Hoop PlusTollywood

Abhishek-Sanjukta: স্বামীর মৃত্যুর পর এই প্রথম মুখ খুললেন অভিষেক পত্নী সংযুক্তা

অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee) নেই, দুই দিন হয়ে গেল। তিনি না থেকেও থেকে গেছেন সকলের স্মৃতিতে। তাঁর মৃত্যুতে শুটিং বন্ধ হয়নি। টলিউডে এই ঘটনা অত্যন্ত বিরল। ফলে কলাকূশলীদের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে। তাহলে কি রাজনীতি পুরোপুরি গ্রাস করে নিল শিল্পকে? কিন্তু যাঁকে ঘিরে এত স্মৃতিচারণ, এত প্রশ্ন, সেই অভিষেকের স্ত্রী সংযুক্তা (Sanjukta Chatterjee) স্তব্ধ। বারবার মনে হচ্ছে, কি করে থাকবেন অভিষেককে ছাড়া?

অভিষেকের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল ছিলেন সংযুক্তা। একটু বেশি বয়সেই বিয়ে করেছিলেন অভিষেক। ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট থেকে সংযুক্তার সঙ্গে আলাপ ও তারপর বিয়ে। ততদিনে ফিল্ম জগৎ থেকে অনেকটাই দূরে অভিষেক। তিন-চার ঘন্টা পুজো করতেন ঠাকুর ঘরে। বিয়ের পর থেকেই সংযুক্তা ও অভিষেক অবিচ্ছেদ্য। সংযুক্তার উপর জোর করে সংসারের সব দায়িত্ব চাপিয়ে দেননি অভিষেক। তাঁকে নিজের মতো করে বাঁচতে দিয়েছেন। বরং সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব, খাবারের যোগান, কি রান্না হবে, পুরোটাই দেখতেন অভিষেক। সংযুক্তা সামলাতেন সংসার খরচের দিক। সংযুক্তা প্রায়ই অন্যদের বিভিন্ন বৈবাহিক সমস্যার কথা শুনলেও কোনোদিন তাঁর সাথে অভিষেকের ঝগড়া হয়নি। দুজনের অদ্ভুত সমঝোতা ছিল। সংযুক্তার হাতে মাথা রেখেই অভিষেক চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সেই দৃশ্য বারবার হন্ট করছে সংযুক্তাকে।

সংযুক্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ‘খড়কুটো’-র সেটে অসুস্থ বোধ করছিলেন অভিষেক। সেট থেকে ফোন এসেছিল তাঁর কাছে, অভিষেককে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। সংযুক্তা দ্রুত স্টুডিওতে পৌঁছে দেখেন, অভিষেক থর থর করে কাঁপছেন। অভিষেকের ফুড পয়জনিং হয়েছিল। সংযুক্তা তাঁকে অ্যালার্জির ওষুধ দেওয়ার পর কাঁপুনি কমলেও বাড়ি যাওয়ার জন্য স্টুডিওর বাইরে আসতেই বমি করেছিলেন অভিষেক। এরপর একটু আরাম হলেও তাঁর দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা ছিল না। ব্লাড প্রেশার লেভেল ছিল নিম্নমুখী। এই কারণে সংযুক্তা পরের দিন ‘ইস্মার্ট জোড়ি’-র শুটিং ক্যানসেল করতে চাইলেও ডেটের প্রেশারের জন্য তা সম্ভব হয়নি।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Gallinews (@gallinews_com)

কিন্তু ‘ইস্মার্ট জোড়ি’- সেটে গিয়ে দাঁড়াতে পারছিলেন না অভিষেক। সেখানেও বমি করেছিলেন। মেকআপ রুমে শুয়ে ছিলেন তিনি। ‘ইস্মার্ট জোড়ি’-র সেট থেকে ডাক্তারের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা হলে তিনি অভিষেককে স্যালাইন দিতে বলেন। ডাক্তার অভিষেককে হাসপাতালে ভর্তি হতে বললে অভিষেক রাজি হননি। ফলে ঠিক করা হয়, তাঁকে বাড়িতেই স্যালাইন দেওয়া হবে। স্যালাইন দেওয়ার জন্য লোক বাড়িতে এলেও তাঁরা শিরা খুঁজে পাননি। ফলে তাঁরা পরের দিন সকালে স্যালাইন দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু বুধবার মধ্যরাত থেকেই অভিষেকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

সংযুক্তা লক্ষ্য করেন, অভিষেকের গ্যাস হচ্ছে। শারীরিক অস্বস্তি হচ্ছে। সংযুক্তার দেওয়া ওষুধ খেয়ে কিছুটা আরাম পেয়েছিলেন অভিষেক। এরপরই তিনি সিগারেট খেতে চান। কিন্তু হাত কাঁপছিল। ফলে সিগারেট ধরাতে পারছিলেন না। হাত থেকে সিগারেটটা পড়ে গিয়েছিল। সংযুক্তা সিগারেটটি তুলে নিজেই জ্বালিয়ে অভিষেককে দেন। কিন্তু ব্লো করতে পারেননি অভিষেক। এরপরেই খুব জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকেন অভিষেক। সংযুক্তা ভয় পেয়ে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকেন। তিনি বুঝতে পারছিলেন অভিষেকের কথা জড়িয়ে যাচ্ছে। সংযুক্তার হাতেই দম ছেড়ে দিচ্ছিলেন অভিষেক। শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি দেখে সংযুক্তা বুঝতে পেরেছিলেন, অভিষেক চলে যাচ্ছেন। যাওয়ার আগে জড়ানো শব্দেই তাঁর শেষ জিজ্ঞাসা ছিল একমাত্র কন্যাসন্তান ডল (Doll)-এর কথা। জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ডল ঠিক আছে কিনা!

 

View this post on Instagram

 

A post shared by KLiKK (@klikk.tv)

ডল তার বাবার নয়নের মণি ছিল। ডল শুত মা-বাবার কাছেই। ডলের ঘরটা অভিষেক নিজেই রেনোভেট করাচ্ছিলেন। এই কারণে ডল শুয়েছিল অন্য ঘরে। অভিষেক সকলের কথা শুনে হাসপাতালে ভর্তি হলে হয়তো ডলকে এত তাড়াতাড়ি পিতৃহারা হতে হত না। কিন্তু বুধবার রাতটা ডলকে এক লহমায় অনেকটাই বড় করে দিয়েছে। ভেঙে পড়া মাকে সামলাচ্ছে ডল। শিখে নিচ্ছে চোখের জল লুকাতেও। এখনও অনেক কাজ বাকি। অভিষেক চ্যাটার্জির উত্তরাধিকার ডলকে পূরণ করতে হবে বাবার স্বপ্ন।

Related Articles