কয়েক মাস ধরে পরীমণি (Porimoni) -কে নিয়ে উত্তাল হয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এবার আরও এক বিখ্যাত অভিনেত্রী মাহিয়া মাহী (Mahiya Mahi) উঠে এলেন খবরের শিরোনামে। গত রবিবার রাতে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে যাতে শোনা যাচ্ছে, মাহিয়ার সাথে ফোনে অশ্লীল ভাষায় কথা বলছেন বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান (Murad Hassan)।
মুরাদ মাহিয়াকে জোর করে হোটেলে আসতে বলছিলেন। এমনকি পুলিশ দিয়ে জোর করে তুলে আনানোর হুমকি, ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছিলেন। মুরাদের এই অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার পর প্রতিবাদে ফেটে পড়েছেন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবি মহল। ইতিমধ্যেই মুরাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। অডিও ক্লিপ ফাঁসের কয়েক দিন আগে বাংলাদেশের বিরোধী দলনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া (Begum Khaleda Jiya)-র পরিবারের এক সদস্যার বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছিলেন মুরাদ। এমনকি মুরাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কেও অশালীন মন্তব্য করেছেন। সেখানকার ছাত্রীদের পাঁচতারা হোটেলের ‘এসকর্ট’ বলতেও বাধেনি মুরাদের।
আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকে অপসারণের পাশাপাশি মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Haseena)। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে মুরাদকে। মুরাদ এই মুহূর্তে ক্ষমা চাইলেও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের লেখিকা সেলিনা হোসেন মুরাদের কঠিন আইনি শাস্তি চেয়েছেন। অভিনেত্রী তারানা হালিম (Tarana Halim)-ও এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন।
কিন্তু তার পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে গত দুই বছর ধরে মহিলাদের উদ্দেশ্যে অবমাননাকর কথা বলেও কিভাবে সরকারে টিকে ছিলেন মুরাদ? বাংলাদেশের তরুণ নাট্যনির্মাতা ও চলচ্চিত্রকার আশফাক নিপুণ (Ashfak Nipun), আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তাফা সরিয়ার ফারুকি (Mostafa Sariar Faruqi), লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Tasleem Nasrin) মুরাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপটি দুই বছর আগের। এই ক্লিপের সত্যতা স্বীকার করে বাংলাদেশের নায়ক ইমন (Imon) জানিয়েছেন, দুই বছর আগে বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় সহশিল্পী মাহিয়া ও অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে আপকামিং ফিল্মের ব্যাপারে মিটিং করছিলেন। সেই সময় ফোনটি আসে ইমনের ফোনে। মুরাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তিনিই মাহিয়াকে ফোনটি এগিয়ে দেওয়ার সময় মুরাদ মাহিয়াকে অশ্লীল কথাগুলি বলেন। কিন্তু সেই সময় ফোনটি স্পিকারে না থাকার ফলে ইমন ঘটনার কিছু জানতে পারেননি। এই মুহূর্তে পুরো ঘটনাটি জেনে তিনি স্তম্ভিত। অপরদিকে মাহিয়া এই মুহূর্তে রয়েছেন মক্কায়। তাঁর মনে হচ্ছে, এই ঘটনায় তিনি নিজের কাছে ছোট হয়েছেন। উপরন্তু দেশবাসীর কাছে তাঁর সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে গিয়েছে। ঈশ্বরের উপর ভরসা রেখেছিলেন তিনি।
তবে দেশে ফিরে কিছুক্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান মাহিয়া। এরপরেই জানা যাবে, তিনি কোন ভয়ে এতদিন চুপ ছিলেন।
View this post on Instagram