whatsapp channel

Bollywood: ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছিল যে সিনেমাগুলি

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি জন্মলগ্ন থেকেই বিতর্কিত। হিমাংশু রাই (Himangsu Rai), দেবিকা রানী (Devika Rani) থেকে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল তা আজও অব্যাহত। তবে তখন অত্যন্ত কম সংখ্যক মানুষ হিন্দি বায়োস্কোপ দেখতেন…

Avatar

Advertisements
Advertisements

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি জন্মলগ্ন থেকেই বিতর্কিত। হিমাংশু রাই (Himangsu Rai), দেবিকা রানী (Devika Rani) থেকে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল তা আজও অব্যাহত। তবে তখন অত্যন্ত কম সংখ্যক মানুষ হিন্দি বায়োস্কোপ দেখতেন বলে বয়কট করা হয়নি দেবিকা রানী অভিনীত ফিল্ম ‘কর্মা’-কে। 1934 সালে নির্মিত এই ফিল্মে লিপলক কিস করেছিলেন দেবিকা রানী। কিন্তু ইদানিং কালে ফিল্ম বয়কটের ডাক যেন ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে হিন্দি ফিল্মের ইতিহাসে বেশ কয়েকটি আইকনিক ফিল্ম রয়েছে যা ব্যান করা হয়েছিল। কারণ? সামাজিক সমস্যা পুরুষ অবলীলায় তুলে ধরতে পারেন। কিন্তু মেয়েদের জন্য তা নিষিদ্ধ।

Advertisements

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Debarati Gupta (@kino_krazy)

Advertisements

অন্তত সীমা বিশ্বাস (Sima Biswas) অভিনীত ‘ব্যান্ডিট কুইন’ ব্যান হওয়ার পর এই কথাই মনে হয়েছিল। শেখর কাপুর (Shekhar Kapoor) পরিচালিত ‘ব্যান্ডিট কুইন’ ছিল ফুলন দেবী (Fulan Devi)-র বায়োপিক। দলিত মেয়ে ফুলনকে নৃশংস ধর্ষণ করা হয়েছিল। বারবার অত্যাচারিত হতে হতে একসময় নিজের দল গঠন করেন ফুলন। পরিচিত হন দস্যুরানি নামে। পরবর্তীকালে ফুলন আত্মসমর্পণ করেছিলেন। সম্পূর্ণ ঘটনাটি তুলে ধরা হয়েছিল ‘ব্যান্ডিট কুইন’-এ। এই ফিল্মে বিশেষ একটি দৃশ্য ছিল যা ফুলনের জীবনে বাস্তবিক ঘটেছিল। ফুলনকে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় গ্রামের কুয়ো থেকে জল আনতে বাধ্য করেছিল ওই গ্রামের উচ্চবর্ণ। ফুলন থেকে দস্যুরানি হয়ে ওঠার কাহিনীতে এই ঘটনা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেখর এই দৃশ্যগ্রহণ করেছিলেন। চিত্রনাট্য মেনে নগ্ন হয়েছিলেন সীমা। কিন্তু দেশ জুড়ে এই দৃশ্যের ফলে ফিল্মটি বয়কট করার ডাক দেওয়া হয়। গুরুত্ব না বুঝেই ওই দৃশ্যকে সেন্সরড করা হয়। সীমাকে বলতে বাধ্য করা হয়, ওই দৃশ্যের নগ্ন মহিলা তাঁর বডি ডাবল। 1994 সালে কিছুদিন প্রেক্ষাগৃহে চলার পর ফিল্মটি সাময়িক ভাবে ব্যান করা হয়েছিল। তবে পরবর্তীকালে বহু টিভি চ্যানেলে এই ফিল্মটি দেখানো হয়েছে। ‘ব্যান্ডিট কুইন’ স্থান পেয়েছে ওটিটিতেও। তবে ওই দৃশ্যটি সেন্সরড হয়েই রয়ে গিয়েছে, ঠিক সেই ভাবে যেভাবে সমাজ সেন্সরড করেছে হাথরসকে।

Advertisements

Advertisements

1996 সালে মুক্তি পায় দীপা মেহতা (Deepa Mehta) পরিচালিত ফিল্ম ‘ফায়ার’। নন্দিতা দাশ (Nandita Das) ও শাবানা আজমি (Shabana Azmi)অভিনীত ‘ফায়ার’ কার্যতঃ আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল গোটা দেশে। নারীর সমকামিতা ছিল এই ফিল্মের বিষয়। মহারাষ্ট্রে বিক্ষোভ শুরু করে শিবসেনা। ভারতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেন্সর বোর্ড সেই সময় ‘ফায়ার’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও পরবর্তীকালে ওটিটিতে এই ফিল্ম দেখা যাচ্ছে।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Rio Cinema (@riocinema)

