বুধবার সকাল থেকেই তিনি ছিলেন অসুস্থ। যদিও তিনি এই অসুস্থতা নিয়ে শুটিংয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শুটিং ফ্লোরে গিয়ে তার আরও শরীর খারাপ করবে তাদের তাই বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়িতে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তার চিকিৎসার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল কোথায়? সবাইকে অবাক করে দিয়ে গতকাল মধ্যরাত্রে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দেন তিনি। মাত্র ৫৭ বছর বয়সে জীবনাবসান ঘটে তার। কিছু বোঝার আগেই তিনি সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ফেসবুকে খুব সক্রিয় ছিলেন। পরিবার অন্ত প্রাণ ছিলেন তিনি। নিজের স্ত্রী এবং ১২ বছরের কন্যাকে অপরিসীম ভালোবাসতেন তিনি। আজ তাঁর অকাল প্রয়াণে তার ফেসবুক পেজের একটি পোস্ট ভাইরাল হয়। প্রসঙ্গত সেই পৌঁছেছিল সোশ্যাল মিডিয়ার করা অভিনেতার শেষ কোনও পোস্ট। কি লিখেছিলেন তিনি সেই পোস্টে?
তার শেষ দুটি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন দেখা যাচ্ছে। যেখানে একটি পোস্টে তার মেয়েকে দোল খেলতে দেখা যাচ্ছে। রংয়ের আনন্দে মেতে উঠেছে সে। অনুরাগীদের মধ্যে কন্যা শায়নার দোল খেলার মুহূর্তের ছবি ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কে জানত দলের এক সপ্তাহের মধ্যে সকল সমীকরণ পাল্টে যাবে? রংয়ের উৎসবের কিছুদিনের মধ্যেই তার পরিবারের জীবনের সমস্ত রং বিবর্ণ হয়ে গেল।
আরো একটি পোস্টে তাকে একটি অলস রবিবারের বিকেলে বসে বিশ্রাম করতে দেখা যাচ্ছে। এই ছবিটি গত রবিবারের। যেখানে তিনি ক্যাপশনে লেখেন ‘লেজি কোজি সানডে।’
এখন তাকে সেরকম একটা সিনেমার পর্দায় দেখা যেত না। কিন্তু দর্শক দের কাছে তিনি চিরদিনই নতুন রূপে ধরা দিয়েছেন। সম্প্রতি তাকে শেষবারের জন্য দেখা গিয়েছিল খড়কুটো এবং মোহর ধারাবাহিকে। সেখানেও তার চরিত্র ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
কখনো কাজ থামিয়ে রাখেননি তিনি। চার দশকের সুদীর্ঘ অভিনয় যাত্রার একদিনও তাঁকে অভিনয় থেকে দূরে যেতে দেখা যায়নি। সবসময় শুটিং ফ্লোরের মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতেন। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এর প্রোডাকশন হাউস ম্যাজিক মোমেন্টের প্রযোজনায় স্টার জলসা দুই জনপ্রিয় ধারাবাহিক খড়কুটো এবং মোহরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। মৃত্যুর আগের দিনও তিনি খড়কুটোর শুটিং ফ্লোরে উপস্থিত হন।
মাত্র ৫৭ বছর বয়সেই এই প্রতিভাবান কিংবদন্তি শিল্পী ঘুমের দেশে চলে গেলেন। তার এই হঠাৎ চলে যাওয়ায় শোকস্তব্ধ পরিবার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব এবং টলিউডে তার সতীর্থরা। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। শুধু বিগত তিন চারদিন ধরে তার পেটের কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কি এমন হলো যে এত বড় একটি ঘটনা ঘটে গেল? সূত্রের খবর বুধবার সকালে একটি জনপ্রিয় চ্যানেলের রিয্যালিটি শোর শুটিং সারেন তিনি। সেখানে শুটিং এর মাঝেই অসুস্থ বোধ করেন তিনি। তড়িঘড়ি তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতলে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিলেও তিনি বাড়িতেই থাকতে চান। বুধবার মধ্যরাত্রে সম্ভবত কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে তার মৃত্যু ঘটে।