তখনও দেশ স্বাধীন হয়নি। কলকাতার বুকেই এসেছিলেন মাধবী, না তখন তিনি মাধবী নন, তিনি তখন ছিলেন মাধুরী। এমনিতেই অভিনয় জগতে পা রাখলে আগেকার দিনে নামের পরিবর্তন হয়ে যেত। তেমনই মাধুরী থেকে মাধবী হন তিনি। এরপর তার পরিচয় হয় চারুলতা। অনেকে তাকে রবীন্দ্রনাথের রায়ের চারুলতা বলেও চালিয়ে দেন।
১৯৫০ সালে কাঁকনতলা লাইট রেলওয়ে ছবিতে প্রথম শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। উল্লেখযোগ্য কাজ হিসেবে ১৯৬৪ সালে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নষ্টনীড় অবলম্বনে চারুলতা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। বলাবাহুল্য, সত্যজিৎ রায় যেমন শর্মিলা ঠাকুরের মতন অভিনেত্রীকে তুলে ধরেছিলেন তেমনই মাধবী মুখোপাধ্যায়কেও স্থান দিয়েছিলেন তার সৃষ্টিতে। সেই জন্যেই তিনি ছিলেন ‘মহানগর’ ও ‘কাপুরুষ’ চলচ্চিত্রে।
শুধু সিনেমা করেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন এমনটা নয়, ১৯৯৫ সালে আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আমি মাধবী’ প্রকাশ করেন।
একটা সময় এও গুঞ্জন আসে যে সত্যজিৎ রায় নাকি মাধবী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ‘চারুলতা’ সিনেমা মুক্তি পাওয়ার ঠিক পরবর্তী সময়ে এই গুঞ্জন শোনা যায়। এমনকি নায়ক করার সময় সত্যজিৎ নাকি মাধবীর কাছে তিনবার গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তিনবারই না বলেছিলেন।এরপর উত্তম কুমারের হাত ধরে ফের ছবির দুনিয়ায় ফিরে আসেন তিনি। শোনা যায় সেইসময় উত্তম কুমার যদি তার হাত না ধরতেন তবে হারিয়ে যেতেন তিনি। উত্তমের সঙ্গে ‘শঙ্খবেলা’ ‘থানা থেকে আসছি’, ‘অগ্নীশ্বর’ সহ পর পর ৭টি ছবিতে দেখা যায় এই প্রবীণ অভিনেত্রীকে।