দেখতে দেখতে ৮৫ র দোরগোড়ায় উত্তম যুগের নায়িকা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। ছোট থেকেই সংগ্রাম করা মানুষটি আজও অবিবাহিত। তার বার্ধক্যের সঙ্গী শুধু বই আর সেই শৈশবের সংগ্রাম অর্থাৎ অভিনয়। বর্তমানে তিনি ধারাবাহিকের চেনা মুখ। তিনি যেমন সুবর্ণলতার জাঁদরেল শাশুড়ি তেমনই জলনূপুর ধারাবাহিকের সোনা ঠাম্মা।
ছোট্ট অবস্থাতেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন। দিদির শ্বশুর বাড়িতেও মানুষ হন সাবিত্রী দেবী। কলকাতার বাড়িতে থাকতেন আশ্রিতা হিসেবে। তখনই নাচের অনুষ্ঠানে নাম দিতেন আর উপার্জনের অর্থ বাবাকে পাঠাতেন। একদিন পরিচয় হয় অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে। প্রথম নাটক তার হাত ধরেই করেন। এরপর প্রথম ছবি করেন উত্তম কুমারের সঙ্গে। সেই শুরু প্রেম। এক দেখতে ভালো লেগেছিল উত্তম কুমারকে। অবশ্য ভালো লাগবেই বা না কেন? হেন কোনো মহিলা নেই যার উত্তম কুমারকে পছন্দ নয়। মহানায়কের সঙ্গে ‘সহযাত্রী’ করে প্রথমবার বড় পর্দায় অভিষেক করেন নিজের।
এখনও পর্যন্ত তিনি উত্তম কুমারের সঙ্গে ছবি করেছেন ‘লাখ টাকা’, ‘কল্যাণী’, ‘অনুপমা’, ‘রাইকমল’, ‘নবজন্ম’, ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’, ‘রাজা সাজা’, ‘দুই ভাই’, ‘ভ্রান্তিবিলাস’, ‘মোমের আলো’, ‘নিশিপদ্ম’, ‘রাতভোর’, ‘উপহার’, ‘মৌচাক’ এবং ‘ধন্যি মেয়ে’-এর মতো বহু হিট সিনেমা।
প্রেম নিয়ে অকপট সাবিত্রী দেবী।। উত্তম কুমার যে তার প্রথম প্রেম তা সকলের সামনে বারংবার বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘আমার অনেক সম্বন্ধই ভেঙে দিয়েছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমার।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘আমার জীবনে কখনো প্রেম আসেনি, তা নয়; কিন্তু উত্তমকুমার আমার অনেক সম্বন্ধ ভেঙে দেন। উত্তমকুমার বরাবরই আমার প্রতি পজিটিভ ছিলেন। আমি কখনো চাইনি, কেউ সংসার ভেঙে আমার কাছে চলে আসুক। আমার কপালে যদি বিবাহিত পুরুষ জোটে, তবে কী করব? ভালোবাসব না? তবে উত্তমকুমারকে পাইনি বলে বিয়ে করিনি, তেমনটা নয়। বন্ধু অনেক ছিলেন। সবাই ছিলেন বিবাহিত। আর আমি কারও ঘর ভাঙতে চাইনি।’
বলতে গেলে একতরফা ভালোবাসাতেই মজে ছিলেন ও আছেন বরেণ্য অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়।