করোনায় প্রয়াত হলেন ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ‘সালাম সালাম, হাজার সালাম’ জনপ্রিয় গানের সুরকার
করোনার বেলাগাম ঢেউ ক্রমশ ছিনিয়ে নিচ্ছে একের পর এক কিংবদন্তীকে। গত বছর করোনায় আক্রান্ত হয়ে আনুষঙ্গিক সমস্যার জন্য প্রয়াত হয়েছিলেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (soumitra chatterjee)। চলতি বছরের শুরুর দিকে চলে গেছেন সুরকার শ্রাবণ রাঠোর (shravan Rathod)। এবার করোনা কেড়ে নিল আরও এক কিংবদন্তী গীতিকার ফজল-এ-খোদা (Fazal-e-khoda)-কে।
4 ঠা জুলাই ভোর চারটে নাগাদ বাংলাদেশের ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রয়াত হলেন একাশি বছর বয়সী গীতিকার ফজল-এ-খোদা। দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন ফজল-এ-খোদা। ডায়াবেটিসের ফলে দেখা দিয়েছিল কিডনির সমস্যাও। উপরন্তু করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ফলে তাঁর এই সমস্যাগুলি আরও বেড়ে গিয়ে মাল্টি-অর্গ্যান ফেলিওর-এর ফলে মৃত্যু হয় কিংবদন্তী গীতিকারের। তাঁর পুত্র সজীব ওনাসিস (sajib onasis) বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ করেছেন।
1941 সালের 9 ই মার্চ পাবনার বেড়া থানার বনগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফজল-এ-খোদা। 1963 সালে বেতারের গীতিকার হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। 1964 সালে টেলিভিশনে গীতিকার হিসাবে কাজ শুরু করেন ফজল-এ-খোদা। ঢাকা বেতারে তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শিশু-কিশোরদের সংগঠন ‘শাপলা-শালুকের আসর’।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ফজল-এ-খোদার লেখা ও আব্দুল জব্বার (Abdul jabbar)-এর গাওয়া গান ‘সালাম সালাম, হাজার সালাম’ বাংলাদেশে বিখ্যাত হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ উজ্জীবিত হয়েছিলেন এই গানে। এই গানটি বিবিসির সমীক্ষায় সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কুড়িটি গানের মধ্যে বারো নম্বর স্থানে ছিল যা বাংলাদেশের সঙ্গীত ও বিনোদন জগতের পক্ষে অত্যন্ত গৌরবজনক।
এছাড়াও তাঁর লেখা ‘ভালোবাসার মূল্য কত’, ‘যে দেশেতে শাপলা-শালুক ঝিলিক জলে ভাসে’, ‘কলসি কাঁখে ঘাটে যায় কোন রূপসী’, ‘প্রেমের এক নাম জীবন’-এর মতো একাধিক গান জনপ্রিয় হয়েছিল। গ্রন্থকার হিসাবেও ফজল-এ-খোদার অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর লেখা দশটি ছড়াগ্রন্থ, পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ সহ মোট তেত্রিশটি বই প্রকাশিত হয়েছে।