1996 সালেই নির্মিত হয়েছিল ‘কামসূত্র :দ্য টেল অফ লাভ’। ষোড়শ শতকের ভারতে গণিকা হয়ে ওঠার কাহিনী নিয়ে তৈরি হয়েছিল এই ফিল্ম। পরিচালনা করেছিলেন মীরা নায়ার (Mira Nair)। এই ফিল্মের আকর্ষণ ছিলেন রেখা (Rekha)। সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হলেও ‘কামসূত্র : আ টেল অফ লাভ’ দেখে সেন্সর বোর্ডের মনে হল এটি অত্যন্ত অশ্লীল ফিল্ম। ফলে এই ফিল্মকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে একবিংশ শতকের শুরুতে এই ফিল্মটি ইউটিউবে দেখা যাচ্ছিল। পরবর্তীকালে ইউটিউবে কেবলমাত্র ফিল্মের কয়েকটি দৃশ্য ছাড়া আর কিছুর অস্তিত্ব নেই। তবু ভারতের মাটিতে এখনও খাজুরাহো দাঁড়িয়ে। ভাবা যায়?

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Posterphilia (@posterphilia)

2005 সালে নির্মিত হয়েছিল ‘পারজানিয়া’। 2002 সালে গুজরাটের রক্তক্ষয়ী দাঙ্গায় নিখোঁজ আজহার (Azhar) নামে একটি ছেলে ছিল এই ফিল্মের কেন্দ্রে। ফিল্মটি জাতীয় পুরস্কার পেলেও গুজরাটের অতীত যাতে মানুষের সামনে না আসে, নিষিদ্ধ করা হয় এই ফিল্ম। তবে এটির স্থানও বর্তমানে ওটিটি।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by 1M (@celluloid_collective)

একই বছর নির্মিত হয়েছিল ‘ওয়াটার’। দীপা মেহতা নির্মিত এই ফিল্মের শুটিং হয়েছিল বেনারসে। সেখানে শুটিংয়ের প্রথম দিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছিলেন শাবানা আজমি (Shabana Azmi)। তাঁকে গঙ্গা থেকে ফিনফিনে সাদা থান পরে উঠতে দেখে প্রতিবাদ করে সঙ্ঘ পরিবার। হিন্দুত্ববাদের ধবজা তুলে ধরা হয়। শাবানা ফিল্ম থেকে সরে দাঁড়ালে তাঁর পরিবর্তে ওই চরিত্রে অভিনয় করেন সীমা বিশ্বাস। ফিল্মটি সম্পূর্ণ হয়েছিল ও তা কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিও পেয়েছিল। কিন্তু মুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যে হঠাৎই নীতিবাগীশদের মনে হল, এই ফিল্ম নাকি হিন্দুত্বকে বিকৃত করছে। প্রকৃতপক্ষে, বেনারসে স্বাধীনতার আগে বিধবা নারীদের দূর্দশার কথা এই ফিল্মে তুলে ধরা হয়েছিল। সেন্সর বোর্ড ‘ওয়াটার’ নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by lisaraniray (@lisaraniray)

পরিশেষে একটু সেন্সর বোর্ডের কাজটি স্মরণ করিয়ে দেওয়া যাক। সেন্সর বোর্ডের কাজ হল, ফিল্মের মূল কাহিনী অপরিবর্তিত রেখে প্রয়োজন হলে তবেই ফিল্ম সেন্সর করা। কিন্তু এই বোর্ডে সবসময়ই এমন কয়েকজন ব্যক্তি থাকেন যাঁরা অতিরিক্ত বোদ্ধা। তাঁরা ফিল্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশে কাঁচি চালিয়ে বিখ্যাত হতে চান। এর সাথে মিশে যায় অযাচিত রাজনীতি। কিন্তু এর ফলে ক্ষতি হয় ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির। ফলে একটু পড়াশোনা করে তবেই সেন্সর বোর্ডের চেয়ারে বসা উচিত। নাহলে ভবিষ্যতে ভারতীয় ফিল্মকে ভরাডুবির হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।

whatsapp logo
Advertisements