Reality show

‘সারেগামাপা’-য় আসতে চাননি অ্যালবার্ট কাবো, জেতার পর এ কেমন কথা প্রতিযোগীর মুখে!

সন্তানশোক কখনও পূর্ণ হওয়ার নয়। আজীবন অকালে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া সন্তানের স্মৃতি মা-বাবা হৃদয়ে ধারণ করে থাকেন। কালিম্পং-এর বাসিন্দা অ্যালবার্ট কাবো (Albert Kaboo) গত জুলাই মাসে হারিয়েছেন তাঁর আট মাসের শিশুকন্যাকে। জি বাংলার সিঙ্গিং রিয়েলিটি শো ‘সারেগামাপা’-র পর অ্যালবার্ট ও তাঁর স্ত্রী পূজা ছেত্রী (Puja Chetri) তাঁদের একমাত্র শিশুকন্যার হার্টের সমস্যার চিকিৎসার জন্য কলকাতায় ছিলেন। এছাড়াও ভারতবর্ষের বহু শিশু বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করেছিলেন তাঁরা। সেই সময় মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রচুর শো করতেন অ্যালবার্ট। শেষ রক্ষা হয় নি। মা-বাবাকে ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেয় ছোট্ট ইভলিন (Evelyn)। ফেসবুকের মাধ্যমে অ্যালবার্ট এই দুঃসংবাদ জানিয়েছিলেন অনুরাগীদের।

এরপর একরকম গান গাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন অ্যালবার্ট। বাড়িতে থাকতেন। মেয়েকে হারিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন অ্যালবার্ট ও পূজা। ইভলিনকে ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা। ফলে গান ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন ইভলিনের কন্যাহারা পিতা। কিন্তু মাতৃত্বের শক্তি আলাদা। ইভলিনের বাবাকে ঘুরে দাঁড়াতে অনুপ্রেরণার যোগান দিয়েছিলেন কন্যাহারা মা। শোকে বিপর্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও পূজা তাঁর স্বামীকে বলেন, উঠে দাঁড়াতে হবে। যেতে হবে সর্বভারতীয় স্তরের ‘সারেগামাপা’-য়। অ্যালবার্ট বলেছিলেন, পারবেন না তিনি। মন বসছিল না গানে। পূজা দিয়েছিলেন ইভলিনের দিব্যি। কন্যাহারা পিতা অ্যালবার্ট ইভলিনের মায়ের অনুরোধ ফেরাতে।

কখনও গান শেখেননি অ্যালবার্ট। কালিম্পং-এর বাসিন্দা অ্যালবার্টের মাতৃভাষা নেপালি হওয়ার কারণে প্রথম দিকে হিন্দি উচ্চারণে সমস্যা হত। কিন্তু হার্ডওয়ার্কের মাধ্যমে এই সমস্যা বর্তমানে অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন অ্যালবার্ট। তৈরি করেছেন ইতিহাস। হাতে উঠেছে জি টিভির ‘সারেগামাপা’-র বিজয়ীর ট্রফি। মুম্বই থেকে সোমবার রাতে কালিম্পং ফিরতেই বাগডোগরা এয়ারপোর্টে নেমেছিল জনতার ঢল। একবার সকলে দেখা পেতে চেয়েছিলেন কালিম্পং-এর ভূমিপুত্রের।

কিন্তু মঙ্গলবার সকালে অ্যালবার্ট ও পূজা ছুটে গিয়েছিলেন ইভলিনের সমাধিস্থলে। মুম্বই গিয়ে আবারও নতুন সফর শুরু করবেন তার মা-বাবা। তারাদের দেশ থেকে তাঁদের শক্তি যুগিয়ে যাবে এক ছোট্ট পরী যার নাম ইভলিন।

Related Articles