জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগীদের হাসপাতলে পৌঁছে দিচ্ছেন ২৩ বছরের রনো
দেশজুড়ে যখন গণ চিতা জ্বলছে ঠিক সেই মুহূর্তে এক যুবকের খোঁজ পাওয়া গেল, তিনি পেশায় একজন সামান্য অ্যাম্বুলেন্স চালক। কিন্তু তিনি সমাজের জন্য যা করছেন তাকে আর সামান্য বলা চলেনা, তিনি তার এই পেশাকে এখন সমাজের উদ্দেশ্যে সেবা হিসাবে কাজে লাগিয়েছেন বর্তমান সমাজের কাছে তিনি আর একজন সামান্য অ্যাম্বুলেন্স চালক নয় তিনি একজন সুপারহিরোর তকমা পেয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভারতবর্ষকে একেবারে দুমড়েমুচড়ে শেষ করে দিয়েছে এক নিমেষে মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে অনেকটাই। গতবছরের জের কাটতে না কাটতেই আবার ভারতবর্ষের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। টিভির পর্দা, সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই দেখা যাচ্ছে কি চারিদিকে অরাজকতা। হসপিটাল গুলোতে জায়গা নেই, অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মরতে বসেছে। মানুষ মারা গেলে শবদেহ বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতন একটা মানুষ নেই। এই রকম পরিস্থিতিতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে এসেছে এক যুবক।
যুবকের ভালো নাম রনো সরকার। বয়স মাত্র ২৩ বছর। পেশায় তিনি একটি ওষুধের দোকানের সামান্য একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক। গতবছর ওই রকম পরিস্থিতিতে তিনি ১৫২ জন পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলার এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছিলেন নিজের গাড়ি করে। সেই অর্থে পুরোপুরি পুঁথিগত বিদ্যা তার নেই। ইলেভেন ক্লাস পাস করার পরই তার পড়া বন্ধ হয়ে যায়। ছোট বেলায় মা বাবা দুজনেই মারা গিয়েছিলেন। তিনি, দাদা বড় হন দিদার কাছে। একটা সময় ভিক্ষা করে ও নিজেদের পেট চালাতে হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীকালে দিদা মারা যাওয়ার পর তিনি ভেবেই নেন যে আর এইভাবে থাকা যাবেনা। এবার রোজগার করতে হবে। তখন অ্যাম্বুলেন্সের চালক হিসেবে তিনি তার পেশাগত জীবন শুরু করেন। রনোর ডাকনাম সোনু। তাই অনেকেই মজা করে বলেন দেশ সোনু সুদের কথাই শুধু জানে কিন্তু তাদের কাছে তাদের সোনুই সব।
এই কয়েকদিনের মধ্যে ১৭ জন কোভিড আক্রান্ত মানুষকে হাসপাতালে না হলে টেস্ট করানোর জন্য তিনি তার অ্যাম্বুলেন্স ছুটিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। এই সমস্ত মানুষদের কথা সোশ্যাল মিডিয়া মারফত অনেক অনেক শেয়ার হওয়া উচিত। কারণ এই পরিস্থিতিতে যখন অনেককেই দেখা যাচ্ছে, মুখ ফিরিয়ে নিতে, তখন এই ২৩ বছরের যুবক প্রত্যেকের মন ছুয়ে যাচ্ছেন তার কাজ দিয়ে। তাই তাকে স্যালুট জানাতে হয়।