়োভাত থেকে শুরু করে বিয়ে অবধি দেখেছিল দর্শক। টানা ১০ ঘণ্টার এই গ্র্যান্ড ফিনালে যেন চাঁদের হাট। টলিউড থেকে বলিউড সুপারস্টারদের ভিড়ে সুপার সিঙ্গার হয়ে উঠেছে আরও রাজকীয়। এই অনুষ্ঠানের মহাসমারোহের সঙ্গে সূচনা করেন বাদশা। তারপর কবিতা কৃষ্ণমূর্তি থেকে পালক মুছাল,ইলা আরুণ থেকে শান বিখ্যাত গায়ক গায়িকাদের ভীড়ে ঝলমলিয়ে উঠে সুপার সিঙ্গারের মঞ্চ। এই গ্র্যান্ড ফিনালের আরও একটি চমক ছিল আর সেই চমকটি ছিল অভাবনীয়। বহু যুগ পর একই মঞ্চে ধরা দিলেন এই বাংলার দুই সুপারস্টার দেব এবং জিৎ। এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেত্রী নাচের জাদুকর মাধুরী দীক্ষিত। বাংলার কোন রিয়্যালিটি শোতে এটিই তাঁর প্রথম পদার্পণ। অন্যান্য বিচারকদের সাথে তিনিও বিজয়ী প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এই দিন।
‘একের পর এক বারবার এই বাংলায় প্রথমবার।’ এই ছিল গতকালের গ্র্যান্ড ফিনালের ট্যাগলাইন। দীর্ঘ এই সংগীতের সফরের বিজয়ী হন বেহালার শুচিস্মিতা। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন মানসী এবং তৃতীয় স্থান যুগ্মভাবে অধিকার করেন প্রণয় এবং কুমার গৌরব। এছাড়াও পপুলার চয়েসে বিজেতা হন তারকেশ্বরের সৌমি।
একাধিক নামী মুখের ভীড়। দশ ঘণ্টার একটি ঘন্টাও যেন কোন দর্শক চোখ ফেরাতে পারে না এই অনুষ্ঠান থেকে সেই ব্যবস্থাই করে রেখেছিল চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। প্রতি ঘন্টায় একের পর এক নতুন চমক নিয়ে হাজির ছিলেন যীশু সেনগুপ্ত। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাদশাকে কুমার শানুর সঙ্গে গলাও মেলাতে দেখা যায়।
কিন্তু এই দিনের অন্যতম সেরা চমক হলেন মাধুরী দীক্ষিত। বহু যুগ পর তিনি আবার বাংলার মাটিতে। এটিই তাঁর বাংলা টেলিভিশনে প্রথম আত্মপ্রকাশ। স্টার জলসা প্রতিবারই কোনো-না-কোনো নামকরা বলিউড তারকাকে গ্র্যান্ড ফিনালে চমক হিসেবে নিয়ে আসে। গত বছর একটি নাচের অনুষ্ঠানের গ্র্যান্ড ফিনালের বিচারক হিসেবে এসেছিলেন সানি লিওনি। যা নিয়ে রীতিমতো রাতদিন চর্চা হতো নেট দুনিয়ায়। মাধুরী দীক্ষিত জানান যে তিনি সুচিত্রা সেনের কত বড় একজন ফ্যান এবং নাচের মাধ্যমে সুচিত্রা সেনকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান তিনি। নিজের অনাবিল ছন্দে আবারও তিনি বাংলার দর্শকদের মন কেড়ে নিলেন।
গানেও ছিল একদম সেয়ানে সেয়ানে টক্কর। কাকে ছেড়ে কার গানকে প্রাধান্য দেবেন তা নিয়ে বিচারকরা প্রায়ই দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ছিলেন। প্রথম রাউন্ডে যে ছেলেটি বিচারকদের মনে অতটা দাগ কাটতে পারেননি দ্বিতীয় রাউন্ডে সেই ছেলেটি স্টেজে আগুন ধরিয়ে দেয় গানের মাধ্যমে। যদিও চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বিচারকরা তাদের বিচার জানান। সেইমতো যীশু সেরার তালিকা ঘোষণা করেন এবং সেরাদের সেরার মুকুট পরিয়ে দেন মাধুরী দীক্ষিত। বহুদিন পর বাংলা এরকম চমকপ্রদ গ্র্যান্ড ফিনালের সাক্ষী হয়ে থাকল।