বয়স ৪৭, শ্বশুর-শাশুড়ি, স্বামী, সন্তান নিয়ে দিব্যি সংসার করছেন বিশ্ব সুন্দরী খেতাব জয়ী ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। বিয়ের আগেও মা-বাবার সঙ্গেই থাকতেন তিনি। এই চিত্র শুধুমাত্র ঐশ্বর্য রাইয়ের জন্য নয়। আপামর ভারতীয়দের এটাই রীতি। এই দেশে পিতা মাতাকে ঈশ্বরের স্থানে বসানো হয়। হ্যাঁ, এই দেশে এবং এই সংস্কৃতিতে “পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহি পরমং তপ, পিতোরি প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতা”।
আজও আমরা পরীক্ষা দিতে গেলে বা শুভ কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে পিতা মাতাকে নমস্কার করে নিই আগে। তাই বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে বাঁচার প্রবনতা আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে রয়েছে। যাইহোক ফিরে আসি ঐশ্বর্য প্রসঙ্গে। একবার এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বর্যকে বিখ্যাত সঞ্চালক ডেভিড লেটারম্যান এর মুখোমুখি হয়েছিলেন।
সালটা খুব সম্ভবত ২০০৪। তিনি বহু শো সঞ্চালনা করেছেন, তবে ‘David Letterman’s talk show’ নামক একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন ঐশ্বর্য রাই। ‘ব্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ (Bride and Prejudice) মুভির প্রচারের জন্য সম্ভবত তিনি সেই টক শো তে হাজিরা দিয়েছিলেন। কারণ এই সিনেমাটি ২০০৪ এ ইউ কে এবং ইউনাইটেড স্টেটস এ রিলিজ করে, সেহেতু ঐশ্বর্য উপস্থিত ছিলেন ওই শোয়ে। সেখানেই এক মজার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় বিশ্ব সুন্দরীকে।
২০০৪ এ ঐশ্বর্য তখনও বিয়ে করেননি অভিষেককে, ফলত মা বাবার সঙ্গেই থাকতেন তিনি। ঠিক এই প্রসঙ্গ নিয়েই ডেভিড লেটারম্যান ঐশ্বর্যকে জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি এখন একজন অ্যাডাল্ট, এরপরেও কেন মা-বাবার সঙ্গে থাকেন তিনি? এমনকি ভারতীয় কালচারে এটা কি খুব সাধারণ ব্যপার এই নিয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেন সঞ্চালক।
আসলে বিদেশে একটা সন্তান খানিকটা বড় হয়ে গেলেই মা-বাবার কোল, আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে যান। মা-বাবার থেকে দূরে থাকতে থাকতে তাঁদের মধ্যে স্বাধীনতার পাশাপাশি এক নিঃসঙ্গতা কাজ করে। স্বাধীনতা আর স্বেছাচারিতার মধ্যে যে এক বিরাট দেওয়াল আছে তা তাঁরা দেখতে পারে না। এমনকি অনেকেই বৈবাহিক জীবনেও সুখী নন। একাধিক বিয়ে সন্তানে জেরবার পাশ্চাত্য সংস্কৃতির দেশগুলি। সেখানে দাড়িয়ে ভারতের মেয়ের মুখে এমন উত্তর শোনা সত্যি গর্বের ব্যপার।
ঐশ্বর্য গর্বের সঙ্গে জানিয়েছিলেন যে তিনি তাঁর মা বাবার সঙ্গেই থাকেন এবং এর জন্য তাঁকে ডিনারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয় না। নিছক মজা করেই উত্তর দিয়েছেন রাই সুন্দরী। কিন্তু কথাটি একশো শতাংশ সত্যি। বিদেশে যেমন ‘ডেট’ শব্দের খুব প্রচলন আছে। গার্লফ্রেন্ড হোক বা বাবা মায়ের সঙ্গে ডিনার সবটাই ওই ‘ডেটে’ চলে। এই যেমন ‘ডিনার ডেট’ আরও অনেক শব্দ। যাইহোক, চলুন দেখে নিই ঐশ্বর্যর উত্তর ২০০৪ এর ভিডিও ক্লিপিংস থেকে। এছাড়াও এই পুরনো ভিডিও বেশ ভাইরালও হয়েছে এত বছর পরেও।
View this post on Instagram