ছেড়ে চলে গেছেন স্বামী, একা হাতেই খাবার বিক্রি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন শিল্পা
প্রত্যেকটা মানুষেরই জীবনে ওঠানামা থাকে এবং জীবন কখন কাকে কি অবস্থায় এসে দাঁড় করিয়ে দেবে সে কিছুতেই তা বুঝতে পারেনা। আর যে মুহূর্তে জীবন আমাদের কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড় করিয়ে দেয়, তখন মানুষ নিজে থেকেই অনেক বেশি মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে কিভাবে লড়াই করে বেরিয়ে আসতে হয় তার পথ বেছে নিতে শিখে যায়। ঠিক এইরকমই পরিস্থিতি হয় শিল্পার। জীবন চলছিল তার নিয়ম অনুযায়ী, কিন্তু হঠাৎই মাঝখানে ছন্দপতন। স্বামী তাকে মিথ্যা কথা বলেছিল, কালের জন্য তার জীবন থেকে চলে যায় একা হয়ে যান শিল্পা। জীবন ও জীবিকার তাগিদে কি করবেন তখন বুঝতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন।
যে সমস্ত মেয়েরা জীবনে কোনো অঘটন ঘটার পর, ভেবে নেন তাদের জীবন শেষ হতে চলেছে, তাদের কাছে শিল্পা আদর্শ হতে পারে। তবে বর্তমানের শিল্পা একজন সফল খাবার বিক্রেতা। শিল্পার এই পুরো গল্পটি মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা কোম্পানির মালিক অনন্ত মাহিন্দ্রা এই গল্পটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। তার ফলেই শিল্পার জীবন কাহিনী গোটা সমাজের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছিল দ্রুত। মেয়েরাও যে অনেক কিছু করতে পারে তার প্রমাণ শিল্পা।
ছোট থেকেই রান্না করতে ভালোবাসেন শিল্পা। আর সেই ভালোবাসার আগ্রহ থেকেই তিনি ভবিষ্যতে তার পছন্দ মতন ব্যবসা শুরু করতে পারবেন কাতার স্বপ্নেরও অতীত ছিল। ২০০৫ সালে শিল্পা বিবাহ করে ব্যাঙ্গালোরে চলে আসেন, কিন্তু সব ঠিকঠাক চলার পরেও কয়েক বছর পরে শিল্পার স্বামী জানান তিনি ব্যবসার কাজে বাইরে যাচ্ছেন সেই বলে আর তিনি ফিরে আসেননি। তখন পরিস্থিতি ভীষন কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে থাকে। তিন বছরের তার ছেলেকে নিয়ে শুরু হয় শিল্পার একা চলার জীবন। তবে তিনি যেহেতু রান্না করতে ভালোবাসতেন তাই তাকে বেশিদিন পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ব্যাঙ্গালোরে বেশ খ্যাতি অর্জন করতে থাকে।
স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পরে শিল্পার ব্যাংক একাউন্ট ছিল মাত্র এক লক্ষ টাকা। এই এক লক্ষ টাকা নিয়েই শুরু হয় জীবনের সংগ্রাম। প্রথম ফুড ট্রাকের ব্যবসা চালু করেন। তার বাড়ির সামনেই ছিল মাহেন্দ্রর একটি শোরুম, সেখান থেকেই তিনি একটি ট্রাক কিনে নিয়ে শুরু করেন ফুড ট্রাকের ব্যবসা। স্বয়ং মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা কোম্পানির মালিক অনন্ত মাহেন্দ্র যখন এই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তখন শিল্পার গ্রাহকের সংখ্যা ক্রমশই বাড়তে থাকে। কিভাবে খারাপ পরিস্থিতিতেও সামনে ওঠা যায় তার জ্বলন্ত উদাহরণ শিল্পা। তিন বছরের বাচ্চাকে কোলে করে নিয়ে শুরু করেছিলেন তার কঠিন জীবন।