সর্দি-কাশি থেকে দাঁতের ব্যথায় অব্যর্থ, ক্যান্সারের চিকিৎসাতেও ম্যাজিক দেখায় লবঙ্গ
ভারতীয় রন্ধন শিল্পে চেনা পরিচিত মশলা গুলির মধ্যে লবঙ্গ (Cloves) একটি। বিভিন্ন খাবারে স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি লবঙ্গ আরো অনেক কাজেই ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে এই মশলায় যা ঔষধিগুণ রয়েছে তা জানলে অবাক হয়ে যেতে হয়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র ছাড়াও হোমিওপ্যাথি, অ্যালোপ্যাথি ওষুধে ব্যবহার হয় লবঙ্গের। সর্দি কাশি, শরীরের ব্যথায় লবঙ্গ অত্যন্ত উপকারী একথা সকলেই জানেন। এমনকি ক্যান্সারের প্রতিরোধেও লবঙ্গের গুরুত্ব উল্লেখ্য যোগ্য।
মশলা হিসেবে লবঙ্গের গুরুত্ব থাকার পাশাপাশি এর মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের পক্ষে উপকারী। লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড। এছাড়াও এই মশলায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ফাইবার এবং ম্যাঙ্গানিজ। লবঙ্গ তেল ব্যথায় ম্যাজিকের মতো কাজ করে। আর্থ্রাইটিসের ফোলাভাব বা গাঁটে ব্যথায় লবঙ্গ তেল খুব উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড। অ্যারোমাথেরাপিতে শরীরের ব্যথায় লবঙ্গ তেল ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
লবঙ্গ তেলে রয়েছে ইউজেনল তেল যা দাঁতের ব্যথায় দারুণ কাজ করে। তাই দাঁতের ব্যথা, মাড়ির ফোলা ভাবে লবঙ্গ তেল লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। লবঙ্গ তেলের মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ টুথপেস্ট, মাউথওয়াশ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। খাবারে লবঙ্গ ব্যবহার করলে হজমের সমস্যা দূর হয়। গ্যাস্ট্রিক, ডায়ারিয়া, বমি ভাবের মতো সমস্যা দূর করে লবঙ্গ। সর্দি কাশির উপশমে দারুণ কাজ করে লবঙ্গ তেল। এই তেলের সুগন্ধ হাঁপানি, সাইনোসাইটিস, ব্রঙ্কাইটিস এর মতো সমস্যা দূর করে। তাই লবঙ্গ তেলের সুগন্ধ শ্বাসের সঙ্গে টানার পরামর্শ দেওয়া হয়।
লবঙ্গের আরো উপকার রয়েছে। এর মধ্যে উপস্থিত ইউজেনল উপাদানটি ত্বক এবং ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে বলে মনে করা হয়। কলেরা, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ চিকিৎসায় লবঙ্গের ব্যবহার হয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় লবঙ্গ। রক্ত পরিশুদ্ধও করে এই মশলার ব্যবহার। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের লবঙ্গ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে গ্লুকোজের মাত্রা কমে। পাশাপাশি লবঙ্গ তেল মশার উৎপাত দূর করতেও ব্যবহৃত হয়।