গতবছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই বাংলার রাজনৈতিক চিত্র আমূল পাল্টে যায়। যে সমস্ত দলত্যাগীরা বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিল তারাই আবার উলটপুরান ঘটায়। বিভিন্ন দাপুটে নেতাদেরও ঘরওয়াপসি বিধানসভা ভোটের পর। কিছুদিন আগে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্যের সহ সভাপতি পদ পেয়েছেন জয়প্রকাশ মজুমদার। কখনো লকেট কখনো বা অন্য নেতা বর্তমান বিজেপি নেতাদের নিয়ে জল্পনা এখন তুঙ্গে।
এই জল্পনার আবহে আরও একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। বর্ষিয়ান অভিনেত্রী এবং রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করে দেবেন? ফেসবুকে ভীষণভাবে সক্রিয় রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সম্প্রতি তার ফেসবুকের দেওয়ালে হঠাৎ দেখা গেল একটি আবেগঘন পোস্ট। যেখানে তাঁর একাকীত্ব থেকে রাজনৈতিক জীবনে লড়াইয়ের কথা উঠে এসেছে। একথা অনস্বীকার্য যে দলের সঙ্গে বিভিন্ন কারণে তার বারবার মনোমালিন্য হয়েছে। কলকাতায় পুরভোটের সময় তার চরম পর্যায় পৌঁছায়। তবে বাংলার জন্য সংসদ ভবনে চোখের জল ফেলতে পিছপা হননি অভিনেত্রী। সাংসদ হিসেবে সকল দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করে চলেছেন।
ফেসবুক পোস্টে কিসের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়? নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছু জল্পনা উস্কে দিয়ে অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় লেখেন, ‘অনেকের অনেক কাজ শেষ করে উঠতে পারলাম না! একা একা লড়ে গিয়েছি। চেষ্টায় ফাঁকি রাখিনি। জীবনকে নতুন করে চেনালো রাজনীতি।’ আর এই পোস্টেই নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। তবে কি রাজ্যের বিরোধী দলের থেকে যে দূরত্ব একটু একটু করে তৈরি হচ্ছিল তা আরও বেড়ে গেল? এবার কি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও পদ্ম শিবির ত্যাগ করতে চলেছেন? যদিও পরবর্তীতে তিনি সমস্ত জল্পনা ভেসে দিয়ে কমেন্ট বক্সে লেখেন যে বিজেপির একটি অঙ্গ হতে পেরে তিনি গর্বিত।
যেমন সুঅভিনেত্রী তেমন সুগায়িকাও বটে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি উদাত্ত কণ্ঠে এখনও দারুন রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে পারেন। অবসর পেলে তিনি লেখালেখির দিকেও আগ্রহ দেখান। রাজ্য রাজনীতিতে যোগ দেন ২০১৫ সালে। ২০১৬ সালের হাওড়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি নির্বাচনে দাঁড়ান। হাওড়া উত্তরে পরাজিত হয়েছিলেন শাসকদলের কাছে। কিন্তু বিজেপির তরফ থেকে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানো হয়। আর সেখানে তাঁর ক্ষুরধার বক্তব্য বারবার উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমের পর্দায়। এছাড়াও তিনি দীর্ঘ অনেকগুলি বছর রাজ্যের মহিলা মোর্চার সভাপতি ছিলেন।