এখনও প্রত্যেক ঈদে ‘মন্নত’-এর সামনে নামে জনতার ঢল। ‘মন্নত’-এর বারান্দায় দাঁড়িয়ে শাহরুখ খান (Shahrukh Khan) সকলকে জানান ঈদের শুভেচ্ছা। তিনি কিং খান। দক্ষিণী ফিল্মগুলি হাজার হাজার রেকর্ড তৈরি করলেও অক্ষুণ্ণ রয়েছে শাহরুখের রেকর্ড। কিন্তু শাহরুখ বারবার জানিয়েছেন, তাঁর চলার পথ এতটাও সহজ ছিল না।
শাহরুখের শৈশবে দারিদ্র্যের সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি। তাঁর পিতা ছিলেন অত্যন্ত সরল মানুষ। ফলে তাঁকে ব্যবসা করতে গিয়ে ঠকতে হয়েছিল। সর্বস্ব হারিয়েছিলেন তিনি। ছিল না শাহরুখের স্কুলের ফি দেওয়ার পয়সাও। ব্যবসার পাশাপাশি শাহরুখের পিতা আইনজীবি হলেও ভাগ্য তাঁকে সমর্থন করেনি। একবার আর্থিক সমস্যার কারণে শাহরুখের স্কুলের বেতন দিতে পারেননি তাঁর মা-বাবা। শাহরুখের স্কুল থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। আর কোনো উপায় না দেখে তোষকের তলা থেকে সংসার চালানোর টাকা বার করে শাহরুখের স্কুলের বেতন দিয়েছিলেন তাঁর মা-বাবা। হয়তো সেই মাসে সংসার চালাতে প্রচন্ড কষ্টের সম্মুখীন হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হতে দেননি।
View this post on Instagram
স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন শাহরুখ। ভর্তি হন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস কমিউনিকেশন নিয়ে স্নাতকোত্তর করতে। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়েন শাহরুখের বাবা। রাতের পর রাত হাসপাতালে কাটাতেন শাহরুখ। শেষ রক্ষা হয়নি। খুব অল্প বয়সেই পিতৃহারা হন শাহরুখ। আর্থিক সমস্যার কারণে স্নাতকোত্তরের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি। ইতিমধ্যেই ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাঁর মা। তার আগেই গৌরী (Gauri Khan)-কে বিয়ে করেছিলেন শাহরুখ। কারণ তাঁর মা ছেলের বিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন। মায়ের কবরে মাটি দিয়ে মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন শাহরুখ, গৌরী ও শাহরুখের বোন শেহনাজ ( Shehnaz)।
এই মুহূর্তে সাত হাজার কোটির বেশি সম্পত্তির মালিক শাহরুখ আজও ভুলতে পারেননি শৈশবের স্মৃতি। দিনের শেষে নিজের বিরাট লাইব্রেরিতে সময় কাটান তিনি। আজও মনে করেন, তিনি অনাথ। কিন্তু নিজের সন্তানদের সঠিক শিক্ষা দিতে কার্পণ্য করেননি শাহরুখ।
View this post on Instagram