Bengali SerialHoop Plus

বাস্তব জীবনে কতখানি সুখী ‘এক্কা দোক্কা’-র অঙ্কিতা!

‘এখানে আকাশ নীল’-এর হিয়ার চরিত্র অপরাজিতা ঘোষ দাস (Aparajita Ghosh Das)-এর কাছে একটি মাইলস্টোন। তাঁর বিপরীতে উজানের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ঋষি কৌশিক (Rishi Koushik)। সকলেই মনে করতেন বাস্তবেও তাঁরা বিবাহিত। তবে সেই সময় অফস্ক্রিন ঋত্বিক চক্রবর্তী (Ritwick Chakraborty)-র সাথে সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন অপরাজিতা। প্রেম নয়, নিখাদ বন্ধুত্ব পরিণত হয়েছিল দাম্পত্যে। সব ধরনের মাধ্যমেই সমান ভাবে সক্রিয় অপরাজিতা। টেলিভিশনের পাশাপাশি ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজেও অভিনয় করে চলেছেন তিনি। বর্তমানে ‘এক্কা দোক্কা’-য় অভিনয় করছেন অপরাজিতা। এই ধারাবাহিকে অভিনয় করতে করতেই বাংলা ওয়েব সিরিজ ‘হোম স্টে মার্ডার’-এ অভিনয় করেছেন অপরাজিতা।

অপরাজিতা জানালেন, ‘কুসুম দোলা’-য় অভিনয় করার সময়েও তিনি ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’-র শুটিং করেছিলেন। কেরিয়ারে ভারসাম্য বজায় রাখতে জানেন অপরাজিতা। তবে একবার বিরতি নিতেই হয়েছিল। কারণ অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন তিনি। চটজলদি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অপরাজিতা। সন্তানের দায়িত্ব পূর্ণ রূপে পালন করেছেন তিনি। করোনার সময় সচেতন ভাবেই অপরাজিতা কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কারণ তাঁর পরিবারে রয়েছেন বয়স্ক মা-বাবা ও শিশু সন্তান। স্বাভাবিক ভাবেই সংক্রমণের ভয় ছিল যথেষ্ট। এই কারণে বাড়ি থেকে না বেরোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অপরাজিতা। কিন্তু তিনি জানালেন, এই সিদ্ধান্ত তিনি নিতে পেরেছিলেন কারণ তাঁর আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য রয়েছে। এই কারণে ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ অপরাজিতা।

সন্তানের জন্মের পর অপরাজিতার ওজন বেড়ে প্রায় বিরাশি কিলো হয়ে গিয়েছিল। তবে হেলদি ওয়েতে ওজন কমিয়েছেন অপরাজিতা। ইংরাজিতে স্নাতক হওয়ার পর সাংবাদিকতা নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা শেষ করে সাংবাদিকতা করার কথা ভেবেছিলেন অপরাজিতা। চাকরি খোঁজার ইচ্ছা ছিল ‘একদিন প্রতিদিন’ শেষ হলেই। আসলে অভিনয়কে পেশা করার কথা ভাবেননি অপরাজিতা। মাত্র তেইশ দিন একটি মিডিয়া হাউসে চাকরি করেছিলেন তিনি। কিন্তু ওই হাউসের হাবভাব তাঁর সন্দেহজনক লাগতে শুরূ করে। চাকরিটা ছেড়ে দেন অপরাজিতা। ঘটনাচক্রে সেই সময় ‘ইতি শ্রীকান্ত’-য় অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Khas Khobor (@khaskhobor2020)

যখন কাজ শুরু করেছিলেন, তখন ক্যামেরার সেন্স ছিল না। ঋতা দত্ত চক্রবর্তী (Rita Dutta Chakraborty), বৈশাখী মার্জিত (Baishakhi Marjit)-দের সাথে অভিনয়ের শুরু। অপরাজিতা ভুল করলে তাঁদের মুখ দেখেই বুঝতে পারতেন। ভুল করতে করতেই অভিনয় শিখেছিলেন অপরাজিতা। অভিনয়কেই ভালোবেসে ফেলেছেন তিনি। তবে অপরাজিতা মনে করেন, মানুষের জীবনে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। ফলে প্রলোভন থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। অভিনেত্রী হিসাবে দর্শকদের ভালোবাসা পেয়েছেন অপরাজিতা। তবে উচ্চাকাঙ্খা নেই তাঁর।

‘এখানে আকাশ নীল’-এ হিয়ার চরিত্র এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল, ঋত্বিকের সাথে বিয়ের পর ভিডিওতে লেখা ছিল ‘ঋত্বিক ওয়েডস হিয়া’। তবে এই জনপ্রিয়তার কৃতিত্ব পুরো টিমকেই দিতে চান অপরাজিতা। তবে বর্তমানে চ্যানেলের টার্গেট অডিয়েন্স বদলে গিয়েছে বলে মনে করেন অপরাজিতা। বিয়ের পর সংসারের জন্য তাঁকে কাজ কমিয়ে দিতে হয়নি। যে বছর অপরাজিতার বিয়ে হয়েছিল, সেই বছর ‘চেক মেট’-এ অভিনয় করেছিলেন। সঞ্চালনা করেছিলেন রান্নার শো। কিন্তু সন্তানের জন্মের পর কাজ থেকে বিরতি নিয়েছিলেন অপরাজিতা।

কোভিড পরবর্তী সময়ে নয় বছরের পুত্রসন্তানের হাতে ফোন তুলে দেওয়ার কথা ভাবতে পারেন না অপরাজিতা। সপ্তাহে একদিন ল্যাপটপে ফিল্ম দেখার অনুমতি দিয়েছেন। এছাড়াও তাঁর ছেলে বই পড়ে, গান শোনে বলে জানালেন অপরাজিতা। বিবাহ বিচ্ছেদের যুগেও ঋত্বিকের সাথে অটুট অপরাজিতার সম্পর্ক। অপরাজিতা মনে করেন, সম্পর্কের মধ্যে সততাই শেষ কথা। ভালো বাবা ও ভালো স্বামী হওয়ার পাশাপাশি ঋত্বিক তাঁর খুব ভালো বন্ধু।

বিদেশ নয়, দেশের মধ্যেই ঘুরতে পছন্দ করেন এই সেলেব জুটি। বিয়ের পর হানিমুনে বোলপুর গিয়েছিলেন অপরাজিতা ও ঋত্বিক। উত্তরাখন্ডের কুমায়ুন, মুন্সিয়ারির মতো স্থান তাঁদের বিশেষ পছন্দের বলে জানালেন অপরাজিতা। তবে শর্ট ট্রিপের জন্য ঝাড়খণ্ড তাঁদের কাছে বেস্ট।

whatsapp logo