শুধু পড়ে রইল কিছু ছবি, হারিয়ে গেলেন সুশান্ত, পুত্রশোকে স্মৃতি আগলে বসে রইলেন বাবা
চলে গেলেন সুশান্ত সিং রাজপুত, শুধু পরে রইল এক গুচ্ছ স্মৃতি
স্মৃতির ভিড়ে কত মুখ না জানি হারিয়ে যায়। মাঝে মাঝে ভেসে ওঠে, তবে তা অস্পষ্ট রূপে! কিন্তু এই ভাবে যে অকালে ঝরে গেল, তার ব্যাখ্যা বোধহয় কোন মনবিজ্ঞানীও দিতে সক্ষম হবেন না। সাম্প্রতিক বলিউড দুনিয়ায়ে যে সকল কলাকুশলীরা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুশান্ত। নিজের অভিনয় ও নাচের দক্ষতায় জায়গা করে নিয়েছিলেন। একের পর এক হিট ছবি, বাজিমাত করেছেন এই তারকা। খ্যাতি তখন গগনচুম্বী। ক্রিকেটার মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নিয়ে নির্মিত ছবিতে, কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে সকলের মন জিতে নিয়েছিলেন সুশান্ত। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
সাফল্য, অর্থ, প্রাচুর্য, সবকিছুই ছিল তাঁর হাতের মুঠোয়ে! পারিশ্রমিক নিতেন চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা, প্রতি প্রজেক্ট পিছু! কিন্তু হঠাৎ করেই বদলে গেল চিত্রটা। সুশান্ত আত্মঘাতী হলেন। কাউকে কিছু না জানিয়ে, কোনো কিছু বোঝবার আগেই এই চরম সিদ্ধান্ত! এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন মাত্র ৩৪ বছর বয়সে। কিন্তু কেন এমন এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন এই উদীয়মান নায়ক! উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এরই মধ্যে অন্যতম হল ‘নেপোটিজম’ যার প্রকৃত অর্থ নিজের পরিচিত মহলকে সর্বাধিক প্রাধান্য দেওয়া। স্বনামধন্য নির্দেশক করণ জোহরের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে এই অভিযোগ।।তিনি নাকি ব্যক্তিগত ভাবে সুশান্তকে একেবারে পছন্দ করতেন না। এর ফলে সুশান্তের হাত থেকে প্রায় কয়েক কোটিটাকার ছবি হাতছাড়া হয়। কিছু প্রভাবশালী মানুষও নাকি মন্তব্য করেছেন যে সুশান্তকে একজন বাস ড্রাইভারের মত দেখতে। উনি স্বকামী, তাই মৈথুনে লিপ্ত হওয়ার সময়ও নিজের গান শোনেন। কোনও এক পার্টিতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কাঁচের বোতলও ভেঙে ছিলেন এক জনের মাথায়! এই সকল অভিযোগ তিলে তিলে তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।
লড়াইয়ের সবকটি দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সবকিছু তার মাত্রা অতিক্রম করেছিল, তাই নিজেকেই সরিয়ে নিলেন চিরতরে। বর্তমান বছর অভিশপ্ত, প্রকৃত অর্থেই। এক দিকে মহামারী, অন্যদিকে একের পর এক নক্ষত্র পতন! সুশান্ত আজ নেই আমাদের মাঝে। কোন এক বৃষ্টির দুপুরে, মনের আনন্দে, বারান্দায় ভেজা হবে না তাঁর। একটি মনোরম সন্ধ্যায় গঙ্গায় পা ভিজিয়ে, সেই মৃদুমন্দ বাতাস অনুভব করা হবে না তাঁর। সবকিছু এক লহমায় কেমন শেষ হয়ে গেল। পরে রইল ছাই টুকু।পরে রইল তাঁর পরিবার, যেখানে আজ কোন স্বপ্ন নেই দুই চোখে, আছে শুধু বুকভরা যন্ত্রনা, কান্না!