হয়নি পুজোর জামাকাপড়, বন্ধ সব রোজগার, ভাইরাল ‘বাদাম কাকু’র দুরবস্থা চোখ ভিজিয়ে দেবে
সোশ্যাল মিডিয়ায় হল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যা দুনিয়াকে এনে দিয়েছে মানুষের হাতের মুঠোয়। এই মাধ্যম থেকেই অনেকের গুপ্ত প্রতিভা, যা এতদিন সুপ্ত অবস্থায় ছিল, তা পেয়েছে প্রচার। অনেকেই আবার সুযোগ পেয়েছেন যথাযোগ্য স্থানে। অনেকেই আবার এই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সাধারণ মানুষ থেকে হয়ে উঠেছেন নিমেষে, কাউকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিশ্বজোড়া ‘সেনসেশন’। আর এমনই একটি নাম, যা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে উঠে এসে পৌঁছে গেছে বিশ্বব্যপী, তা হল ভুবন বাদ্যকর (Bhuban Badyokor), ওরফে ‘বাদাম কাকু’।
বীরভূমের দুবরাজপুরের এই বাদাম বিক্রেতা একটা সময় গান গেয়ে গেয়ে বাদাম বিক্রি করতেন। কিন্তু তার ভাগ্য খুলে যায় যখন তার গাওয়া গানের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আগুনের মতো ভাইরাল হয়ে যায় গানটি। যুব সমাজের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে ‘বাদাম কাকু’র গাওয়া এই অরিজিনাল গান। দেশ বিদেশের সব বিখ্যাত মানুষজন এই গানের তালে কোমর দুলিয়ে রিলসও বানিয়েছেন দেদার। এককথায় গ্রামের শিল্পী ভূবন বাদ্যকরের নাম ছড়িয়ে পড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে। ডাক আসে গান রেকর্ড করার, রাতারাতি কুঁড়েঘরের ভুবন গিয়ে সংসার পাতেন বিশাল এক অট্টালিকায়।
কিন্তু আচমকা এই শিল্পী হারিয়ে গেলেন কোথায়? আর তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়না কেন? অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন বাদাম কাকুর জীবন হয়তো একটি গান থেকেই বদলে যেতে চলেছে। কিন্তু তার অবস্থাও রানু মণ্ডলদের মতোই হতে চলেছে, তা কল্পনাও করেননি কেউ। যতটা তাড়াতাড়ি মানুষের মন জয় করেছিলেন এই মধ্যবয়স্ক মানুষটি, ততটাই দ্রুত গতিতে তিনি হারিয়ে গিয়েছেন অন্ধকারে। গতবছর পুজোতে তার রমরমা থাকলেও এবারের পুজোর আগে এক্কেবারে মানুষের কাছে অচেনা হয়ে পড়েছেন এই মানুষটি।
জানা গেছে, এখন তার দুরবস্থা আবার ফিরে এসেছে। অট্টালিকায় রাত কাটলেও জীবনে নেই সুখের কোনো লেশ। রোজগারপাতি এখন প্রায় বন্ধের মুখে। এদিকে তার ‘বাদাম বাদাম’ গানের কপিরাইটও এখন অন্যের হাতে। ফলে নিজের সৃষ্টি থেকে পাওয়া সাম্মানিকও এখন বন্ধ। কোনরকমে দিন কাটছে ভুবন ও তার পরিবারের। ছেলের রোজগারে চলছে সংসার। ভুবন জানিয়েছেন যে এবছর পুজোতে তার পরিবারের কেউই নতুন জামাকাপড় কিনতে পারেনি। এই অবস্থা কি কোনোদিনও দূর হবেনা? তার দুটি করুন চোখ যেন সেই কথা বলে চলে অবিরত।