একটা সময় বৈজ্ঞানিক হতে চেয়েছিলেন, হয়ে গেলেন অভিনেত্রী। দেশ স্বাধীনতার দিন জন্মেছিলেন তিনি। ওপার বাংলা থেকে এপারে চলে আশা মেয়ে পশ্চিমবঙ্গেই আস্তানা গড়ে। ছোট থেকেই ভালবাসতেন সিনেমা দেখতে। এই রাজ্যের মেয়ে সিনেমা জগতে হাতেখড়ি দেয় মাত্র ২০ বছর বয়সে। সালটা ১৯৬৭, তাঁর প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র ‘বধূ বরণ’ মুক্তি পায়। এরপর ডাক আসে মুম্বাই থেকে। ১৯৭০ সালে মুম্বাই পাড়ি দেন তিনি। ৭১ এই করে ফেললেন ‘জীবন মৃত্যু’ সঙ্গী ধর্মেন্দ্র। এরপর ওই বছরেই করলেন ‘লাল পাথ্থর ও পরস’। এরপর তাঁর ভাগ্যের চাকা খুব দ্রুত ঘুরতে থাকে। একের পর এক হিট ফিল্ম দিতে থাকেন। কথা বলছিলাম প্রবীণ অভিনেত্রী রাখী গুলজার প্রসঙ্গে।
‘বাজিগর’ হোক বা ‘করণ অর্জুন’ দাপটের সঙ্গে মায়ের অভিনয় করে দর্শকদের মন ছুঁয়ে ছিলেন। এখনো লোকের মুখে মুখে ঘোরে ‘মেরে বেটে আয়েঙ্গে, মেরে করণ অর্জুন আয়েঙ্গে’। মায়ের চরিত্রে অভিনয় করা রাখী কিন্তু বাংলা সিনেমাতেও আসর বসিয়েছিলেন দুর্দান্ত ভাবে। বিখ্যাত পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের পরিচালনায় ২০০৩ এ করে ফেললেন ‘শুভ মহরত্’।
পর্দার সামনে তাঁকে আর দেখা যায় না বললেই চলে। সিনে জগত থেকে বহুদিন হল তিনি নির্বাসন নিয়েছেন। এক মেয়ে মেঘনা গুলজার সেও মানুষ হয়েছে তাঁর বাবার কাছে। গুঞ্জনে আছে সেই সময় রাখী মদের নেশায় বুঁদ থাকতেন। তাই দ্বিতীয় স্বামী গুলজারের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ না করেই একলা থাকতেন। একটা সময় তাঁকে ‘কুইন অব ট্র্যাজেডি’ মিনা কুমারীর সাথেও তুলনা করা হত। এখনো একাই জীবন কাটাচ্ছেন।
মাঝে মাঝে কলকাতা আসেন। এই শহরের অনেক অলিগলি তাঁর চেনা। অনেক দোকান তাঁর চেনা। এখনো চাষবাস করেন নিজের বাড়িতে থেকে। সেই বাড়িতেই রেখেছেন কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণী। তাঁদের সেবাযত্নে দিন কাটিয়ে দেন রাখী। এই প্রবীণ অভিনেত্রী প্রথমে থাকতেন মুম্বাইয়ের সরোজিনী রোডের ‘মুক্তাঙ্গন’ নামের বাড়িতে। পরে সেই বাড়ি বারিল করেন। মুম্বাইয়ের ব্যস্ততা তাঁর ভাললাগে না। শেষে ২০১৫ থেকে রাখী বেশিরভাগ সময়ই কাটান পানভেলে নিজের ফার্মহাউজে।