ফের দুঃসংবাদ! সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় পরপরই চলে গেলেন জনপ্রিয় বাঙালি
গত রবিবারই বাংলা তথা গোটা বিশ্ববাসী হারালেন লেজেন্ড সৌমিত্র চ্যাটার্জিকে। তার রেষ কাটতে না কাটতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আরো এক নক্ষত্রপতন ঘটলো। বাংলার সাহিত্যজগতের অন্যতম লেখক আলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত প্রয়াত হলেন। শেষ বয়সে লেখকের বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন তিনি। তবু লেখা তিনি থামাননি। জার্মানিতে নিজ বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয়। স্থানীয় সময় রাত নটা নাগাদ না ফেরার দেশে পাড়ি দেন কবি। লেখকের মৃত্যুর খবর দেন তাঁর সহধর্মিণী এলিজাবেথ। ফের নিঃস্ব হল বাংলা সাহিত্য।
১৯৩৩ সালের ৬ অক্টোবর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বাংলার ছেলে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। ছোট থেকেই শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা করেছেন। তারপরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে সাহিত্য নিয়ে উচ্চশিক্ষা শেষ করেন তারপর প্রেসিডেন্সি কলেজে সাহিত্য নিয়ে পড়েন এবং অবশেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ভারতীয় কবিতায় গীতি নিয়ে তাঁর পড়াশুনার জন্য পিএইচডিপ্রাপ্ত হন। বাংলার মতো মিষ্টি ভাষাকে লেখক খুবই ভালোবাসতেন। তারপর তিনি লিটল ম্যাগাজিনসমূহের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মূল জার্মান লেখাগুলিকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করতে থাকেন।
সাহিত্যের ওপর পিএইচডি শেষ করার পরে, তিনি ক ১৯৫৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল অব্দি কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগ ও বাংলা পড়িয়েছেন। এরপরে হিটলারের দেশ জার্মানি থেকে ডাক আসে। তারপর তিনি হাম্বোলড ফাউন্ডেশন ফেলোশিপে জার্মানি যান। ১৯৭১ সাল থেকে তিনি জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ইনসিটিটিউটে শিক্ষকতা করতে শুরু করেন। তিনি ভারত ও জার্মানির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ প্রচারের জন্য প্রধান একটি প্রতিষ্ঠান, ডয়চে-ইন্দিসচে গেসেলশ্যাফ্টের (ডিআইজি) সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
১৯৯২ সালে ‘মরমী কারাত’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তাঁকে সাহিত্য অ্যাকা়ডেমি পুরস্কারের সম্মানিত করা হয়। জীবদ্দশায় প্রায় ২০টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের। এই কবি এবং লেখক নিজেত লেখা কাব্যগ্রন্থ এবং কবিতা ও নাটকের জন্য পেয়েছেন বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন । । তার মধ্যে রয়েছে অন্যতম ১৯৮৩সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুধা বসু সম্মান , ১৯৮৫ সালে আনন্দ পুরস্কার ,১৯৮৫ সালে প্রবাসী ভারতীয় সম্মান, ১৯৮৭ সালে রবীন্দ্র পুরস্কার। তিনি ভারতবর্ষকে এবং সমগ্র বাঙালি জাতিকে তুলে ধরেছে গোটা বিশ্বের কাছে । অবশেষে সাহিত্যের এক যুগের অবসান ঘটেছে। কবির মৃত্যু হয়না। নিজের লেখনী দিয়ে লেখক আলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত সারাজীবন আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মহামানবের প্রয়াণে এক টুইটে শোকব্যক্ত করেছেন।
Saddened at the passing away of Sahitya Academy award-winning poet and translator Alokeranjan Dasgupta. My condolences to his family and admirers
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 18, 2020