করোনা অতিমারীর কারণে সমগ্র ভারতবর্ষ বিপর্যস্ত। অক্সিজেনের সঙ্কট সত্ত্বেও কোথাও অক্সিজেন নিয়ে চলছে কালোবাজারি। কোথাও চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হচ্ছে করোনা আক্রান্তের। এমতাবস্থায় গ্রাম-গঞ্জের হাসপাতালগুলির চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে এগিয়ে এলেন অরিজিৎ সিং (arijit singh)।
গ্রামের হাসপাতালগুলির চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়ন করতে একটি অনলাইন কনসার্টের আয়োজন করেছেন অরিজিৎ। এই অনলাইন কনসার্ট থেকে প্রাপ্ত অর্থের পুরোটাই অরিজিৎ গ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন খাতে দান করবেন বলে জানা গেছে। অরিজিৎ জানিয়েছেন, সংগৃহীত টাকায় তিনি গ্রামের হাসপাতালগুলির জন্য এমআরআই, সিটি স্ক্যানের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি কিনতে চান বলে জানিয়েছেন অরিজিৎ। অনুরাগীদের কাছে সাধ্য মতো পাশে থাকার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। 6 ই জুন রাত আটটায় ফেসবুকে অরিজিৎ-এর এই লাইভ কনসার্ট দেখা যাবে।
View this post on Instagram
কিছুদিন আগেই মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে পাঁচটি হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন থেরাপি মেশিন দান করেছেন অরিজিৎ। যাতে সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পান করোনা রোগীরা, সেই কারণেই অক্সিজেন থেরাপি মেশিনগুলি দান করেছেন অরিজিৎ। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের ‘ধৃতি ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে মুর্শিদাবাদ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক প্রশান্ত বিশ্বাস (prashanta biswas)-এর হাতে হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মেশিনগুলি তুলে দিয়েছেন অরিজিৎ। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধীনে থাকা সরকারী হাসপাতালের করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এই অক্সিজেন মেশিনগুলি ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে। অরিজিৎ-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক প্রশান্ত বিশ্বাস।
সম্প্রতি করোনায় মৃত্যু হয়েছে অরিজিৎ-এর মা অদিতি সিং (Aditi singh)-এর। অদিতির করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন অদিতি। প্রথমে জিয়াগঞ্জের একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চললেও পরবর্তীকালে তাঁকে ঢাকুরিয়ার আমরি হসপিটালে ভর্তি করা হয়। অদিতির শরীরে প্লেটলেটের সংখ্যা নিম্নমুখী হয়ে গিয়েছিল। অদিতির জন্য বিরল এ নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন ছিল। প্রয়োজন ছিল পুরুষ রক্তদাতার।
অরিজিৎ-এর মা অদিতির জন্য রক্তদাতা চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন স্বস্তিকা মুখার্জী (Swastika mukherjee) ও সৃজিত মুখার্জী (srijit Mukherjee)। স্বস্তিকা ও সৃজিতের পোস্ট দেখে অনেকেই রক্ত দিতে এগিয়ে এসেছিলেন। তরুণ ব্যবসায়ী প্রতীক (pratik) অদিতিকে রক্তদান করেন। কিন্তু অদিতি করোনামুক্ত হওয়ার পরেই তাঁর সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়। মৃত্যু হয় অদিতির। 20 শে মে অদিতির মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় তাঁর পরিবারের হাতে। মায়ের সৎকারের পর অরিজিৎ মুর্শিদাবাদের করোনা রোগীদের পাশে দাঁড়ান। তাঁদের চিকিৎসায় যেন কোনো খামতি না থাকে, নিরন্তর সেই প্রচেষ্টাই করে চলেছেন অরিজিৎ।