গায়ক-সুরকার এ.আর.রহমান (A.R.Rahman)-এর খ্যাতি বিশ্বজোড়া। প্রায় সমস্ত গায়ক-গায়িকাদের স্বপ্ন তাঁর সুরে গাওয়া। অথচ এ.আর.রহমানের প্রস্তাব একসময় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অলকা ইয়াগনিক (Alka Yagnik)।
একটি সাক্ষাৎকারে অলকা জানিয়েছেন, একদিন তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি বলেন, তিনি এক নতুন সরকারের পক্ষ থেকে কথা বলছেন। ওই ব্যক্তি কুমার শানু (Kumar Shanu) ও অলকা ইয়াগনিককে চেন্নাই-এ আসার অনুরোধ করেন। তিনি জানান ওই নতুন সুরকারের নাম এ.আর.রহমান ও তিনি যে ফিল্মের জন্য মিউজিক কম্পোজ করছেন, তার নাম ‘রোজা’। অলকা ও কুমার শানু পরের দিনই চেন্নাই চলে আসতে বলা হয়। কিন্তু সেই সময় তাঁরা দুজনেই অত্যন্ত ব্যস্ত গায়ক-গায়িকা ছিলেন। প্রায় প্রতিদিনই থাকত তাঁদের রেকর্ডিং। ফলে পরের দিন তাঁদের পক্ষে চেন্নাই রওনা হওয়া সম্ভব ছিল না।
View this post on Instagram
অপরদিকে অলকার মনে প্রশ্ন জেগেছিল নতুন সুরকারের সঙ্গীত প্রতিভা সম্পর্কেও। একই কথা মনে করেছিলেন কুমার শানুও। অলকা তাঁকে ফোন করলে তিনিও নিজের ব্যস্ততার কথা জানান। দুজনেই সেদিন এ.আর.রহমানকে তাচ্ছিল্য করে চেন্নাই যেতে চাননি। আজও অলকার মনে আফশোস হয় যখন তিনি ‘রোজা’-র গান শোনেন। পরবর্তীকালে অলকা যখন এ.আর.রহমানের সুরে গান গেয়েছিলেন, রহমান তখন অলকাকে বলেন, তিনি একসময় রহমানের সুরে গান গাইতে চাননি।
‘তাল’ ফিল্মের সময়েও ঘটতে চলেছিল এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। অলকা বাড়িতে ছিলেন না। সুভাষ ঘাই (Subhash Ghai) অলকার মাকে ফোন করে ওই রাতেই অলকাকে চেন্নাই আসতে বলেন। কারণ গান রেকর্ড করতে হবে। অলকা বাড়ি ফিরলেন তাঁর মা তাঁকে এই কথা জানান। কিন্তু অলকা বলেন, তিনি ক্লান্ত। চেন্নাই গিয়ে গান রেকর্ড করতে পারবেন না। তাঁর মা সুভাষ ঘাইকে এই কথা বলার পর তিনি চমকে গিয়ে বলেন, অলকা জানেন না, তিনি কি করছেন! সুভাষ অলকার মাকে বলেন, অলকাকে চেন্নাই পাঠাতে। এই গানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গানটি অলকা না গাইলে পরবর্তীকালে তাঁর আফশোসের সীমা থাকবে না।
অলকাও বুঝতে পারলেন, সুভাষের কথার অন্যথা করা ঠিক হবে না। চেন্নাই গিয়ে গান রেকর্ড করলেন তিনি। মধ্যরাতে রেকর্ড হল অলকার কন্ঠে ‘তাল’ ফিল্মের টাইটেল সঙ। অলকার প্রথমদিকে ঘুম পেলেও গানটি শুনে তাঁর অত্যন্ত ভালো লেগেছিল। ঘুম কেটে গিয়েছিল। গানটি অত্যন্ত হিট হয়েছিল। ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন অলকা। সুভাষ ঘাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন তিনি।
View this post on Instagram